শীর্ষ নিউজ

সুনামগঞ্জে এখনও চলছে পলাতক আফতাব বাহিনীর চাঁদাবাজী সন্ত্রাস


আল হেলাল,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের পাটানপাড়া বাজারস্থ ভৈরবী ঘাটে এখনও চলছে পলাতক আসামী আওয়ামী লীগের আফতাব উদ্দিন ও তার বাহিনীর সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজী। অভিযোগে প্রকাশ,গত ২০২২ইং সনের ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা থেকে ২০২৪ইং সনের ৪ঠা আগস্ট রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ১৭৬টি হাটবারে ১৪ লক্ষ ৮ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছে ঐ বাহিনী। পাশাপাশি গত ১৬ আগস্ট শুক্রবার সকাল ৯ টায় পাটানপাড়া বাজারের দক্ষিণ অংশে নজরুল মিয়া ও তার ভাতিজা হুমায়ূন কবীরের পরিচালিত নৌকার ইঞ্জিনের দোকানে থাকা ভাড়াটে শূকুর মিয়াকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে সন্ত্রাসী শিপন একটা টিনশেড গৃহ নির্মাণ করে যাচ্ছে। নজরুল মিয়া ও তার ভাতিজা হোসাইন মাহমুদ শাহীন নিষেধবাধা দিলেও সন্ত্রাসী শিপন তাদের কোন কথা শুনাতো দূরের কথা বরং চাচা ও ভাইদেরকে খুন করার হুমকী দিয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে। এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে থানা ওসির নির্দেশে বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই পলাশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও সন্ত্রাসীদের বেআইনী স্থাপনা নির্মাণে কোন বিধিনিষেধ আরোপ করেননি। সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক হোসাইন মাহমুদ শাহীন বলেন, আমার উপর হামলাকারী আফতাব উদ্দিন সন্ত্রাসের গডফাদার। সে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে তার অফিসঘরের সামনে রেন্ট্রি গাছের সাথে বেধে রেখে আমার চাচাতো ভাই স্কুল ছাত্র সোহান (১৮) পিতামৃত নিজাম উদ্দিন সর্দার,সাং পাটানপাড়া,ইউপি বাদাঘাট,থানা তাহিরপুর,জেলা সুনামগঞ্জকে প্রকাশ্য দিবালোকে মারপিট করলেও প্রাণের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেনি। ভয়ে থানা পুলিশও মামলা নেয়নি। সুনামগঞ্জ ১ আসনের সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও সাবেক এমপি এডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে সে ড্রেজার ও বোমা মেশিন পরিচালনা করে যাদুকাটা নদীর তীর ভাঙ্গা,বালি পাথর লুটতরাজ এবং সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতনের ষ্টিমরোলার চালাতো। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল ও টেবিল কাস্টিং করে নির্বাচিত হয়। বর্তমান অন্তবর্তীকালিন সরকার উপজেলা পরিষদ বাতিল ঘোষণা করলে সে আত্মগোপনে চলে যায়। তারপরও গোপনে থেকে নিজ বাহিনী দ্বারা চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে উক্ত আফতাব উদ্দিন। তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের হলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার থেকে বিরত থাকে। আফতাব উদ্দিন বাহিনীর সদস্য হচ্ছে আমার সৎ ভাই শিপন (৩০) রিপন (৩২) ও সুমন (২৮)। তাদের স্থায়ী ঠিকানা সিলেটের শাহপরান থানার খাদিমনগর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও-আটগাঁও গ্রামে। এছাড়াও আফতাব বাহিনীর অন্যান্য সন্ত্রাসীরা হচ্ছে কোনাটছড়া গ্রামের মোক্তার হোসেনের পুত্র জিন্নাহ (৩৫) ঘাগড়ার আব্দুল মজিদের পুত্র মানিক (৩২) ও পাটানপাড়া গ্রামের মৃত গুলফর আলীর পুত্র আলাইউন (৫০) প্রমুখ।
