কেন্দুয়ায় বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা
জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলার কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে কৃষি অফিসের সামনে পতিত জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। এখানে যারা আসেন সবারই দৃষ্টি কাড়ে আদা গাছগুলো। বর্তমানে প্রতিটি বস্তায় একাধিক আদা গাছ সবুজে বেড়ে উঠেছে। আদা চাষের এমন পদ্ধতি দেখে আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার প্রচেষ্টায় ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে উপজেলা কৃষি অফিসের সামনে সামান্য পতিত জায়গায় ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের শেষের দিকে ৮০টি বস্তায় প্রদর্শনী হিসেবে আদা চাষ করা হয়েছে। প্রতিটি বস্তায় ৬০ গ্রাম করে আদা বীজ রোপণ করা হয়েছে। এতে মোট ৪ কেজি ৮০০ গ্রাম আদা বীজ রোপণ করা হয়েছে। বীজ রোপণের ৯ মাসের মধ্যেই আদার ফলন পাওয়া যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মাসুদ মিয়া জানান, প্রতি বস্তায় ৩ কেজি করে জৈব সার ব্যবহার করা হয়েছে। বস্তা, বীজ, সার, নেটসহ সব মিলিয়ে ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। নয় মাসের মধ্যেই এসব বস্তায় কম করে হলেও প্রতি বস্তায় ১ কেজি করে অন্তত ৮০ কেজি আদা উৎপাদন হবে। যদি ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়, তবে উৎপাদিত আদার বিক্রয় মূল্য হবে ১৬ হাজার টাকা।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছরের মার্চ-এপ্রিলে আদা চাষ করতে হয়। আদা চাষে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। খরচও কম। লাভ বেশি। পতিত যেকোনো জায়গাতেই আদা চাষ করা যায়। তবে আধো আলো আধো ছায়া বা ছায়াযুক্ত জায়গা আদা চাষের জন্য উত্তম। বস্তায় আর কোনো ফসল চাষ করে আদার মতো এতো উৎপাদন সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসের সামনে বস্তায় আদা চাষ দেখে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়ন ব্রহ্মণজাত গ্রামের কৃষক আনোয়ার জাহিদ মল্লিক ওয়াসীম। তিনিও তার বাড়িতে প্রায় ৬০০ বস্তায় আদা চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় আমার বাড়িতে ৬০০ বস্তায় আদা চাষ প্রদর্শনী করেছি। এতে স্থানীয় কৃষি অফিস সার্বিকভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। আদা চাষে উৎপাদন ব্যয় কম এবং খুব একটা পরিচর্যাও করতে হয় না। আশা করছি, লাভবান হবো।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ূন দিলদার বলেন, কৃষকদের মনযোগ বাড়াতে এবং সবাই যাতে বাড়িতে বা যেকোনো পতিত জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করতে উদ্বুদ্ধ হয়, মূলত সে জন্যই আমাদের অফিসের সামনে বস্তায় আদা চাষের এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমাদের আদা চাষ দেখে এ উপজেলার মানুষ বস্তায় আদা চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আর সবাই যদি আদা চাষ করে তাহলে সাড়া পড়ে যাবে এবং একপর্যায়ে সকলেই লাভবান হবেন। এতে এখানকার কৃষকরা স্থানীয় আদার চাহিদা মিটিয়েও অন্যান্য স্থানে তা বিক্রি করতে পারবেন।