পূর্বাচল ও চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়েসহ ১৫৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ‘শেখ হাসিনা সরণী’ (পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে) এবং চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ ১৫৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ১০,০৪১ টি কাঠামো ও বাড়ির উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন।
প্রকল্পের মধ্যে ৪৬৪৪টি বিভিন্ন উন্নয়ন অবকাঠামো এবং ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে এক লক্ষ কোটি টাকা ব্যয়ে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ৫৩৯৭টি গৃহ নির্মাণ।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে, সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরণী নামকরণ করা পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়েসহ ১৫টি প্রকল্প গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে সম্পন্ন হয়েছে এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থা ১৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে চারটি প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন।
চারটি প্রকল্পের মধ্যে একটির অধীনে কর্তৃপক্ষ সারা দেশে ২০২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ভবন নির্মাণ করেছে এবং তিনি সারা দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১,২৫৯টি ভবনও উদ্বোধন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত চারটি ডে-কেয়ার সেন্টার ও উদ্বোধন করেন।
তিনি মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে দ’ুটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলেছেন, যেগুলো প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে।
সারা দেশে মোট ১০১টি কেন্দ্র ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিল।
অনুষ্ঠানে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ,স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারসহ অন্যান্যরা মন্ত্রী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. তফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
ঢাকায়, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ১২.৫ কিলোমিটার পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে (ঢাকার কুড়িল ফ্লাইওভার পয়েন্ট থেকে নারায়ণগঞ্জের কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত) যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নামকরণ করা হয়েছে। এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মানে ব্যয় হয়েছে ১৪,০০০ কোটি টাকা।
এক্সপ্রেসওয়েতে কোন স্টপওভার পয়েন্ট, ট্রাফিক সিগন্যাল বা অন্য কোন বাধা নেই। তাই যানবাহনগুলো তার পুরো দৈর্ঘ্য ছয় বা সাত মিনিটের মধ্যে চলতে পারে। এতে রাজধানী, চট্টগ্রাম ও সিলেটের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরনির দুই পাশে ১শ’ ফুট চওড়া ও ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ খালের উদ্বোধন করেন।
৬.২০ কিলোমিটার দীর্ঘ আট লেনের এক্সপ্রেসওয়ে, চার লেনের সার্ভিস রোড, নারায়ণগঞ্জের বালু নদী থেকে কাঞ্চন পর্যন্ত ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়ে এবং চার লেনের সার্ভিস রোডের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় ১৮৪.৭৯ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় শেখ হাসিনা সরনির ওপর পাঁচটি ইন্টারসেকশন নির্মাণ, ১২টি সেতু, ছয়টি আন্ডারপাস, খালের ওপর আরো ১৩টি সেতু, ৩৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার হাঁটা পথ, ১২ দশমিক ৫ কিলোমিটার সীমানা প্রাচীর, দ’ুটি স্লুইস গেট এবং ১১টি সাব স্টেশন নির্মাণের পাশাপাশি ১১৭০টি সড়ক বাতি স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
চট্টগ্রামে ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) তিনটি উন্নয়ন প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) একটি প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে।
সিডিএ প্রকল্পগুলো হলো-১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফৌজদারহাট-বায়োজিদ লিংক রোড, বাকালিয়া এক্সপ্রেস রোড।
সাবেক সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, জানে আলম দোভাষ এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের নামে সিডিএ প্রকল্পগুলোর নামকরণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
সিপিএ নিজস্ব অর্থায়নে ১২৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিজ উদ্যোগে নিজ এলাকায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ৫১টি ঘর নির্মাণ করেছেন।