আমার সৎ ভাইরা সিলেট জেলার শাহপরান থানার খাদিমনগর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও-আটগাঁও গ্রাম হতে আমার বাড়ীতে এসে,সাবেক ২ এমপির দাপট খাটিয়ে এবং আওয়ামী লীগের কর্মীর নাম পরিচয় ও প্রভাব বিস্তার করে আমাদের জমিজমা ও সহায় সম্পত্তির উপর লোভের বশবর্তী হয়ে,আমার চাচা নজরুল ইসলামের সিদ্বান্ত অমান্য করে জাল দলিল সম্পাদন করে আমাদের এজমালী সম্পত্তি ও বাজারের ভিটা বেআইনীভাবে বিক্রি ও দখল করে দীর্ঘদিন ধরে আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকী,চাঁদা আদায় ও দখলরাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমার বড় ভাই হুমায়ুন কবীরের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে তারা। এই ঘটনার ব্যাপারে আমি তাহিরপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করার আক্রোশে, ২০২২ইং সনের গত ২১ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার সময় আমাকে প্রাণে হত্যার লক্ষ্যে আমার উপর হামলা করে,আমাদের বাড়ীর সামনে পৈত্রিক সম্পত্তির উপর গড়ে উঠা পাটানপাড়া বাজারস্থ আমার ভাই হুমায়ূন কবীরের পরিচালিত ভৈরবী ঘাট জোরপূর্বক দখল করে নেয়। আফতাব উদ্দিন ও আলাইউনের সহযোগীতায়,রিপন শিপন ও সুমনেরা প্রতি সপ্তাহের ২টি হাটবার অর্থাৎ রবিবার ও বৃহস্পতিবার আমাদের পাটানপাড়া বাজারের ভৈরবীঘাটে ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনের জন্য আগত বিভিন্ন ভ্যান গাড়ী,পিকআপ ও অটো রিক্সার চালকদের কাছ থেকে প্রশাসনের বিধিনিষেধ অমান্য করে বিনা রসিদে প্রতি হাটবারে ৮ হাজার টাকা হিসেবে গত ১৭৬টি হাটবারে এ পর্যন্ত ১৪ লাখ ৮ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করিয়াছে।
আমি তাহিরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও ন্যায়বিচার না পাওয়ায় সুনামগঞ্জ সেনাক্যাম্পে অভিযোগ দায়ের করেছি। তারপরও ন্যায়বিচার পাচ্ছিনা।
জানা যায়,সোহালা গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের পুত্র আফতাব উদ্দিন একজন ইয়াবাসেবী,মাদকবিক্রেতা ও সন্ত্রাসের গডফাদার। সুনামগঞ্জ ১ আসনের সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও সাবেক এমপি এডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে সে সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতনের ষ্টিমরোলার চালাতো। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল ও টেবিল কাস্টিং করে নির্বাচিত হয়। বর্তমান অন্তবর্তীকালিন সরকার উপজেলা পরিষদ বাতিল ঘোষণা করলে সে আত্মগোপনে চলে যায়। তারপরও গোপনে থেকে নিজ বাহিনী দ্বারা চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে উক্ত আফতাব উদ্দিন। তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের হলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার থেকে বিরত রয়েছে। অথচ আফতাব উদ্দিন গত ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জে ছাত্রজনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার আইন ২০০২) সংশোধিত/২০১৯ এর ৪/৫ তৎসহ দন্ডবিধি আইনের ৩২৬/৩০৭/১০৯ ধারায় অভিযুক্ত সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এজাহারভূক্ত মামলা নং ৫ তাং ৪/৯/২০২৪ইং এর ২৩ নং আসামী। এছাড়াও আফতাব উদ্দিন, বাদী জহিরুল ইসলাম (২২) পিতা আব্দুল হাই,সাং ঘাগরা,থানা তাহিরপুর জেলা সুনামগঞ্জ কর্তৃক দায়েরকৃত তাহিরপুর থানার মামলা নং ১০ (জিআর ১০/২০২৪ইং) তাং ২৮/০১/২০২৪ইং ধারা ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৮৫/৫০৬ দ:বি: এর প্রধান আসামী। গত ১৩/১০/২০২২ইং তারিখে সাংবাদিক হোসাইন মাহমুদ শাহীন বাদী হয়ে তাহিরপুর কোর্টে ২২৬/২০২২ নং পিটিশন দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে আফতাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানার নিয়মিত মামলা নং ৯ তাং ১৯/১০/২০২২ইং ধারা ৩৮৫/৩৭৯/৩২৩/৫০৬/৩৪ দ:বি: রুজু হয়। