তাহিরপুরে পিতাপুত্র ও জামাতাসহ ৩ জনের উপর হামলাকারী ২ সন্ত্রাসী এখনও ধরাছোয়ার বাইরে
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় এক পরিবারের ৩ জনকে কূপিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনার ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনায় জড়িত ২ সন্ত্রাসী এখনও গ্রেফতার হয়নি। চিহ্নিত ৮ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় মামলা এফআইআর হলেও এখনও ধরাছোয়ার বাইরে থেকে ২ আসামী জখমীদেরকে প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে বেড়াচ্ছে। মামলার বিবরণে প্রকাশ, গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের উত্তরদিকে রাস্তার উপর ওৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা উপজেলা সদর থেকে বাড়ীতে যাওয়ার প্রাক্কালে পূর্ব বিরোধের জের ধরে কামদেবপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের পুত্র আব্দুল গনী (৬২),আব্দুল গনীর পুত্র এফায়েত (১৯) ও মকবুল হোসেনের পুত্র মিনারুল (৩০) এই ৩ পিতাপুত্র ও জামাতাকে রামদা,লোহার রড,বুজাং,কাঠের রুইল ও বাঁশের লাঠি দ্বারা কূপিয়ে,বারী মেরে নানাভাবে শরীরের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গে গুরুতর জখম করে। পরে আশংকাজনক অবস্থায় আহতদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আব্দুল গনী ও এফায়েত এই ২ পিতাপুত্রকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। গুরুতর এ জখমীরা এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার পর আব্দুল গনীর স্ত্রী চম্পা বেগম বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে গত ৩ এপ্রিল তাহিরপুর থানায় মামলা নং ২ (জিআর ৪২/২৪) দায়ের করেন। তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন গ্রাম্য সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চম্পা বেগমের অভিযোগটিকে বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/১১৪ ও ৩৪ ধারায় এফআইআর করেন। মামলার আসামী সন্ত্রাসীরা হচ্ছে কামদেবপুর গ্রামের আলিফ মিয়ার ৩ পুত্র তৌহিদ মিয়া (৪০),রশিদ মিয়া (৪৫),শহীদ মিয়া (৫০),শহীদ মিয়ার ২ পুত্র আব্দুল রকিব (২৫) ও আব্দুল মুহিত (২২),রশিদ মিয়ার পুত্র মুবিন (১৯),নয়ানগর গ্রামের মৃত আজগর আলরি পুত্র জুয়েল মিয়া (৩৫),মৃত আরফান আলীর পুত্র সাদিকুল (৩৭) প্রমুখ। তবে ৮ জনকে আসামী করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও বর্বরোচিত এ হামলার ঘটনায় মোট ১৪ জন সন্ত্রাসী অংশ নেয়। তাহিরপুর থানার এসআই আবুল কালাম চৌধুরী মামলাটির তদন্তভার গ্রহন করেছেন। গ্রামবাসী বলেন,সন্ত্রাসীদের এহেন বর্বরোচিত হামলার শিকার হয়ে পঙ্গুত্ব বরন করার কারণে জমিতে পাকা ফসল কাটার সময় জখমী কৃষক আব্দুল গনী ও তার পরিবারটি একেবারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। মামলার মোট ৮ জনের মধ্যে ৬ আসামী জামিনে এসে এবং ২ আসামী পলাতক থেকে প্রকাশ্য দিবালোকে তাদেরকে খুন করার হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। মামলার বাদিনী চম্পা বেগমকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপপ্রয়োগ করছে। ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবুল কালাম বলেন,এই মামলায় যারা পলাতক রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে জখমী পিতাপুত্র ও তাদের পরিবারবর্গরা ঘটনার মূল সন্ত্রাসী পলাতক আসামী তৌহিদ ও মুবিনকে অবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।