ঢাকা, ৬ অক্টোবর ২০২৪ (বাসস) : জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তি ও গোটা অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ইসরাইলের ওপর হামাসের হামলার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এক বার্তায় তিনি বলেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিরোধের টেকসই সমাধান খোঁজার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে যাতে উভয় পক্ষ এবং এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশ একে অপরকে সম্মান করতে পারে এবং শান্তি ও মর্যাদার সঙ্গে একসাথে বসবাস করতে পারে। মহাসচিব বলেন, ৭ অক্টোবরের হামলা ছিল নৃশংস, এতে শিশু ও নারীসহ ১,২৫০ জনেরও বেশি ইসরাইলি ও বিদেশি নিহত হয়। এই সময় তারা যৌন নিপীড়নসহ অবর্ণনীয় সহিংসতার শিকার হয়, যারা নিছক তাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যস্ত ছিল। সেদিন অনেক নারী ও শিশুসহ আড়াই শতাধিক লোককে জিম্মি করা হয়েছিল। তিনি বলেন যে ৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য হামাসের এই জঘন্য কর্মকাণ্ড ও মানুষকে জিম্মি করার ঘটনার সোচ্চার ও স্পষ্টভাবে নিন্দা জানানোর দিন। মহাসচিব তার বার্তায় বলেন, গত এক বছরে তিনি জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে তাদের প্রিয়জনের জীবন, আশা ও স্বপ্ন সম্পর্কে আরো জানতে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং তাদের দুঃখ-কষ্টে তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।জাতিসংঘ প্রধান বলেন, জিম্মিদের পরিবারগুলোকে প্রতিদিন যে যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে তা অকল্পনীয়। অবিলম্বে ও নিঃশর্ত সকল জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত হামাসের উচিত আন্তর্জাতিক কমিটি অব রেড ক্রসকে (রেড ক্রিসেন্ট) এই জিম্মিদের পরিদর্শন করতে দেওয়া। তিনি বলেন, ৭ অক্টোবর স্বাভাবিকভাবেই এই ভয়াবহ ঘটনায় নিহত ও তাদের প্রিয়জনদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করার দিন। আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ৭ অক্টোবরের পর ভয়াবহ সহিংসতা ও রক্তপাতের ঢেউ শুরু হয় এবং এক বছর আগে সেই ভয়ঙ্কর হামলার পর শুরু হওয়া যুদ্ধ জীবন ধ্বংস করে চলেছে। এটি গাজার ফিলিস্তিনিদের এবং এখন লেবাননের জনগণের জন্য মারাত্মক মানবিক দুর্ভোগের কারণ হচ্ছে।আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘এটি জিম্মিদের মুক্তির সময়, বন্দুক স্তব্ধ করার সময়, এই অঞ্চলকে গ্রাস করেছে এমন দুর্ভোগ বন্ধ করার সময়।’ মহাসচিব শান্তি, আন্তর্জাতিক আইন পুনরুদ্ধার এবং সমস্ত ভুক্তভোগী ও বেঁচে যাওয়াদের জন্য ন্যায়বিচারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক আইন ও ন্যায়বিচারের নীতি অনুসারে সমস্ত জিম্মির মুক্তি, অঞ্চল জুড়ে দুর্ভোগের অবসান এবং একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিশেষে তিনি বলেন: ‘এত রক্তপাত ও বিভাজনের মধ্যেও আমাদের অবশ্যই আশা ধরে রাখতে হবে।’