ধূমপান হৃদরোগ, হরমোন জটিলতা, বিপাক ও এমনকি মস্তিষ্কের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে
আর এসব নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তাই এই বদঅভ্যাস ছাড়তে কিছু খাবারের ওপর নির্ভর করা যেতেই পারে।
নিকোটিনের নেশা এড়ানো হয়ত কঠিন।
“কিছু খাবার সরাসরি ধূমপান ছাড়াতে ভূমিকা না রাখলেও অন্তত্য দেহে নিকোটিনের চাহিদা কমাতে পারে”- হেল্থশ্টস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এভাবেই মন্তব্য করেন ভারতীয় চিকিৎসক ডা, অক্ষয় বুধরাজা।
এসব খাবার ইতিবাচকভাবে দেহে নিকোটিনের চাহিদা কমিয়ে ধূমপানের পরিমাণ কমাতে ভূমিকা রাখে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- কমলা, স্ট্রবেরি ও ক্যাপ্সিকাম নিকোটিন গ্রহণের আগ্রহ কমাতে সহায়তা করে। এটা দেহে নিকোটিনের শোষণ বাড়িয়ে দেহ থেকে বের করে দিতে সহায়তা করে।
ভিটামিন সি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই ধূমপানের কারণে হওয়া দেহের দুর্বলতা কমাতে ভূমিকা রাখে।
এছাড়াও ভিটামিন ডি ও বি টুয়েল্ভ সমৃদ্ধ খাবার ধূমপায়ীদের জন্য উপকারী। কারণ ধূমপান পুষ্টির শোষণ হ্রাস করে এর ঘাটতি সৃষ্টি করে থাকে।
গ্রিন টি: ধূমপান থেকে বিরত থাকতে কার্যকর পানীয় হল গ্রিন টি। এটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ‘এপিগ্যালোক্যাটেচিন গ্যালেট’ নামে পরিচিত যৌগ সমৃদ্ধ। যা নিকোটিন গ্রহণের আগ্রহ কমায়।
আর ধূমপানের তীব্র আগ্রহ, অশান্তভাব, ঘুমে জটিলতা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
সারাদিন গ্রিন টি গ্রহণের ফলে দেহ প্রশান্ত হয় এবং সিগারেটের তেষ্টা পূরণে সহায়তা করে।
চুইংগাম: ডা. বুধরাজা বলেন, “চুইংগাম মুখকে ব্যস্ত রাখে এবং ধূমপানের আগ্রহ কমায়।”
বাড়তি ক্যালরি থেকে দূরে থাকতে চিনিমুক্ত চুইংগাম বাছাই করা উচিত। এতে মুখে লালার নিঃসরণ বাড়ে। যা দেহ থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। আর ধুমপানের আগ্রহ কমায়।
ফল ও সবজি: পেট ভরা রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ ও আঁশের যোগান দেয় ফল ও সবজি। কচকচ করে খাওয়া যায় যেমন- গাজর ও সেলেরি মুখে ধূমপানের স্বাদ গ্রহণের মতো পরিতৃপ্তি দেয়।
অন্যদিকে ফল কোনো রকম ক্ষতি ছাড়াই প্রাকৃতিক মিষ্টি সরবারহ করে। এটাও পরিতৃপ্তির আরেকটা উপায়।
ধূমপান ছাড়তে যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
কিছু খাবার ধূমপান গ্রহণের আগ্রহ চাঙা করে। তাই এসব খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।
কফি: কফি বাদ দেওয়া আবশ্যক। এতে থাকা ক্যাফেইন সিগারেটের আগ্রহকে বাড়িয়ে তোলে।
অ্যালকোহল: অনেকেই ধূমপানের সময় অ্যালকোহল নিয়ে থাকেন। ‘নিউট্রিশন রিসার্চ অ্যান্ড প্র্যাক্টিস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালকোহল অনেক সময় ধূমপানের স্বাদ বৃদ্ধি করে।
মাংস: মাংস, বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত মাংস নিকোটিন গ্রহণের আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে।
মসলাদার খাবার: ‘দ্যা আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি’ ধূমপান ছাড়তে চান এমন ব্যক্তিদের মসলাদার খাবার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। এসব খাবার সিগারেটের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম।
চিনির তৈরি খাবার: রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি যা সিগারেটের আগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি ‘মুড সুইং’ বা মেজাজের ওঠানামার জন্য দায়ী।
ফল, সবজি, শস্য ও চর্বিহীন প্রোটিন সমৃদ্ধ সুষম খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ধূমপান থেকে বিরিত থাকার যাত্রা সুগম করা যায়।