যশোরে বিএনপির ২০৩ নেতাকর্মী আটক, ককটেল-পেট্রোল উদ্ধার
যশোরে নাশকতা চেষ্টার অভিযোগে বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতা সাবেরুল হক সাবু, দেলোয়ার হোসেন খোকন, মারুফুল ইসলাম, মুনীর আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চুসহ ৮৭ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে পুলিশ।
তবে এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এই মামলায় ৮৩ জনসহ জেলায় মোট ২০৩ জনকে নাশকতা চেষ্টার অভিযোগে আটক করেছে। এসময় আটককৃতদের কাছ থেকে ৩৫টি ককটেল বোমা, ১০ লিটার পেট্রোল, ৩৯টি বাঁশের লাঠি ও ৯টি গ্যাস লাইট উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) গভীর রাতে সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামে লিটন ট্রাভেলস ও শিবচর স্টার ট্রাভেলসে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জারুল হক খোকন, মুড়লী জোড়া মন্দির এলাকার সৌদ আল রশিদ ডেনি, সদর উপজেলোর ঘোড়াগাছার সাইদুর রহমান, সাজিয়ালীর মীর মিজান, ঘুরুলিয়ার শিমুল হোসেন কুদ্দুস, জগন্নাথপুর দক্ষিণপাড়ার পিন্টু মোল্লা, গাইদগাছির জাকির হোসেন, সদুল্লাপুরের রুহুল আমিন খান, চাঁচড়া মধ্যপাড়ার রিপন হোসেন বাহাদুর, শাহীন মোল্লা, কুতুব উদ্দিন, জগীপাড়ার আব্দুল মতিন শেখ, আব্দুল আহাদ জনি, রামকৃষ্ণপুরের রিয়াজুল ইসলাম, গাওঘরা গ্রামের আসলাম হোসেন, শহরের খালধার রোড কদমতলার জাকির হোসেন, কচুয়া গ্রামের জহুরুল ইসলাম, কণ্যাদহের ইমরান হোসেন, নারাঙ্গালীর ইদ্রিস আলী, পতেঙ্গালীর জামাল হোসেন, রাজারহাটের জিল্লুর রহমান, ভেকুটিয়ার আকতার হোসেন, কিসমত নওয়াপাড়ার কামরুল ইসলাম, নরেন্দ্রপুরের হাসান সাঈদ, খাজুরার লোকমান হোসেন, আগ্রাইল গ্রামের শাহীন, সিটি কলেজপাড়ার রুবেল হোসেন, বেজপাড়া আনসার ক্যাম্প এলাকার শরিফুল ইসলাম, জলকর গ্রামের খাইরুল ইসলাম, বাগদহ গ্রামের হুমায়ুন কবির পলাশ, কেশবপুরের মজিদপুর গ্রামের হুমায়ুন কবির, চৌগাছার সলুয়া গ্রামের জহিরুল ইসলাম, মণিরামপুর উপজেলার ফিসিংড়ি গ্রামের মনিরুল ইসলাম, দেলুয়াবাড়ি গ্রামের আশরাফ হোসেন, কাশিপুর গ্রামের নাজমুস শাহাদত, নাজমুল ইসলাম, দূর্গাপুরের ইব্রাহিম মোল্লা, তেতুলিয়া গ্রামের ইমদাদ, খেদাপাড়ার শামীম রেজা, জুলফিকার আলী, মাছনা গ্রামের আমিনুল ইসলাম, গোপালপুরের কামরুল ইসলাম, মাহমুদকাঠির আব্বাস, চাঁদপুরের শাহ আলম, চালকিডাঙ্গার মেহেদী হাসান, খুলনা পাইকগাছা থানার শ্রীকণ্ঠপুর গ্রামের কামাল হোসেন, সলুয়া গ্রামের শাহিনুর, নগর শ্রীরামপুর গ্রামের আনারুল ইসলাম, মৌখালী গ্রামের মোহাম্মদ আলী, কাজীমুছা গ্রামের বিল্লাল হোসেন, আনিস বিশ্বাস, আসাদুর খাঁ, ধামরাইল গ্রামের আব্দুর রহিম, রাড়লী গ্রামের সাজ্জাদ আহম্মদ, কৃষ্ণনগর গ্রামের আনারুল ইসলাম, কাশিমপুরের শাহাদৎ হোসেন ডাবলু, বিষ্ণুপুর গ্রামের ইউনুস আলী, চরমৌখালী গ্রামের আব্দুল্লাহ সরদার, ডুমুরিয়া থানার চুরনগর গ্রামের হাবিবুর রহমান, আমিনুর ইসলাম, বরিশালের হিজলা উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জেঠুয়া গ্রামের বাবলুর রহমান, আশাশুনির দূর্গাপুর গ্রামের আব্দুল গফফার, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পুরাতন সাতক্ষীরা গ্রামের সাইফুল ইসলাম বাবু, বিনারপুতা গ্রামের মনিরুল ইসলাম ও কালিগঞ্জ উপজেলার শিবপুর গ্রামের আকবর হোসেন প্রমুখ।
এই মামলার পলাতক আসামিরা হলেন, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, দেলোয়ার হোসেন খোকন, অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু, মারুফুল ইসলাম, মুনীর আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, বিএনপি নেতা কাজী আজম, চান্দুটিয়ার ফশিয়ার রহমান, নারাঙ্গালীর ইদ্রিস আলী, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, আড়পাড়ার আমিনুর রহমান মধু, বালিয়াডাঙ্গার নাজমুল হোসেন বাবুল, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাজেদুর রহমান সাগর, শহরের ষষ্টিতলাপাড়ার কামরুজ্জামান বাপ্পি, ঝুমঝুমপুরের জাহাঙ্গীর হোসেন, সাবেক কাউন্সিলর হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, শংকুরপুরের আব্দুস সালাম আজাদ, গোলাম রেজা দুলু, একে শরফুদ্দৌলা ছটলু ও শংকুরপুর এলাকার বাবু।
কোতোয়ালি মডেল থানার চানপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের এসআই আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, শনিবার রাতে তিনি জানতে পারেন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা লিটন ট্রাভেলস ও শিবচর স্টার ডিলাক্স নামক দুইটি পরিবহন যোগে নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বোমা, লাঠিসোটা নিয়ে যশোরে আসছে। তিনি রাত সোয়া ১২টার দিকে দাইতলা বাজারে ওৎ পেতে থাকেন। সেখান থেকে লিটন ট্রাভেল ও শিবচর স্টার ডিলাক্স নামক দুইটি বাস তল্লাশির জন্য সিগ্যানাল দিলে বাসটি দাঁড়ায়। এরপরই কিছু আসামি পালিয়ে যায়। সেখান থেকে মোট ৮৩ জনকে আটক করা হয় এবং ককটেল বাঁশের লাঠি, পেট্রোল, গ্যাস লাইটার উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা হরতালে নামে নাশকতার চেষ্টা করছিলো। পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অন্য মামলার সাথে জড়িত আরো ২০ জনকে আটক করা হয়।