যশোরে পাওনা টাকার জন্য শ্রমিককে শিকলে বেধে নির্যাতন
যশোরে এবার পাওনা টাকার জন্য ট্রাক শ্রমিককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে যশোর সদর উপজেলার রাজারহাট রামনগরের বাংলাদেশ ট্রান্সপোর্টে। সেখানে গত দু’দিন ধরে শিকল দিয়ে বেধে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে কেশবপুর উপজেলার হাবাসপোল গ্রামের ট্রাক ড্রাইভার বিল্লাল হোসেনের উপর। এ ঘটনায় তিনি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার রামনগর গ্রামের মিন্টু ড্রাইভারের ছেলে সুমন ও প্রতিষ্ঠানের মালিক রাজারহাট এলাকার শাহীনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
মামলায় তিনি বলেছেন, ছয় মাস ধরে শাহীনের একটি ট্রাক তিনি চালাচ্ছেন। গত ২৬ মার্চ তিনি ও তার হেলপার সাগর খালি ট্রাক নিয়ে পটুয়াখালি যাওয়ার পথে উজিরপুরে দুর্ঘটনার শিকার হন। এসময় তার হেলপার মারাত্মক আহত হন। পরে সাগরকে নিয়ে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর তিনি মালিককে জানিয়ে কেশবপুরে আসেন। পরে ২৮ মার্চ সকালে সুমন তাকে দুর্ঘটনায় কবলিত ট্রাক আনতে যাওয়ার কথা বলে ডেকে আনে। এরপর তিনি পাওনা টাকার হিসেব করেন। এসময় ৫৩ হাজার টাকা পরিশোধও করেন বিল্লাল। কিন্তু বাকি ২০ হাজার টাকার জন্য তাকে শিকল দিয়ে বেধে দু’দিন ধরে মারপিটসহ চরম নির্যাতন চালানো হয়। ২৯ মার্চ রাত সাড়ে সাতটায় যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা মিঠুকে কৌশলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিল্লাল বিষয়টি জানান। পরে শ্রমিক নেতা ও কোতোয়ালি থানা পুলিশের সহযোগিতায় বিল্লালকে উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে সেলিম রেজা মিঠু বলেন, বিল্লালকে তারা পানি পর্যন্ত খেতে দেয়নি। বেধড়ক মারপিট করেছে। তারা এ বিষয়ে অপরাধিদের দ্রুত আটক ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এদিকে, খবর পেয়ে রাতেই কোতোয়ালি থানায় হাজির হন শ্রমিক নেতা মোর্তজা হোসেন, হারুন অর রশিদ ফুলু, ষষ্টি দত্ত, আবু হাসান, লবিন, মিন্ট ুগাজীসহ অনেকেই। ওসির সাথে বৈঠক শেষে রাতেই মামলা রেকর্ড করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই হেলাল সরদার জানান, আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। দ্রুত নির্যাতনকারীদের আটক করা হবে।
সম্প্রতি শহরের লোন অফিসপাড়ায় বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম চৌধুরি মুল্লুক চাঁদের আড়তে এক ইঞ্জিনিয়ারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সর্বশেষ একইভাবে পাওনা টাকার জন্য শ্রমিককে ডোকে এনে নির্যাতন ও হত্যা চেষ্টার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।