বায়ার্নকে টপকে যেতে মাদ্রিদকে আরো ভাল খেলতে হবে
মাদ্রিদ, ৭ মে ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে বায়ার্ন মিউনিখকে টপকে যেতে রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি নতুন ফর্মূলার সন্ধানে আছেন। দলের পারফরমেন্স বাড়ানো না গেলে জার্মান জায়ান্টদের পিছনে ফেলা মুশকিল, এটা খুব ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পারছেন আনচেলত্তি।
সেমিফাইনালের প্রথম লেগে গত সপ্তাহে জার্মানদের মাঠে ২-২ গোলের ড্রয়ের পর আনচেলত্তি স্বীকার করেছিলেন রিয়াল তাদের সেরা ফর্ম দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। ঐ ম্যাচটিতে নিশ্চিতভাবে বায়ার্ন সবদিক থেকে এগিয়ে ছিল। ভিনিসিয়াস জুনিয়রের দুই গোলে মাদ্রিদ ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ঐ ম্যাচের পর আনচেলত্তি আলিয়াঁজ এরেনাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘বায়ার্ন খুবই বিপদজনক দল। তারা আজ সেরা ম্যাচ খেলেছে, যা আমরা পারিনি। নিজেদের উন্নতি করার এখনো সময় আছে।’
শনিবার কাদিজকে ৩-০ গোলে হারিয়ে লা লিগার শিরোপা নিশ্চিত করেই মাদ্রিদ ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বায়ার্নকে আতিথ্য দিচ্ছে। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচকে সামনে রেখে লা লিগার শিরোপা জয় উৎসব আপাতত বন্ধ রেখেছে লস ব্লাঙ্কোসরা। রোববার সকালে খেলোয়াড়রা অনুশীলনে ব্যস্ত ছিল। অথচ এসময় তাদের প্লাজা সিবেলেসে শিরোপা হাতে সমর্থকদের সাথে জয়ের উৎসব করার কথা ছিল।
রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী রিয়াল মাদ্রিদ এখন তাদের ইউরোপীয়ান মুকুটে আরো একটি পালক যোগ করতে মুখিয়ে আছে।
আনচেলত্তি বলেছেন, ‘আমরা সকল সমর্থকদের সাথে জয়ের উৎসব উদযাপন করতে চাই। সবাই বিষয়টি বুঝতে পারছে। বুধবার আমাদের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মৌসুমে সম্ভবত এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ।’
মাদ্রিদ অধিনায়ক নাচো ফার্নান্দেজও কোচের সাথে একমত পোষন করেছেন, ‘আমরা ফাইনালে খেলার একেবারে দ্বারপ্রান্তে রয়েছি। সবাই এই একটি ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি। যে কারনে এই মুহূর্তে খুব একটা আনন্দ উদযাপন করছি না।’
এই মুহূর্তে মাদ্রিদের লক্ষ্য লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পঞ্চম ডাবল শিরোপা জয়ের। আনচেলত্তি মাদ্রিদের হয়ে এ পর্যন্ত ১২টি শিরোপা জয় করেছেন। ১৯৬০-১৯৭২ সালের মধ্যে ক্লাবের সর্বকালের সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ী কোচ মিগুয়েল মুনোজের ১৪ শিরোপার কাছাকাছি রয়েছে আনচেলত্তি।
ওয়েম্বলির ফাইনালে পৌঁছাতে হলে আনচেলত্তিকে অবশ্যই বায়ার্নের দুই উইঙ্গার লেরয় সানে ও জামাল মুসিয়ালাকে সামলানোর পথ খুঁজে বের করতে হবে। এই দুজনই প্রথম লেগে মাদ্রিদকে সারাক্ষন চাপে রেখেছিল।
রাইট-ব্যাক পজিশনে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ডানি কারভাহাল দলে ফিরেছেন। তিনিই মুসিয়ালাকে সামলানোর দায়িত্ব পাচ্ছেন। অন্যদিকে ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক উইঙ্গার সানের জন্য জুড বেলিংহাম ছাড়াও ফারলান্ড মেন্ডিও রয়েছেন। এবারের মৌসুমে দলের পারফরমেন্স প্রসঙ্গে আনচেলত্তি বলেছেন, ‘সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে দলকে রক্ষা করার চেষ্টা করি সেটাই বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। এবারের আসরে আমাদের পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন ফরোয়ার্ডরা। তাদের থেকে ডিফেন্ডাররা কিছুটা হলেও পিছিয়ে আছেন। ইনজুরি আমাদের নিজেদের কৌশল বুঝতে সহযোগিতা করেছে। কোন একজন বিশেষ ব্যক্তি নয়, বরং সমন্বিত ভাবেই এই সফলতা এসেছে।’
মিউনিখের দলটি থেকে কাডিজের বিপক্ষে শুধুমাত্র নাচোকে মূল দলে খেলিয়েছেন। যে কারনে দ্বিতীয় লেগে খেলোয়াড়রা বেশ সতেজ হয়ে মাঠে নামতে পারবে। বায়ার্নের তারকা স্ট্রাইকার হ্যারি কেনকে প্রায় বেশীরভাগ সময় নিষ্প্রভ রেখেছিল মাদ্রিদ। যদিও শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি থেকে এক গোল করেন কেন। আনচেলত্তি এডুয়ার্ডো কামভিনগাকেও কাল শুরু থেকেই মাঠে রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে, যাতে করে বায়ার্ন আক্রমনের সুযোগগুলো সৃষ্টি করতে না পারে। আনচেলত্তির পরিকল্পনা যদি ব্যর্থ হয় তবে সান্তিয়াগোতে ফিরে আসার ‘যাদু’ মাদ্রিদের জানা আছে। সেমিফাইনালে প্রায় হেরে যাবার পর ২০২২ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলার সুখস্মৃতি এখনো সবার মনে আছে।