কেউ দেখে শেখে, কেউ ঠেকে শেখে, সবকিছুর পর শেখাটা জরুরি!
স্বাধীনতা লাভের ৭৬ বছর পর ভারত পৃথিবীর চতুর্থতম দেশ হিসেবে সফলভাবে চাঁদে তার চন্দ্রযান পাঠিয়েছে! বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে ৫২ বছর, ব্যবধান ২৪ বছরের! ভারত পার্শ্ববর্তী দেশ বলেই সবকিছুতে তুলনা আসলে চলে না! বাংলাদেশের চেয়ে জ্ঞান গরিমায় উন্নত আরও বহু দেশের এরূপ স্বীকৃতি নেই, সকলের থাকবেও না!
বাংলাদেশের চেয়ে ২২ গুন বড় একটি বিশাল জনসংখ্যার দেশ ভারত, তাদের দ্বিতীয় চন্দ্র অভিযান যখন ব্যর্থ হয়েছিল তাতে খরচ পড়েছিল ৯৭৮ কোটি টাকা! (প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে) এরূপ ব্যর্থতা আমাদের এখানে ঘটলে অতি প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রতিক্রিয়া কি হতো সেটা সচেতন মানুষ মাত্রই বুঝেন আশা করি! অপবাদ দিয়ে সেই অর্থ কোথায় ব্যয় করলে বেশি লাভজনক হতো তার হাজারটা পন্থা বলে দেয়ার লোকের অভাব হতো না! আমাদের সমস্যা নেই তা বলছি না তবে সবকিছু তো আর এক পাল্লায় মাপা যাবে না!
প্রতিবেশী বলেই ভারতে সমস্যা নেই তা কিন্তু নয়, তা সত্ত্বেও দেশটি যা করে দেখিয়েছে তা অসাধারণ! চাঁদে ভারতের চন্দ্রযানের সফট ল্যান্ডিং বৈশ্বিক প্রাপ্তি, তা থেকে তথ্য প্রাপ্তিতে সমগ্র বিশ্ব উপকৃত হবে! জেনে রাখা ভালাে তাদের দ্বিতীয় অভিযানের সময় ভারতীয় সংস্থা ইসরো ও রাশিয়ান সংস্থা রসকসমস এর মাঝে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ছিল, পরে অবশ্য রাশিয়া নিজেকে সরিয়ে নেয় এবং ভারত স্বাধীন ও এককভাবে নিজেদের প্রচেষ্টা চলমান রাখে!
বিশ্বে উন্নত রাষ্ট্রসমূহের অনেকেই এসব অভিযান পরিচালনাই করেনি, তাই বলে তারা বিশ্বের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যায়নি! বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় প্রতিবেশী দেশের ভূমিকা আমাদের ভীষণ অনুপ্রাণিত করেছে আর তাই বলে এখনই কেন চাঁদে যেতে পারলাম না তা নিয়ে বিষোদগার করার কিছু নেই তার চেয়ে যে সমস্যার সমাধান দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে সেদিকেই মনোযোগী হওয়া জরুরি! অবশ্যই আমাদের বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্মের দরকার রয়েছে নাহলে কূপমন্ডুকতায় ছেয়ে যাবে চারপাশ!
প্রতিবেশী দেশের উদযাপন থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সামনে নিজেদের তৈরি করা যেতে পারে, গুরুত্ব দেয়া যেতে পারে এ বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের উপর এবং পাশাপাশি বিশ্বের ১৯৬টি দেশের মাঝে নিজেদের অবস্থান চিন্তা করাও জরুরি!
কেউ দেখে শেখে, কেউ ঠেকে শেখে, সবকিছুর পর শেখাটা জরুরি! আপনারা যারা নারীদের শিক্ষিত হয়ে উঠবার ঘোর বিরোধী, তাদের জেনে রাখা উচিত ভারতের এই সফল চন্দ্র অভিযানে নারী বৈজ্ঞানিকগণও মূখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন! একদিকে পিছিয়ে যেতে চাইবেন আবার কারো প্রাপ্তিতে নিজেদের নিয়ে বিষোদগার করবেন, এভাবে আসলে হয় না!
মনের দীনতাকে ঝেড়ে ফেলে সামনের পথ খোঁজার চেষ্টা করতে হবে, একইসাথে দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে সেই পথ খুঁজে নেয়ার যাত্রাকে বেগবান করতে!
লেখক : এডিসি, ক্যান্টনমেন্ট ও খিলক্ষেত, ডিএমপি।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)