শীর্ষ নিউজসংগঠন সংবাদ
দ্বিতীয় দিনেও গ্রামীণফোনের ২০২ কর্মীর অধিকার রক্ষায় বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্বিতীয় দিনের মতো গ্রামীণফোনের বৈষম্য দূরীকরণে জিপি ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক ছাঁটাইকৃত ২০২ স্থায়ী কর্মীরা ১৩ আগষ্ট রাজধানীর জিপি হাউজের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
জিপি ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক ছাঁটাইকৃত ২০২ স্থায়ী কর্মী জিপি হাউজের সামনে গ্রামীণফোনের সকল এমপ্লয়িদের প্রতি বৈষম্য দূরীকরণে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
তথ্য সুত্রে জানায়, ২০১২ সালে তৎকালীন জিপি ম্যানেজমেন্ট ইউনিয়নের টপ লিডারসহ ২২জনকে এবং করোনাকলীন সময়ে ১৮০ জন স্থায়ী কর্মীকে সম্পুর্ন অবৈধভাবে চাকুরীচ্যুত করে। যা বছরের পর বছর মামলা ঝুলিয়ে রেখে ২০২ স্থায়ী কর্মীদের বেতন ভাতা বন্ধ সহ অন্যান্য সকল আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করে চরম বৈষম্য মূলক আচারআচরণ করে যাচ্ছে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। করেছে বৈষম্য বিরোধী গ্রামীণফোনের কর্মাচারীরা। আজ মংলবার রাজধানীর ভাটারায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সামনে অবস্থিত জিপি হাউজের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন কয়েকশ কর্মী।
গ্রামীনফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাসুলুল আমিন মুরাদের নেতৃত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিকেশন সেক্রেটারি আদিবা জেরিন চৌধুরীসহ ইউনিয়নের অন্যান্য নেতাদের মধ্যে আজাহার ইসলাম, শাহরীয়ার মুরতুজা, শাহজাহান শাহ, আসাদুজ্জামান, হাবিবুর রহমান।
রাসুলুল আমিন মুরাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উচ্চআদলতে আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়ন না করে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে শ্রমিকদেরকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। যা আদালতের প্রতি গ্রামীণফোনের অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চর্চা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ও সরকারের প্রতি অসম্মানজনক ও ন্যাক্কারজনক।
গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের এই বেআইনী ছাঁটাই, অবৈধ লক-আউট ও অসৎ শ্রম আচরনসহ সকল অবৈধ ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ডের বিষয়ে তদন্তপূর্বক গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে বেআইনী ছাটাইয়ের শিকার ২০২ জন কর্মীকে তাঁদের স্বীয় কর্মে পুনর্বহালের ব্যবস্থা গ্রহণ ও নির্দেশনা প্রদানের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
সমাবেশে বক্তারা জানান, ২০১২ সালের ২৫ মে শুধু মাত্র ট্রেড ইউনিয়ন আবেদন করার অপরাধে ২১৩ জন কর্মীকে বেআইনীভাবে কোন রকম আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ না দিয়ে সরাসরি চাকরিচ্যুত করেছিল গ্রামীণফোনের লিঃ। এদের মধ্যে থেকে ২২ জন কর্মী এই অন্যায় ও বৈষম্যের প্রতি মাতানত না করে আপসহীন থেকে বিগত ১৩ বছর ধরে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিভিন্ন আদালতে আইনি যুদ্ধ চালিয়ে আসছে। অপরদিকে অপারেটরটি বিগত সরকারের সাথে আঁতাত করে বছরের পর বছর ধরে আইনের প্রক্রিয়া গুলোকে সুকৌশলে প্রলম্বিত করছে বলে দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা।
কমিউনিকেশন সেক্রেটারি আদিবা জেরিন চৌধুরী বলেন, ২০১২ সালে ব্যাপক শ্রমিক ছাঁটাই এর প্রেক্ষাপটে ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করতে যেয়ে টপ লিডারসহ ২২ জন এবং ২০২১ সালে ২১-জুন, যখন করোনা দ্বিতীয় ঢেউ তুঙ্গে সম্পূর্ণ দেশ যখন স্থবির ছিল, সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে ১৫৯ জন কর্মীকে একসাথে ছাঁটাই করা হয়।
যা গ্রামীণ ফোনের মতো কোম্পানির কাছে কোনো ভাবেই প্রত্যাশিত ছিলোনা। যদিও উল্লেখিত কর্মীদের একটি মামলা মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন ছিল। কিন্তু আপিল বিভাগের রায়কে সম্মান না দেখিয়ে অন্য একটি মামলার মাধ্যমে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এটা বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান এর ধারাঃ ১১১ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষকে সকল এমপ্লয়িদের বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করে পূর্বের সকল বৈষম্যের আশু সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। যদি বর্তমান ও পূর্বের সকল অন্যায়,অনিয়ম ও বৈষম্য দূর করার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।