বিশ্বশীর্ষ নিউজ

৭৯ নাবিকসহ বাংলাদেশী দুই জাহাজ উড়িষ্যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা থেকে ৭৯ জেলে-নাবিকসহ বাংলাদেশি দুটি মাছ ধরার জাহাজ ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড। জাহাজ দুটি হলো এফভি মেঘনা-৫ ও এফভি লায়লা-২।
খুলনা অঞ্চলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে সামুদ্রিক মৎস্য দফ্তরে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছে জাহাজ দুটির মালিকপক্ষ। আটকের বিষয়টি মৌনভাবে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এর জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল হক ও মিডিয়া কর্মকর্তা লেঃ কমান্ডার মো. সুয়াইব বিকাশ।
বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন অফিস সেক্রেটারি আবিদ হাসান বলেন, এফভি লায়লা-২ ফিশিং জাহাজটির মালিক সিদ্দিকুর রহমান। তাদের অপারেশন কোম্পানির নাম ‘এস আর ফিশিং’। এফভি মেঘনা-৫ ফিশিং জাহাজের মালিক এমএ ওয়াহেদ, অপারেশন কোম্পানির নাম সিঅ্যান্ডএ অ্যাগ্রো লিমিটেড।
তিনি আরো বলেন, ‘ভুলে বাংলাদেশী জাহাজ দুটি ভারত সাগরের জলসীমান্তে প্রবেশ করে। পরে ভারতীয় কোস্টগার্ড বাহিনী নিষেধ করায় তাৎক্ষণিক জাহাজ দুটি বাংলাদেশী জলসীমায় ফেরত আসেন। কিন্তু তার ঘন্টাখানিক পরে ভারতীয় কোস্টগার্ড বাংলাদেশী জলসীমায় প্রবেশ করে আবারও জাহাজ দুটি আটক করে নিয়ে যান বলে খবর পেয়েছি।’
সিঅ্যান্ডএ অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) আনসারুল হক আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে বলেন, ‘জাহাজের নাবিকরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমরা সবশেষ খবর পেয়েছি, জাহাজ দুটিকে ভারতের উড়িষ্যার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেছি। এ বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হলে সে অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’ জানা গেছে, এফভি মেঘনা-৫ এ নাবিকসহ ৩৭ জন ও এফভি লায়লা-২ এ ৪২ জনসহ জেলে ছিলেন। তবে কী কারণে ট্রলারগুলো নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা জানা যায়নি।
তবে ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সরকারি কোনও কর্তৃপক্ষ থেকে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য জানাতে পারেনি। নির্দিষ্ট কোন অবস্থান থেকে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কারা কেন ধরে নিয়ে গেছে; সেসব বিষয়েরও উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে অপর একটি সুত্র জানায়, জাহাজ দুটি সোয়াচ নো গ্রাউন্ডের পশ্চিম প্রান্তে ফিশিং করতেছিলেন, ওখান থেকে ধরে  নিয়ে গেছে।
নৌ-পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমোডোর মাকসুদ আলম জানান, তিনি বিষয়টি জেনেছেন। খতিয়ে দেখে তারা ব্যবস্থা নেবেন।
সামুদ্রিক মৎস্য দফতরের পরিচালক মো. আবদুস ছাত্তার বলেন, ‘আমি বিষয়টি সম্পর্কে এখনও অবগত নই। অফিসে খবর নিয়ে জানাতে পারবো।’
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ বলেন, ‘তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে এ ঘটনা শুনেছেন। কিন্তু কোনও চিঠি বা অভিযোগ পাননি। ফলে ঘটনাটি কোন লোকেশনে ঘটছে তাও জানতে পারছেন না। খোঁজ খবর নিচ্ছি বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।’
এ বিষয়ে এফবি মেঘনা-৫ ফিশিং জাহাজের মালিক এম. এ. ওয়াহেদ কে কল করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। কি করা যায়। তবে এটি সত্য জাহাজ দুটি ভারতীয় কোস্টগার্ডের হাতে আটক রয়েছে।
এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এক্স ক্যাডেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি নূর উদ্দিন। তিনি জানান, ‘বাংলাদেশের দুটি বড় মাছ ধরার জাহাজ (লায়লা-২ ও মেঘনা-৫) যাকে বাংলাদেশের সমুদ্রে সীমানা রেখার মধ্যে থেকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button