লা লিগার নতুন আসরে বার্সেলোনার প্রথম জয়
দুই স্তরের রক্ষণ, দারুণ সংগঠিতও। পোস্টের নিচে দারুণ তৎপর এক গোলরক্ষক। কাদিসের প্রতিরোধ ভাঙতে প্রবল পরীক্ষাই দিতে হলো বার্সেলোনাকে। সেখানে ব্যবধান গড়ে দিলেন পেদ্রি ও ফেররান তরেস। তাদের চমৎকার ফিনিশিংয়ে লা লিগার নতুন আসরে নিজেদের প্রথম জয় পেল বার্সেলোনা।
অলিম্পিক স্টেডিয়ামে রবিবার (২০ আগস্ট) রাতে ২-০ গোলে জিতেছে শাভি এর্নান্দেসের দল। ম্যাচের শেষ দিকে পেদ্রি দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর যোগ করা সময়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তরেস। আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় ছিলেন না রাফিনিয়া, চোটের জন্য নেই রোনাল্দ আরাউহো। এই ডিফেন্ডারের অনুপস্থিতিতে খুব একটা ভুগতে হয়নি শিরোপাধারীদের। তবে রাফিনিয়ার অভাব বেশ ভালোভালোই অনুভব করেছে তারা।
গুরুত্বপূর্ণ দুই খেলোয়াড়কে ছাড়া খেলতে নেমে নিজেদের গুছিয়ে নিতে একটু সময় নেয় বার্সেলোনা। প্রথম ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় ডাগ আউটে ছিলেন না কোচ শাভিও। প্রথম দিকে স্বাগতিকদের চেপে ধরার চেষ্টা করে কাদিস। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ নেয় বার্সেলোনা। প্রথম ভালো সুযোগের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয় অনেকটা সময়। ২৪তম মিনিটে আলেহান্দ্রো বাল্দের দারুণ ক্রসে গোলরক্ষক বরাবর হেড করে দলকে হতাশ করেন রবের্ত লেভানদোভস্কি।
প্রথমবার শুরুর একাদশে সুযোগ পাওয়া লামিন ইয়ামাল মাঝে মধ্যে ঝলক দেখাচ্ছিলেন। ডান দিক থেকে আক্রমণে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ১৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। ২৯তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ঝাঁপিয়ে দারুণ দক্ষতায় দলকে রক্ষা করেন কাদিস গোলরক্ষক হেরেমিয়াস লেদেসমা। পাঁচ মিনিট পর আবার বার্সেলোনাকে হতাশায় ডোবান তিনি। পেদ্রির দারুণ ক্রসে ছুটে গিয়ে পা ছোঁয়ান জুলস কুন্দে। বল যাচ্ছিল জালের দিকে, দারুণ রিফ্লেক্সে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন লেদেসমা। পরের মিনিটে প্রতি-আক্রমণে সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান রজার মার্তি। বিপদ দেখে বেরিয়ে এসে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের শট ঠেকিয়ে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত বার্সেলোনা। ইয়ামালের আড়াআড়ি শট ঝাঁপিয়ে কোনোমতে ফেরান আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক লেদেসমা। ফিরতি বলে সুযোগ ছিল লেভানদোভস্কির সামনে। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে তালগোল পাকান তিনি। সুযোগ কাজে লাগায় কাদিস। ৫২তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে আরেকটি দারুণ সুযোগ পায় কাদিস। কিন্তু ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের চ্যালেঞ্জের মুখে খুব কাছ থেকেও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি রুবেল আলকারাস।
দুই মিনিট পর গাভির হেড ফেরে পোস্ট ও ক্রসবারের সংযোগ স্থলে লেগে! নষ্ট হয় বার্সেলোনার আরেকটি চমৎকার সুযোগ। ৬৩তম মিনিটে স্বাগতিকদের রক্ষণে ভীতি ছড়ান ক্রিস রামোস। কয়েক জন কাটিয়ে একটুর জন্য আড়াআড়ি শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। ৭২তম মিনিটে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি লেভানদোভস্কি। সাত মিনিট পর আব্দে ইজ্জালজুলির বুলেট গতির শট ঠেকিয়ে সমতা ধরে রাখেন লেদেসমা।
বেশিরভাগ সময় খেলা হয় কাদিসের অর্ধে। একের পর এক আক্রমণ করে যাওয়া বার্সেলোনা এগিয়ে যায় ৮২তম মিনিটে। ইলকাই গিনদোয়ানের রক্ষণ চেরা পাস ধরে দারুণ স্লাইডে কাছের পোস্ট ঘেঁষে জাল খুঁজে নেন পেদ্রি। চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার প্রথম গোল এটি! ৮৯তম মিনিটে বল জালে পাঠান আনসু ফাতি। কিন্তু তাকে বল দেওয়া লেভানদোভস্কি অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। পরের মিনিটে খুব ভালো জায়গা থেকে ক্রসবারের উপর দিয়ে মেরে সমতা ফেরানোর দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন দারউইন মাচিস।
যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন একটু আগে বদলি নামা তরেস। গোলরক্ষক টের স্টেগেন উঁচু করে বল বাড়ান লেভানদোভস্কিকে। পোলিশ স্ট্রাইকারের ফ্লিকে পেয়ে যান তরেস। দারুণ গতিতে এগিয়ে গিয়ে লেদেসমাকে পরাস্ত করে জাল খুঁজে নেন তিনি। দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম দুটি স্থানে আছে রিয়াল মাদ্রিদ ও ভালেন্সিয়া। ৪ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত তিনে উঠে এসেছে বার্সেলোনা।