অর্থ ও বাণিজ্যশীর্ষ নিউজ

মুন্সীগঞ্জে আলু আবাদের প্রস্তুতি চলছে

 

মুন্সীগঞ্জ , ১৭ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ আলু উৎপাদনকারী জেলা মুন্সীগঞ্জে আলু আবাদের প্রস্তুতি চলছে। আলু এই জেলার প্রধান অর্থকারী ফসল।

প্রতি বছর প্রান্তিক চাষীরা আলু চাষে লোকসানে পরে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরও আলু আবাদ মৌসুমে তারা আবাদে সক্রিয় হয়ে উঠে। পুঁজি হারিয়ে আবারো  লাভের মুখ দেখার আশায় আলু চাষ করে।এখানকার প্রান্তিক কৃষকরা আর্থিক ঝুঁকি নিয়ে আলু চাষ করে আর ফায়দা লুটে মধ্যসত্বভোগীরা।

মুন্সীগঞ্জে প্রান্তিক আলু চাষীরা চলতি মৌসুমে আলু আবাদের জন্য  জমিতে জমে থাকা কচুরি পানা , ধান গাছসহ অন্যান্য আগাছা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী ১৫/২০ দিনের মধ্যে  পুরোদমে আলু আবাদের কাজ শুরু হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ – পরিচালক কৃষিবিদ বিপ্লব কুমার মোহন্ত বাসসকে জানান ,  চলতি আলু মৌসুমে জেলায়  ৩৪ হাজার ৬ শত ৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুন্সীগঞ্জ সদরে ৯ হাজার ৬৭৪ হেক্টর , টংগীবাড়ীতে ৯ হাজার  ৯৪ হেক্টর , শ্রীনগরে ১ হাজার ৯১৭  হ্ক্টের , সিরাজদিখানে ৮ হাজার ৮২০  হেক্টর , লৌহজেং ৩ হাজার ১৩৫ শত  হেক্টর এবং গজারিয়ায়  ২ হাজার ৪ হেক্টর জমি।

ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ ৪৫ হাজার ১৯৫ মেট্রিকটন।জেলায় গত মৌসুমে ৩৪ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয় , ফলন হয়েছিল প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায় , জেলায় ৩৪ হাজার ৬ শত ৫৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের জন্য বীজ আলুর চাহিদা রয়েছে প্রায়  ৬৯ হাজার ৩১০ মেট্রিক টন ।জেলার হিমাগারগুলোতে বীজ আলু রয়েছে প্রায় ৬৪ হাজার ৫১৬ মেট্রিক টন। আমদানী  করা বীজ দিয়ে বাকী চাহিদা পূরণ করা হবে। খাবার আলুর বাজার মূল্য বেশী থাকায় অনেক আলু ব্যবসায়ী হিমাগারে রাখা বীজ আলু বিক্রি করে দিচ্ছে। বাজার মনিটরিং টিম সক্রিয় না থাকলে আশংকা রয়েছে বাজার সিন্ডিকেট  বীজ আলুর কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার মূল্য বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে আবাদ কম হবার আশংকা থাকবে।

চলতি আলু মৌসুমে কৃষকদের মধ্যে সার সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতমধ্যে অক্টোবর , নভেম্বর ও ডিসেম্বর প্রান্তিকে  জেলায় ১৯ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া , ৭ হাজার ৪৩৫মেট্রিক টন টিএসপি , ২৫ হাজার ৩৩৭ মেট্রিক টন ডিএফপি এবং ১০ হাজার ৩২ মেট্রিক টন এমওপি সার বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।

সদর উপজেলার  কাঠাদিয়া  গ্রামের জিয়াউর রহমান বাসসকে জানান , এ সময়  বৃষ্টি না হলে আগামী  ১৫/২০ দিনের মধ্যে জমি আবাদ উপযোগী হয়ে উঠবে , তখন পুরোদমে আলু আবাদ শুরু হবে। তিনি বলেন , উৎপাদিত আলু হিমাগারে রাখার জন্য  সরকার কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করলে প্রান্তিক কৃষক উৎপাদিত আলুর ন্যায্য মূল্য পাবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের সিন্ডিকেট ভেংগে যাবে এবং  বাজার নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button