খাগড়াছড়ির রামগড় মুক্ত দিবস আজ ৮ ডিসেম্বর
খাগড়াছড়ি, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এ দিনে অকুতোয়ভয় মুক্তিসেনা ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর আক্রমণে পাক হানাদার বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়ে রামগড় ত্যাগ করে। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তি বাঙ্গালী জনতা রামগড় প্রবেশ করে এবং স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করে রামগড়কে শক্রমুক্ত ঘোষণা করে ।
ওই দিন পড়ন্ত বিকেলে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক প্রয়াত সুলতান আহমেদ মুক্তিকামী বাঙ্গালীদের নিয়ে রামগড় ডাকঘরের শীর্ষে বাংলার লাল-সবুজের পতাকাটি উত্তোলন করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন ফেনী নদীর তীরে অবস্থিত তৎকালীন মহকুমা শহর রামগড় ছিল চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র প্রতিরোধ-সংগ্রামের প্রাণকেন্দ্র। রামগড় সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠটি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ শিবির। তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান এখানে অবস্থান করে যুদ্ধ পরিচালনা করতেন। মেজর জিয়াউর রহমান এক পর্যায়ে যোগাযোগ স্থাপন করেন ভারতীয় পূর্বাঞ্চলীয় বিএসএফ’র প্রধান ব্রিগেডিয়ার পান্ডের সঙ্গে। ৪ এপ্রিল তেলিয়া পাড়া বিএসএফ ক্যাম্পে ব্রিগেডিয়ার পান্ডের সঙ্গে কনফারেন্স করেন, মেজর জিয়াউর রহমান, মেজর শফিউল্লাহ,মেজর খালেদ মোশারফ ও মেজর শাফায়েতসহ বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তারা। ঐ কনফারেন্সে মেজর জিয়াউর রহমানকে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়।
২ মে পাকিস্তানী বাহিনী রামগড়ের ব্যাপক আক্রমণ চালায়। রামগড়ে মুক্তিযুদ্ধ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের দায়িত্ব প্রাপ্ত মেজর রফিকুল ইসলাম সমস্ত স্থাপনা ও যুদ্ধ সামগ্রী সীমান্তের ওপারে ভারতের সাবরুমে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম সাহসী লড়াইয়ের পর রামগড়ের পতন হয়। পরবর্তীতে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবির থেকে মুক্তিযোদ্ধারা মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় আবারও পাকিস্তানী সেনাদের উপর আক্রমণ শুরু করে। ৭ ডিসেম্বর রাতে এবং ৮ ডিসেম্বর ভোরে ভারতীয় দুটি জঙ্গী বিমান রামগড়ে পাকিস্তানী বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনার উপর দু’দফা সফল হামলা চালিয়ে রামগড়কে হানাদার মুক্ত করে।