খেজুর খেয়ে রোজা ভাঙা এত উপকারী কেন
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর সময় থেকেই খেজুর দিয়ে ইফতারের চল। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজে খেজুর ও পানি খেয়ে ইফতার করতেন। মিষ্টান্ন, ফল, বিশেষত খেজুর খেয়ে ইফতার করা সুন্নত; যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে যেকোনো হালাল খাবার খেয়ে, এমনকি শুধু পানি দিয়েও ইফতার করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দিয়ে; নিশ্চয়ই পানি পবিত্র।’ (সূত্র: তিরমিজি ও আবু দাউদ; আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬২, পৃষ্ঠা: ১৩১-১৩২)
বৈজ্ঞানিক তাৎপর্য
আগেই বলা হলো, ইফতারের শুরুতে খেজুর খাওয়ার পেছনে ধর্মীয় তাৎপর্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে খেজুরের পুষ্টিগুণও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ কিছু পুষ্টিগুণ থাকার কারণে রোজা ভাঙার জন্য খেজুর একটি আদর্শ খাবার নিঃসন্দেহে।
প্রাকৃতিক মিষ্টি
খেজুরে বিদ্যমান প্রাকৃতিক মিষ্টিতে প্রধানত গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ আছে, যা দ্রুত রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। তাই সারা দিন রোজা রাখার পর খেজুর খেলে শরীর দ্রুত সতেজ ও সবল হয়ে ওঠে।
ভরপুর পুষ্টি উপাদান
খেজুরকে বলা হয় আঁশ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিনের মতো অতি প্রয়োজনীয় কিছু পুষ্টি উপাদানের ‘পাওয়ার হাউস’। এসব পুষ্টি উপাদান শরীরের ক্ষয়পূরণ করে।
খেজুরে প্রচুর পানি থাকে, যা সারা দিন পানি না খাওয়ার ফলে শরীরে যে ঘাটতি থাকে, তা পূরণ করে। শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে এবং রোজার সময় পানিশূন্যতা রোধ করে।
সহজপাচ্যতা
খেজুরে বিদ্যমান চিনি সহজে পরিপাকযোগ্য। সারা দিন রোজা রাখার পর খালি পেটে খেজুর খেলে পরিপাক সহজ হয়। পাকস্থলীতেও কোনো জটিলতা তৈরি হয় না। এ ছাড়া খেজুরে যে আঁশ থাকে, তা পরিপাক ক্ষমতা বাড়ায়, কোষ্টকাঠিন্য দূর করে।
কোষের সুরক্ষা ও প্রদাহরোধী বৈশিষ্ট্য
খেজুরে মেলে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট বা জারণরোধী এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বা প্রদাহরোধী উপাদান, যা আমাদের শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁজায় এবং প্রদাহ কমায়।
দীর্ঘমেয়াদি শক্তির উৎস
খেজুরে বিদ্যমান প্রাকৃতিক চিনি খুব উপকারী। খেজুর খেলে রক্তে চিনির মাত্রার হঠাৎ হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে না। ফলে দীর্ঘমেয়াদি শক্তি পাওয়া যায়, যা পরবর্তী সময়ে কাজে লাগে।
সূত্র: মুসলিম এইড