বরগুনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭ জনের দাফন মাদারীপুরে সম্পন্ন; এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া
মাদারীপুর, ২৩ জুন, ২০২৪ (বাসস): বরগুনার আমতলীতে সেতু ভেঙ্গে নিহত ৭ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার সকালে মাদারীপুরের শিবচরে পারিপারিক কবরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে রাত তিনটার দিকে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনরা। কনেযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া।
এলাকা ঘুরে জানা যায়, একসঙ্গে একই পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু। এ শোক কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। এলাকাজুড়েও বইছে মাতম। কান্নায় ভাড়ী হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ। শনিবার রাত তিনটার দিকে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের শিবচরে পৌঁছায় দুর্ঘটনায় নিহত ৭ জনের মরদেহ। এ সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনরা। জড়ো হয় পাড়াপ্রতিবেশিও। পরে রোববার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
জানা যায়, বরগুনার আমতলীতে বোনের মেয়ে হুমায়রা আক্তারের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বুধবার রাজধানী ঢাকা থেকে পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে মাদারীপুরের শিবচরের ভদ্রাসনের গ্রামের বাড়িতে আসেন ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে গেলেও প্রাণ হারায় তার শাহানাজ আক্তার মুন্নী ও দুই মেয়ে তাহিদা ও তাসদিয়া। এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় ব্যাংক কর্মকর্তার বোন, ভাবী, দুই ভাগ্নেসহ একই পরিবারের ৭ জনকে। এমন মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা।
পুলিশ সূত্র জানায়, আমতলীর কাউনিয়ার মনিরুল ইসলামের মেয়ে হুমায়ারার সাথে একই এলাকার সেলিম ইসলামের ছেলে সোহাগের বিয়ে শুক্রবার দুপুরে সম্পন্ন হয়। শনিবার দুপুরে কনেপক্ষ আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার সময় বহনকারী মাইক্রোবাসটি লোহার সেতু ভেঙে পানিতে ডুবে যায়। এ ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ৭জনই মাদারীপুরের।
নিহতরা হলেন, মাদারীপুরের শিবচরের ভদ্রাসনের গ্রামের আবুল কালাম আজাদ-এর স্ত্রী শাহানাজ আক্তার মুন্নী (৪০) ও তার দুই মেয়ে তাহিদা (০৭) এবং তাসদিয়া (১১)। একই এলাকার মৃত ফকরুল আহম্মেদের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০), সোহেল খানের স্ত্রী রাইতি আক্তার (৩০), বাবুল মাদবরের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪০), রফিকুল ইসলামের স্ত্রী রুমি বেগম (৪০)।
মাদারীপুরের শিবচরের ভদ্রাসন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বেপারী বলেন, একটি পরিাবরের ৭ জন একসাথে মারা যাওয়া এটা পুরো ইউনিয়নজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের পরিবারকে শান্তনা দেয়ারও ভাষা নেই। কিভাবে এ শোক মেনে নিবে, সেটাই বুঝতে পারছি না। তবুও এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন পরিষদ সব সময় এ পরিবারটি পাশে থাকবে, সেই প্রত্যাশা করছি।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, সেতু ভেঙ্গে মাইক্রোবাস খালে পড়ে ৯ জন মারা যাওয়াদের মধ্যে ৭ জনই মাদারীপুরের। এটি খুবই দুঃখজনক। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, বৌভাত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে একসাথে একই পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। শোকবহ পরিবারের পাশে থাকবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিকেও বলা হয়েছে।