খেলা

হোপের সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ওয়ানডেতে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে

অ্যান্টিগা, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : অধিনায়ক শাই হোপের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় দিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করেছে  ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গতরাতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় পায় সর্বশেষ বিশ^কাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৮৩ বলে অপরাজিত ১০৯ রান করে ম্যাচ সেরা হন হোপ।
অ্যান্টিগায় টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। ওপেনার ফিল সল্টের মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৫০ বলে ৭৭ রানের সূচনা পায় ইংলিশরা। ২৮ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৫ রান তুলে নবম ওভারে আউট হন  সল্ট। পরের ওভারে ব্যক্তিগত ২৬ রানে আউট হন আরেক ওপেনার উইল জ্যাকস।
চার নম্বরে নামা বেন ডাকেট ২০ রানে আউট হলেও, চতুর্থ উইকেটে ৮২ বলে ৭১ রান যোগ করেন  জ্যাক ক্রলি ও হ্যারি ব্রুক। হাফ-সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে গিয়ে ৪৮ রানে রান আউট হন ক্রলি।
ক্রলি না পারলেও ওয়ানডেতে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ব্রুক। মিডল অর্ডারে অধিনায়ক জশ বটলার ৩ ও লিয়াম লিভিংস্টোন ১৭ রানে থামার পর প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ব্রুক। ৪১তম ওভারে পেসার রোমারিও শেফার্ডের বলে আউট হবার আগে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭২ বলে ৭১ রান করেন ব্রুক।
শেষ দিকে স্যাম কারান ও ব্রাইডন কার্সের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ৩২৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় ইংলিশরা। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৬ বলে কারান ৩৮ এবং কার্সে ২টি করে চার-ছক্কায় ২১ বলে অপরাজিত ৩১ রান করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেফার্ড-গুদাকেশ মোটি ও ওশানে থমাস ২টি করে উইকেট নেন।
৩২৬ রানের জবাবে খেলতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শতরানের সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার অ্যালিক আথানাজে ও ব্রান্ডন কিং। জুটিতে ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৫ বলে ৬৬ রান তুলে থামেন আথানাজে।
আথানাজে ফেরার ৭ বল পর ব্যক্তিগত ৩৫ রানে বিদায় নেন কিংও। তিন নম্বরে নামা কেসি কার্টি ১৬ রানের বেশি করতে পারেননি।
শতরানের সূচনার পর ৪০ রানের ব্যবধানে  ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ অবস্থায় ৫২ বলে ৫৬ রান তুলে দলকে লড়াইয়ে ফেরান হোপ ও শিমরোন হেটমায়ার। ৩৮তম ওভারে দলীয় ২০০ রানে হেটমায়ারকে শিকার করে ইংল্যান্ডকে ব্রেক থ্রূ এনে দেন পেসার গাস অ্যাটকিনসন। ৩০ বলে ৩২ রান করেন হেটমায়ার।
কিছুক্ষণ বাদে শেরফানে রাদারফোর্ডকে ৬ রানে বিদায় করে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে ইংল্যান্ড। ঐসময় ৬৮ বলে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ১১৩ রান দরকার পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
ষষ্ঠ উইকেটে রোমারিও শেফার্ডকে নিয়ে ইংল্যান্ডের বোলারদের উপর চড়াও হন হোপ। কারানের করা ৪৩তম ওভারে ২টি ছক্কা ও ১টি চারে দলকে ১৯ রান এনে দেন শেফার্ড। কারানের করা ৪৫তম ওভারেও ১৫ রান তুলেন হোপ ও শেফার্ড। শেষ ২৪ বলে ৪১ রান দরকারে পেসার কার্সের করা ৪৭তম ওভারে ১৭ রান তুলে ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা উজ্জল করেন হোপ ও শেফার্ড। শেষ ৩ ওভারে ২৪ রানে সমীকরণ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
৪৮তম ওভারের প্রথম বলে শেফার্ডকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন অ্যাটকিনসন। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৮ বলে ৪৮ রান করেন শেফার্ড। হোপ শেফার্ড জুটি  ৫১ বলে ৮৯ রান যোগ করেন।
শেষ ২ ওভারে ১৯ রানে দরকার পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৭৯ বলে ৯১ রান নিয়ে ক্রিজে সেট ব্যাটার হোপ। ৪৯তম ওভারে বোলিংয়ে আসা কারানের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম বলে ৩টি ছক্কা মেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুর্দান্ত জয়ের স্বাদ দেন হোপ। ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে ওয়ানডেতে ১৬তম সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। ৪টি চার ও ৭টি ছক্কায় ৮৩ বলে অনবদ্য ১০৯ রান করেন হোপ।
এই ইনিংস খেলার পথে তৃতীয় দ্রুততম (১১৪ ইনিংস) ৫ হাজার রান পূর্ণ করেন হোপ। রান তাড়ায় ৪১তম ওভারের পর সর্বোচ্চ রানে দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ ম্যাচে ৪১তম ওভারের পর ১০৬ রান করতে পারে ক্যারিবীয়রা। ২০১৪ সালে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে রান তাড়া করতে নেমে ৪১তম ওভারের পর ১০৯ রান করেছিলো পাকিস্তান।
১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে আগামী ৬ ডিসেম্বর একই ভেন্যুতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button