শীর্ষ নিউজ

ঢাকার বেইলি রোডের অগ্নিকান্ডে নিহতের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় শোকেরমাতম

 

কুমিল্লা (দক্ষিণ), ২ মার্চ, ২০২৪ (বাসস) : শুক্রবার রাতে রিয়ার মালয়েশিয়া যাওয়ার ফ্লাইট ছিল। তাই আগেরদিন ২৯ ফেব্রুয়ারি বোনদের নিয়ে গিয়েছেন শপিংয়ে। তার খালাতো বোন আর খালার সাথে দেখা করে ফেরার কথা। সেখানে গিয়ে আর ফেরেনি আমার দুই মা। যাবার আগে বলেছিল বাবা আমরা তাড়াতাড়ি ফিরবো। একথা বলে কেঁদে উঠেন কোরবান আলী। তার মেয়ে ফৌজিয়া আফরিন রিয়া ও সাদিয়া আফরিন আলিশা বেইলি রোডের অগ্নিকান্ডে নিহত হয়েছে। নিহত হয়েছেন তাদের খালাতো বোন নুসরাত জাহান নিমুও। তাদের মরদেহগুলো নিয়ে আসা হয়েছে কুমিল্লার গ্রামের বাড়িতে।
জানা গেছে, কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের চরবাড়িয়া এলাকার হাজী কোরবান আলীর মেয়ে তারা দুজনে। ফৌজিয়া আফরিন রিয়া মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। আর সাদিয়া আফরিন আলিশা ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। একই ঘটনায় মারা গেছে, রিয়া ও আলিশার খালাতো বোন নুসরাত জাহান নিমু। নিমু সদর উপজেলার হাতিগড়া এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী। তারা একই সঙ্গে শপিং করতে গিয়েছিল। ফাঁকে কাচ্ছি ভাই রেস্টুরেন্টে খাবার খাবে।
নিহতদের বাবা কোরবান আলী বাসসকে বলেন, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তারা এলাকায় এসেছিল। সে কয়েকদিন বাড়িতে থেকে চলে গেছে। গতকাল শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে আমিসহ মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। টিকিটও কেটেছিলা। কিন্তু গত রাতেই সে মারা গেছে। নিমুও তাদের খালাতো বোন। একই সঙ্গে গিয়ে আর ফেরেনি। আবার কাকরাইলের বাসায় থেকে সে পড়াশোনা করতো। আমার ঘর আনন্দে ভরে থাকতো। আজ আমার ঘর শূন্য।
সরেজমিনে চরবাড়ি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাড়িতে প্রতিবেশিদের ভীড়। সবার চোখে পানি। নারীরা সবাই লাশের গাড়ির আশপাশে ভিড় করেছে। কেউ লাশের গাড়ি ধরেও কাঁদছেন। বাবা কোরবান আলী বাড়ি কাঁদছেন চাচা লোকমান হোসেন। আহাজারি কেন আকাশ ছুয়েছে।
কাঁদতে কাঁদতে কোরবান আলী বাসসকে বলেন, যখন জীবিত মানুষ উদ্ধার শেষ হলো তখন আমার শরীর কাঁপছিল। আমি খামাচ্ছিলাম। বুকের ভেতর কেমন জানি হয়েছিল। আমার চোখে পানি আর বুক ভারি হয়ে আসছিল। রাত যখন ১০ টার কাছাকাছি তখন আমাদের লাশ বুঝিয়ে দেয়া হলো। যে মেয়েকে সন্ধ্যায় ভালোভাবে বিদায় দিয়েছি তার পোড়া লাশ দিয়েছে আমাকে। আমি আমার দুই স্বপ্নের লাশ দিয়ে বাড়ি এসেছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button