অর্থ ও বাণিজ্যবিশেষ খবর

আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৬ শতাংশ : আইএমএফ

ঢাকা, ২৬ জুন, ২০২৪ (বাসস) : আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬.৬ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপণ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), যা বাংলাদেশ সরকারের প্রক্ষেপণের খুব কাছাকাছি। আগামী অর্থবছরের বাজেটে সরকার প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬.৭৫ শতাংশ। বাংলাদেশের আইএমএফ মিশন চিফ ক্রিস পাপেজর্জিউ বাসস’র কাছে সংস্থাটির এই প্রক্ষেপণের কথা তুলে ধরেন।
ক্রিস পাপেজর্জিউ বাসসকে বলেন, অর্থনীতিতে বৈশ্বিক ধাক্কা ও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা  সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা দুর্বল করছে, যা মূলত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। তিনি বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় কঠোর রাজস্ব ও মুদ্রানীতির প্রয়োগ এবং বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি ও সামগ্রিক চাহিদাকে সীমিত করার লক্ষ্যে আমদানি বিধিনিষেধের কারণে গত দেড় বছরে প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস পেয়েছে। তা সত্ত্বেও, বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালক- রপ্তানি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়ে গেছে।’ তিনি মনে করেন, ভবিষ্যত প্রবৃদ্ধির গতিপথ ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি এবং বৈশ্বিক ভারসাম্যহীনতার মতো সমস্যার সময়মত সমাধানের উপর নির্ভর করছে।
চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির বিষয়ে ক্রিস পাপেজর্জিউ বলেন, ‘আমদানি সংকোচন নীতির কারণে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫.৪ শতাংশ। তবে, দেশীয় সামষ্টিক অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গি এবং বাহ্যিক অবস্থান ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হওয়ার কারণে, আমরা আগামী অর্থবছরে ৬.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি। তবে দীর্ঘমেয়াদে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারবাহিকতা ব্যবসায় পরিবেশের উন্নতি এবং কাঠামোগত সংস্কার  বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করবে।’
তাই সংস্কার এজেন্ডায় অগ্রাধিকারের মধ্যে বিদেশী বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র আনায়ন, বিদেশী বিনিয়োগ আকষন, আর্থিক খাত শক্তিশালী করা, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং অবকাঠামো উন্নয়নকে গুরুত্ব দেয়ার বিষয়ে জোরারোপ করেন তিনি।
ক্রিস পাপেজর্জিউ অবশ্য এও বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ উচ্চহারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক সূচকের অনেক উন্নতি করেছে। একইসাথে দারিদ্র্য হ্রাস এবং এসডিজি সূচকের স্থিতিশীল অগ্রগতি অর্জন করেছে। এই পটভূমির পরিপ্রেক্ষিতে, স্বল্পমেয়াদী অগ্রাধিকার বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণ এবং সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য একটি সক্ষম পরিবেশ তৈরি করা উচিত। এর মধ্যে রয়েছে তুলনামূলকভাবে উচ্চ অশুল্ক বাধা কমানো, বাণিজ্য-সম্পর্কিত ভৌত অবকাঠামো উন্নত করা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের সেবা সহজ করা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button