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সরকারী গাছ কেটে নেয়ার ঘটনায় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আশীষ কুমার চক্রবর্তীর দায়েরকৃত মামলা নং জিআর ২০৯/১৮ (তাহিরপুর থানার মামলা নং ১৮) তাং ২৩/১১/২০১৮ইং অভিযোগপত্র নং ৭০ তাং ৩১/০৩/২০১৯ইং ধারা ৪৪৭/৩৭৯ দ:বি: এর প্রধান আসামী আফতাব উদ্দিন। ঐ মামলাটিও বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। পুত্র হাকিকুল মিয়াকে রামদা দিয়ে কোপিয়ে জখম করার ঘটনায় বাদাঘাট ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মোঃ রেনু মিয়ার দায়েরকৃত জিআর ১৮৮/২০১৯ (তাহিরপুর থানার মামলা নং ১৫) তাং ২৪/৮/২০১৯ ইং,ধারা ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৮০/৩৮৫/৪২৭/১১৪ দ:বি: মামলার প্রধান আসামী আফতাব উদ্দিন। ঐ মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। রুহিঙ্গা নাগরিকদেরকে বাদাঘাট ইউনিয়নের ভূয়া নাগরিক সাজিয়ে সনদপত্র প্রদানের ঘটনায় প্রশাসন বাদী হয়ে আফতাব উদ্দিনকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়েরসহ তাকে বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারন করেন বলেও জানা যায়। পৈলানপুরের মানিক মিয়ার দায়েরকৃত দাঙ্গাহাঙ্গামার মামলার প্রধান আসামী আফতাব উদ্দিন। গত ২২-০৪-২০২১ইং তারিখে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পিতা মোঃ আব্দুল হাই সাং ঘাগড়া,ইউপি বাদাঘাট,থানা তাহিরপুর বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় আফতাব উদ্দিনকে প্রধান আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে। একইদিন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়েও একই অভিযোগ দায়ের করা হয়। সাবেক মেম্বার শামসুল হক শিকদার আফতাব উদ্দিনকে প্রধান আসামী করে তাহিরপুর থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। যাহার জিডি নং ৮৯৮ তাং ৩১/৩/২০২০ইং। আফতাব উদ্দিন বাহিনীর বিরুদ্ধে গত ৪/৯/২০২২ইং তারিখে পাটানপাড়া নিবাসী হুমায়ূন কবীর সর্দার বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি বাদাঘাট ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই জাহাঙ্গীর হোসাইনের কাছে তদন্তাধীন থাকার পরও আলোর মুখ দেখেনি। আফতাব উদ্দিনকে আসামী করে গত ১৩ সেপ্টেম্বর/২০২২ইং আমলগ্রহনকারী জুডিসিয়েল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৩৮৫/৩৭৯/৫০৬/৪৪৮ ধারায় ১৯৮/২০২২ নং পিটিশন মামলা দায়ের করেন, পাটানপাড়া গ্রামের অবলা বিধবা ফেরদৌস বেগম। এই মামলাটিও তাহিরপুর থানা পুলিশের কাছে তদন্তাধীন অবস্থায় জোর করে বাদিনীকে দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করানো হয়। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে বারবার কল করার পরও পলাতক থাকায় আফতাব উদ্দিনের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ভূক্তভোগীরা আফতাব উদ্দিন ও তার বাহিনীর শিপন,সুমন,রিপন,জিন্নাহ,মানিক ও আলাইউন কে অবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য সেনাবাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button