চট্টগ্রামসংগঠন সংবাদ
মাস্টারদা সূর্যসেনের ফাঁসি দিবসে বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার শ্রদ্ধা নিবেদন
ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিস্মরণীয় চরিত্র,চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহের সর্বাধিনায়ক মাস্টারদা সূর্যসেনের ৯১ তম ফাঁসি দিবসে আজ ১২ জানুয়ারি, ২০২৪ জেএমসেন হলে সূর্যসেনের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা শাখা। পুষ্তস্তবক অর্পণকালো উপস্থিত ছিলেন বাসদ(মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির আবিদ, জেলা কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা আহবায়ক আসমা আক্তার,বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সাধারণ সম্পাদক জাহেদুন্নবী কনক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নগর সভাপতি রিপা মজুমদার প্রমুখ।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শফি উদ্দিন কবির আবিদ বলেন,“ “মাস্টারদা সূর্যসেন চট্টগ্রামের বুকে এক সংগঠিত ও সুপরিকল্পিত সশস্ত্র অভ্যুত্থানের দৃষ্টান্ত তৈরি করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসনে পরাধীন ভারতবাসীকে স্বাধীনতার মন্ত্রে ঊজ্জীবিত করতে চেয়েছিলেন। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল সূর্যসেনের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সৈন্যদের পরাস্ত করে চট্টগ্রামে প্রথম স্বাধীন ভারতের পতাকা উত্তোলন করা হয়,চারদিন চট্টগ্রাম বৃটিশমুক্ত ছিল।সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক জালালাবাদ পাহাড়ের যুদ্ধ।সূর্যসেন ছাত্র-যুবকদের বলতেন, “জন্মেছি যখন মৃত্যু তো অনিবার্য। মরবই যখন তখন সার্থক মৃত্যুবরণই শ্রেয় নয় কি? কোটি কোটি মানুষের দাসত্ব শৃঙ্খল মোচনের পথে যে মৃত্যু আসবে, তাই আমরা বরণ করব।” সূর্যসেন দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করে দেশের তরুণ-যুবকদের বুকে স্বাধীনতার সে মন্ত্র প্রোথিত করে দিয়েছিলেন। সূর্যসেনের সংস্পর্শে প্রীতিলতা, কল্পনা দত্তের মতো সংগ্রামী নারী চরিত্র সৃষ্টি হয়েছিল।প্রীতিলতার নেতৃত্বে পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণ ও প্রীতিলতার আত্মাহুতির মধ্য দিয়ে তিনি দেশবাসীর সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চেয়েছিলেন, শুধু পুরুষরা নয়, নারীরাও সশস্ত্র লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে পারে। গণভিত্তি তৈরির উপর তিনি জোর দিয়েছিলেন। সূর্যসেনের বিপ্লবী দলে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য অবারিত দ্বার ছিল। মীর আহমেদ, আফসারউদ্দিন, আবদুস সাত্তার, কামালউদ্দিন আহমদ, সৈয়দুল হকের মতো মুসলিম তরুণদের বিপ্লবী হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। সূর্যসেনের সংগ্রামী চরিত্র ও শৌর্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধসহ সকল ন্যায়সঙ্গত লড়াই-সংগ্রামে বিরাট অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।সূর্যসেন,প্রীতিলতাদে র অসমসাহসী লড়াইয়ের কারণে চট্টগ্রামের নাম হয়েছিল ‘বীর চট্টলা’।অথচ সে ‘বীর চট্টলা’য় বীর সূর্যসেনসহ বিপ্লবীদের স্মৃতিজড়িত স্থান সংরক্ষণ ও সে গৌরবজনক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার কোন রাষ্ট্রীয় আয়োজন নেই।আমরা অবিলম্বে চট্টগ্রামে সূর্যসেন স্মৃতি জাদুঘর স্থাপন,সূর্যসেন- প্রীতিলতা-তারকেশ্বর দস্তিদারসহ বিপ্লবী ও ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহের স্মৃতি সংরক্ষণের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়া,সূর্যসেনের ফাঁসি দিবসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করার দাবি জানাই।”
নেতৃবৃন্দ মাস্টারদা সূর্যসেনের চেতনায় শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করার আহ্বান জানান।