যশোরে ৩ কোটি টাকার কৃষি প্রণোদনা বিতরণ শুরু,উপকারভোগী ৪৫ হাজার কৃষক
যশোরে চলতি রবি মৌসুমে তিন কোটি টাকার কৃষি প্রণোদনা বিতরণ শুরু হয়েছে। এই প্রণোদনা পেয়ে উপকৃত হবেন প্রায় ৪৫ হাজার কৃষক। আটটি ফসলে এই প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। জেলা কৃষি অফিস এই তথ্য দিয়েছে।
জেলা কৃষি অফিস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গম, ভুট্টা, সরিষা, চিনা বাদাম, সূর্যমুখী, মসুর, শীতকালীন পেঁয়াজ ও মুগ ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিনটি গ্রুপে এই বীজ ও সার পাচ্ছেন কৃষক। প্রথম গ্রুপের চাষিরা গমের বীজ ২০ কেজি, সরিষা ১ কেজি, সূর্যমুখী ১ কেজি, ডিএপি সার ১০ কেজি ও এমওপি সার ১০ কেজি করে পাবেন।
দ্বিতীয় গ্রুপের কৃষক ভুট্টার বীজ ২ কেজি, শীতকালীন পেঁয়াজ ১ কেজি, ডিএপি সার ২০ কেজি ও এমওপি সার ১০ কেজি করে পাচ্ছেন। এসব প্রদান তালিকার কৃষকের নাম ঠিকানা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
তৃতীয় গ্রুপের একজন কৃষক মুগ ডালের বীজ ৫ কেজি, মসুর ডাল ৫ কেজি, ডিএপি ১০ কেজি ও এমওপি ৫ কেজি করে পাবেন।
জেলার আট উপজেলায় ৪৪ হাজার ২৭০ জন কৃষককে ৩ কোটি ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকার বীজ ও সার দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৮২৫, ঝিকরগাছায় ৫ হাজার ৬৫৫, চৌগাছায় ৬ হাজার ১০৫, শার্শায় ৬ হাজার ৪৫৫, অভয়নগরে ৪ হাজার ৫২৫, বাঘারপাড়ায় ৪ হাজার ৭২৫, মণিরামপুরে ৬ হাজার ৪৫৫ ও কেশবপুরে ৪ হাজার ৫২৫ জন কৃষক প্রণোদনার আওতায় রয়েছেন।
সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৮২৫ জন চাষির মধ্যে ২৭০ জন গম, ৫ হাজার চাষি সরিষা, ১৫০ জন ভুট্টা, ১৫ জন সূর্যমুখী, ৭০ জন শীতকালীন পেঁয়াজ, ২৭০ জন মসুর, ১০ জন চিনা বাদাম ও ৪০ জন মুগ ডালের বীজ পাচ্ছেন।
সদর উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৪ টি ইউনিয়নের কৃষক প্রণোদনা পাচ্ছেন। উপশহর ইউনিয়নে আবাদযোগ্য কোনো জমি না থাকায় তালিকায় এই ইউনিয়ন নেই। বাকি ১৪ ইউনিয়নের মধ্যে হৈবতপুরে ৪৫৭, লেবুতলায় ৪২১, ইছালীতে ৪০২, নওয়াপাড়ায় ৩৯৩, কাশিমপুর ৪১৫, চুড়ামনকাটিতে ৪৪০, দেয়াড়ায় ৫১৮, আরবপুরে ৪০৭, চাঁচড়ায় ৪৬৫, রামনগরে ৪১৯, ফতেপুরে ৪২৯, কচুয়ায় ৩৫১, নরেন্দ্রপুরে ৩৩০ ও বসুন্দিয়ায় ৩৭৮ জন কৃষক রয়েছেন।
রোববার সদর উপজেলায় প্রণোদনা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জোসনা আরা মিলি। সঞ্চালনা করেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা একরামুল হোসেন। উপস্থিত ছিলেন সহকরী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কেএম অসাদুজ্জামান ও উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে কৃষক ভালো থাকে, সুখে থাকে, শান্তিতে থাকে। প্রধানমন্ত্রী চান এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী না থাকুক। সকলে মিলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করলে এদেশ অচিরেই সোনার বাংলায় পরিণত হবে।