চালক সঙ্কট, চট্টগ্রামে আটটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
বারবার আশ্বাসের পরও মাইলেজ সুবিধা পুনর্বহাল না করায় গতকাল থেকে নির্ধারিত কর্মঘণ্টার বাইরে অতিরিক্ত কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। তাই লোকোমাস্টার (ট্রেন চালক) সংকটের কারণে গতকাল চট্টগ্রামে নাজিরহাট ও দোহাজারী রুটে চার জোড়া ডেমু ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছে রেলওয়ে। অর্থাৎ দুই রুটে আপ ও ডাউনের আটটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়।
ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। এছাড়া বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে কয়টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল হয়েছে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কেউ তা জানাতে পারেননি।
মাইলেজ ভাতা পেনশনের সঙ্গে যোগ করাসহ বিভিন্ন দাবিতে গতকাল সকাল থেকে কর্মঘণ্টার বেশি কাজ না করে আন্দোলন শুরু করেন লোকোমাস্টাররা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার বলেন, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা নির্ধারিত কর্মঘণ্টার বাইরে অতিরিক্ত কাজ না করার সিদ্ধান্তের কারণে চট্টগ্রামে নাজিরহাট ও দোহাজারী রুটে দুটি ডেমু ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার ও পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লোকোমাস্টাররা অতিরিক্ত কাজ করছেন না। তাই এই দুই রুটে আপ এবং ডাউনের আটটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের মাস্টার জাফর আহমেদ বলেন, লোকাল রুটে কয়েকটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল হলেও আন্তঃনগরসহ গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলোর যাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে।
রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগের আহ্বায়ক মুজিবুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, যৌক্তিক দবি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরে আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি নিয়ে রেলভবনে মন্ত্রী মহোদয়, সচিব মহোদয়ের সাথে বারবার বৈঠক হয়েছে। উনারা আমাদের দাবির প্রতি সমর্থন দিয়ে আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় রাজি না হওয়ায় ন্যায্য পাওনা থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি।
লোকোমাস্টার (ট্রেন চালক), গার্ড ও টিকেট পরিদর্শকদের (টিটিই) রানিং স্টাফ বলা হয়। ব্রিটিশ আমল থেকে তারা দিনে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বা ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন চালালে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাকা মাইলেজ বা রানিং ভাতা হিসেবে পেতেন। আগে ভাতার ৭৫ শতাংশ পার্ট অব পে হিসেবে ধরে পেনশনে যোগ হতো।
২০২২ সালে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনে জানায়, মাইলেজ ভাতা পেনশনে যোগ হবে না। ভাতার পরিমাণ মাসিক মূল বেতনের বেশিও হতে পারবে না। এরপর থেকে দফায় দফায় আন্দোলন করছেন রানিং স্টাফরা। রানিং স্টাফদের চাকরিবিধি অনুযায়ী কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা। কিন্তু বেশিরভাগ রানিং স্টাফকে অতিরিক্ত সময়ে কাজ করানো হলেও রেলওয়ে অতিরিক্ত সুবিধা দেয় না।