বিনোদন

আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মাইক’

ফ্রেমে ফ্রেমে আগামী স্বপ্ন স্লোগানে প্রতি বছরের মতো এবারো আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশ-২০২৩ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৬তম এই আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মাইক’ প্রদর্শিত হচ্ছে।

আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় দেখানো হয় শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মাইক’। স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে উপজীব্য করে নির্মিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মাইক’ সারাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় গত ১১ আগস্ট।

আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে উপস্থিত হয়ে লেখক, কলামিস্ট ও সংগঠক ও সিনেমাটির পরিচালক এফ এম শাহীন বলেন, মাইক চলচ্চিত্রটি গত ১১ আগস্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে।

পরিচালক বলেন, আপনারা জানেন আমাদের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ সকল আন্দোলনে শিশু-কিশোরদের যে ভূমিকা দেখি ইতিহাসের পাঠে পাছে, সেরকমভাবেই গল্পটা সাজানো হয়েছে। এমন সময়ের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে যখন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো যেত না। সেই সময়কার একটি গল্প।

তিনি বলেন, শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করা চ্যালেঞ্জিং। আর যদি শিশুদের ইতিহাসের মুখোমুখি করানো হয় তাহলে আরো জটিল সমীকরণের মধ্য দিয়ে সবার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

এফ এম শাহিন বলেন, আপনারা জানেন মাইক সিনেমার ফুটেজটি চুরি হয়ে যায়। তারপর বেকাপ ফুটেজ দিয়ে আবার কাজ করার পর আলোর মুখ দেখেছে। মাইক টিমের সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাই। যারা এই টিমের সাথে থেকে সহযোগিতা করেছেন তাদের।

তিনি আরো বলেন, যারা এখানে উপস্থিত আছেন আমি সকলকে অনুরোধ করবো আপনারা সবাই মাইক সিনেমাটি দেখবেন এবং আপনাদের রিভিউটা আমরা প্রত্যাশা করছি।

‘মাইক’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, অভিনেত্রী তানভীন সুইটি, অভিনেতা নাদের চৌধুরী, ঝুনা চৌধুরী, জয়িতা মহলানবিশ, সংগীতা চৌধুরী, রহিম সুমন, ইকবাল হোসাইন, শিশুশিল্পী সানজিদ রহমান খান, আলী আবদুল্লাহ দাইয়ান ভূঁইয়া, খোন্দকার মেঘদূত জলিল, মীর্জা ত্বাবীব ওয়াসিত প্রমুখ।

এদিকে, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ আয়োজিত ১৬তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুর কবীর খোন্দকার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি এবং চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম ও প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক মুনীরা মোরশেদ মুননী।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে তিনদিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান চলবে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এবারের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণীয় বিভাগ হিসেবে থাকছে বাংলাদেশি শিশুদের নির্মিত প্রতিযোগিতা। এ বিভাগে ১৭টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছে, যার মধ্যে নির্বাচিত ৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। সেখান থেকে ৩টি চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবে।

বিশেষ চলচ্চিত্র বিভাগে জমা পড়া ৫টি চলচ্চিত্রের মধ্যে নির্বাচিত ২টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। তরুণ বাংলাদেশি নির্মাতা বিভাগে ৩৫টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছে। সেখান থেকে প্রদর্শিত হবে ১৫টি চলচ্চিত্র। আর পুরস্কার পাবে ২টি চলচ্চিত্র।

আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতা বিভাগে ২ হাজার ৭০০টির বেশি চলচ্চিত্র জমা পড়েছিল। সেখান থেকে প্রদর্শিত হবে ৭৫টি চলচ্চিত্র। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রতিদিন বেলা ১১টা, দুপুর ২টা, ও সন্ধ্যা ৬টায়, মোট ৩টি করে প্রদর্শনী হয়েছে।

এবারের উৎসবে ঢাকায় ২টি ভেন্যু, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তন ও আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে ৩৯টি দেশের ১০১টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। প্রতিটি প্রদর্শনীতে একাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র দেখানো হবে।

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও উৎসবের সব প্রদর্শনী অভিভাবক, শিশু-কিশোরসহ সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। সিনেমা দেখার জন্য কোনো ধরনের প্রবেশমূল্য নেই। শিশু নির্মাতাদের চলচ্চিত্র বিচার কাজে জুরি বোর্ডের সবাই শিশু-কিশোর। অর্থাৎ ছোটদের নির্মিত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রগুলো বাছাই করবে ছোটরাই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button