অর্থ ও বাণিজ্যশীর্ষ নিউজ

যশোরের চাষে আগ্রহ বাড়লেও বীজ আলু সঙ্কটে কৃষক 

 

চলতি মৌসুমের প্রথম থেকে যশোরের বাজারে আলুর দাম চড়া। যে কারণে সংরক্ষিত বীজ আলু বেশি দামে বিক্রি করে দিয়েছেন কৃষকরা। আবার দাম বেশি থাকায় এবার আলু চাষে কৃষকের আগ্রহ আরও বেড়েছে। এদিকে, সংকট দেখিয়ে বেশি দামে আলু বীজ বিক্রির চেষ্টা করছে কোম্পানিগুলো। চাষাবাদের পরে ফলন শেষে দাম নিয়েও যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে কৃষকের।

কৃষি অফিস জানিয়েছে, ২০২২ সালে ১১৩০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে ওই বছরে ১২০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ হয়েছে। এবার ১৫০০ হেক্টর জমিতে জেলাতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর সাদা (গ্র্যানোলা) ও লাল (কার্ডিনাল) আলু বীজ ৪৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু চলতি বছরে একই আলু বীজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা করে। কৃষকরা চাহিদা অনুযায়ী ভালো বীজ পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে বীজ রোপন শুরু হবে। কিন্তু এখন থেকেই বীজ ভান্ডারগুলোতে ধরনা দিতে শুরু করেছেন কৃষকরা। বর্তমানে দাম বেশি হওয়ায় আলু চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের।

যশোরের চৌগাছা উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের কৃষক লোকমান হোসেন বলেন, এ বছর আলুর দাম বেশি হওয়ায় হিমাগারে রাখা বীজ আলু বাজারে বিক্রি করে দিয়েছি। ভাবছি, এবার বেশি জমিতে আলু বেশি চাষ করবো। কিন্তু বীজ মিলছে না। বীজ ব্যবসায়ীদের কাছে দৌড়াদৌড়ি করছি। কিন্তু এখনও পাইনি।

ডিলাররা বলছে, গতবছরের চেয়ে এবার বীজের দাম বেড়েছে; তবে আরও দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

যশোর সদর উপজেলার সাতমাইল এলাকার কৃষক গোলাম আযম বলেন, প্রতিবছর এক-দুই বিঘা করে আলু চাষ করি। বাজারে এবার আলুর দাম বেশি। তাই পাঁচ বিঘার মতো জমিতে আলু চাষ করবো। কিন্তু বীজ পাওয়া বহু কষ্ট। তারপরেও আলু চাষ শেষে এবারের মতো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।

চুড়ামনকাটি আবু সালেহ সিড-র স্বত্বাধিকারী এএসএম ইনসান বলেন, চাহিদা অনুযায়ী কোম্পানির কাছ থেকে আলু বীজ পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য বছরগুলোতে কৃষকের ঘরে বীজ আলু থাকে। কিন্তু এবার বাজারে বেশি দাম পাওয়ায় তারা বীজ রাখেনি। ফলে আলু বীজের হাহাকার লেগে গেছে। আর কোম্পানিগুলো বেশি লাভের আশায় সিন্ডিকেট করে আলু বীজের দাম বাড়াচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারি কোম্পানি ব্র্যাক, সুপ্রিম সিড ও স্কয়ারের বীজ ৭০ টাকার ওপরে, যা গত বছর ছিল ৪৮ টাকা। এ হিসেবে একজন কৃষকের শুধু বীজের জন্য প্রতি বিঘায় খরচ বাড়ছে তিন হাজার ২০০ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ১৬০ কেজি আলুর বীজ প্রয়োজন হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বীজ থাকলেও কোম্পানিগুলো এখন মার্কেটে বীজ দেবে না। চাষিরা বাজারে বীজ আলু বিক্রি করেছে। এ খবর জেনে কোম্পানিগুলো বীজ আলুর সংকট সৃষ্টি করছে বেশি লাভের আশায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, দেশের মুন্সিগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী জেলাতে যে পরিমাণ আলু চাষ হয়, সেই তুলনায় যশোরে খুব কম চাষ হয়ে থাকে। আশা করছি যশোরে আলু বীজের সংকট হবে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button