খেলার মাঠ বাড়াতে চান ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন
ঢাকা, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪ (বাসস) : ১৯৯০ সালের পর আবারো যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের দ্বায়িত্ব পেয়েছেন একজন পূর্ন মন্ত্রী । গত বৃহস্পতিবার শপথের পর মন্ত্রী হিসেবে আজ প্রথম কর্মদিবস কাটালেন একই সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের(বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সকালে এসেছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে। দুপুরের যান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে। বিভিন্ন ফেডারেশেনের কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন নতুন ক্রীড়ামন্ত্রী।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ছোট্ট সম্মেলন কক্ষে পা ফেলার ঠাইও ছিল না। সাম্প্রতিকালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের কোন দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর আগমনে এত জনসমাগম হয়নি। খানিকটা ধাক্কাধাক্কিও হয়েছে ফুল দিতে গিয়ে। বিষয়টি চোখ এড়ায়নি নতুন ক্রীড়ামন্ত্রীর। আজ গণমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনা শেষে এটিও উল্লেখ করেছেন, অনুষ্ঠানটি খানিকটা বিশৃঙ্খল ছিল। আমি সামনে শৃঙ্খলতার সঙ্গেই আয়োজন করব।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অধীনস্থ সংস্থা হলেও ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা এদিকে আসেন-ই না। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন মন্ত্রী হয়ে প্রথম এসেছেন, তাই বিসিবির প্রায় সব পরিচালকই উপস্থিত ছিলেন তার সঙ্গে।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেরও চেয়ারম্যান। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সাধারণত স্টেডিয়াম অবকাঠামো নির্মাণে ব্যস্ত থাকে। নতুন চেয়ারম্যান স্টেডিয়াম নির্মাণের চেয়ে মাঠকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, স্টেডিয়াম তো রয়েছে। কিন্তু মাঠ কোথায়? মাঠ না থাকলে মানুষ খেলবে কোথায়? তাই আমার কাছে স্টেডিয়ামের চেয়ে মাঠ বেশি প্রয়োজন। ঢাকায় মাঠ সংকটের বিষয়টি উল্লেখ করে ক্রিকেটের সমস্যাও সামনে আনলেন মন্ত্রী, মিরপুর স্টেডিয়াম ছাড়া ঢাকায় সেভাবে মাঠ নেই। ফলে মিরপুরে অনেক চাপ পড়ছে এবং এজন্য উইকেটের মানও ভালো হচ্ছে না।
স্টেডিয়াম নির্মাণ ও সংস্কার রক্ষণাবেক্ষণ যথাযথ হয় না। বিষয়টিও তুলে ধরে ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, স্টেডিয়াম কিন্তু আমাদের অনেক রয়েছে। অনেক স্টেডিয়াম তালাবদ্ধ খেলা হয় না, আবার অনেক স্টেডিয়াম সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়। তাই তিনি এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করার তাগিদ অনুভব করেছেন, আমাদের আগে দেখতে হবে স্টেডিয়ামের সংখ্যা কত এবং এর মধ্যে সক্রিয় কয়টি। এরপর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বাজেট হাজার কোটি টাকার একটু বেশি। এর মধ্যে যুব খাতেই চলে যায় অনেক অর্থ। ক্রীড়াঙ্গনে যে টাকা থাকে এর আবার সিংহভাগ অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রশাসনিক ব্যয়। ক্রীড়ার প্রশিক্ষণে তুলনামূলক বেশি বরাদ্দ থাকে না। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অবকাঠামো নির্মাণও প্রয়োজন বলে মনে করেন নতুন মন্ত্রী, প্রশিক্ষণ যেমন দরকার, তেমনি প্রয়োজন অবকাঠামো নির্মাণও। খেলোয়াড়দের জন্য ভালো এবং উন্নতমানের জায়গা দেওয়া দরকার প্রশিক্ষণ করানোর জন্য।
সকল ধরনের খেলাধুলাকে এগিয়ে নেবার প্রত্যয় ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, ফুটবল ক্রিকেটসহ অন্যান্য খেলাতেও আমাদের ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে আমাদের অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো, যারা আমাদের থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে থাকে তাদের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। আগামী তিন বছর পর তারা কোথায় যেতে চাই, কি অর্জন করতে চাই সেটি তাদের জানাতে হবে। আমি অল্প সময়ের মধ্যেই ইনডিভিজুয়ালি প্রতিটি ফেডারেশনের সাথে বসবো। তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা শুনবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অনেক ফেডারেশন ভালো ফলাফল করছে। আমাদের ফুটবল এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে নারী ফুটবলাররা ভালো করছে। ছেলেরাও উন্নতি করেছে। শুটিং, আর্চারিসহ আরো অনেকে উন্নতি করছে।
ক্রিকেটের মতো অন্যান্য খেলাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সব রকমের সহযোগিতা করা হবে। এ সময়ে দেশের যুবগোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে বলে মন্ত্রী জানান।