অর্থ ও বাণিজ্যশীর্ষ নিউজ

আন্ত:ফসল হিসেবে বস্তায় আদা চাষ করে জয়পুরহাটের রুস্তম আলী এখন অনুকরণীয়

 

জয়পুরহাট, ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস): রুস্তম আলী জয়পুরহাট সরকারি কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী হলেও আন্ত:ফসল হিসেবে পেঁপের সঙ্গে বস্তায় আদা চাষ করে এবার সফলতার পাশাপাশি এলাকায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন । জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা বড় মাঝিপাড়া গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রুস্তম আলী।

বড় মাঝিপাড়া গ্রাম ঘুরে রুস্তম আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই ভাই-বোনের মধ্যে ছোট রুস্তম আলী। লেখাপড়ার পাশাপাশি ভাবতেন একই জমিতে কিভাবে অধিক ফসল ফলানো যায়। এমন চিন্তা থেকেই নিজের মাত্র ১২ শতাংশ জমিতে আন্ত: ফসল হিসেবে পেঁপের জমিতে এবার এক হাজার বস্তায় বারি-২ জাতের আদা চাষ করেছেন। পেঁপের পাশাপাশি আন্তঃ ফসল হিসেবে আদা চাষ করে অধিক লাভের স্বপ্ন দেখছেন বলে জানান, রুস্তম আলী । তিনি জানান, আগের ফসলের জমিতে বাড়িতে তৈরি করা গ্রীণ শাহী জাতের ১৩০ টি পেঁপের চারা রোপণ করায় তেমন কোন খরচ লাগেনি। ইতোমধ্যে ১২ শতাংশ জমি থেকে কাঁচা পাকা মিলে ৩৮০০০ টাকার পেঁপে বিক্রি করা হয়েছে। জমিতে এখনও প্রায় ১৫ মণ পেঁপে আছে। পাকা পেঁপে ৬০ টাকা কেজি দরে জমি থেকেই পাইকাররা নিয়ে যাচ্ছে। এখনও প্রায় ২২০০০ টাকার পেঁপে বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে আনন্দিত এবং খুশি বলে জানান রুস্তম আলী ।

বস্তায় আদা চাষের ব্যাপারে রুস্তম আলী জানান, এক হাজার বস্তা চাষ করতে খরচ হয়েছে লেবার, রাসায়নিক সারসহ ৪৯ হাজার টাকার মতো । প্রতি বস্তায় এক কেজি করে আদা পাওয়া গেলে, এক হাজার বস্তায় উৎপাদন হবে এক হাজার কেজি আদা। খুচরা হিসেবে ২৪০ টাকা কেজি আদা বিক্রি হলেও বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী প্রতি কেজি আদার দাম ২০০ টাকা পাইকারী বিক্রি হচ্ছে । এতে ২ লক্ষ টাকার আদা বিক্রি হবে এমন প্রত্যাশা রুস্তম আলীর । প্রতিবেশি কৃষকসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা আসছেন এক নজর দেখার জন্য।

পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতার বস্তায় আদা চাষ করতে কৃষকদের সার্বিক ভাবে উদ্বুদ্ধ করাসহ কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে জয়পুরহাটের উন্নয়ন সংস্থা “জাকস ফাউন্ডেশন “। ওই সংস্থার কৃষি কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন শাহিন বলেন, কৃষকরা যাতে আন্ত: ফসল হিসেবে বাড়ির আশে পাশে পতিত জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করে লাভবান হতে পারেন সে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বস্তায় আদা চাষ করে রুস্তম আলী এলাকায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। জাকস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোঃ নূরুল আমিন বলেন, বর্তমান অন্তবর্তী সরকার কৃষক ও কৃষিকে গুরুত্ব দিয়েছেন।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহিনুর ইসলাম জানান, বস্তায় আদা চাষের জন্য আলাদা করে ফসলি জমির দরকার হয়না । অতিবৃষ্টি বা বন্যায় ফসল ডুবে নষ্ট হওয়ার ভয়ও থাকে না । একটি ফসল তোলার পর সেখানে আলাদা করে কোনো সার ছাড়াই আরেকটি ফসল ফলানো যায়। এতে তুলনা মূলক খরচও কম হয় বলে জানান তিনি ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button