আটুলিয়ায় বিএনপি কর্মী আসাফ ও মিলনকে হত্যার চেষ্টা
বিশেষ প্রতিবেদক
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার তাবৎ গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের মানুষ এখন অসহায়। আটুলিয়া, শ্রীচন্দ্রপুর, গুলবাকপুর, দত্তপাড়া, গলহাটি গ্রামে এখন অসভ্যতা ভর করেছে। মাদক কারবারিরা এতটাই বেপরোয়া যে দুই বিএনপি কর্মী আপন ভাই কে কুপিয়ে হত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছে। ঐ দুই ভাইয়ের মাথা ও শরীরে রোববার যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তাররা জটিল অপারেশন করেছেন। মিলন ও আসাফ নামের ঐ দুই ভাইয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শনিবার সকাল ১১ টার ঘটনা। আটুলিয়া গাঙের ধারে সরকারি রাস্তা সংস্কার কাজ চলছিল। ভেকুর মাটি কাঁটা নিয়ে আয়ুবের ছেলে জসিম আসাফের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়ায়। এরপর তখন মিটে যায়। খানিক পর কউছার আলীর ছেলে মিলন কে মারধোর করে। বিকালে বহিরাগতদের এনে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা। গাছিদা, হাসুয়া, পিস্তলসহ ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী দুই ভাইকে হত্যার অপচেষ্টা করে প্রকাশ্যে।
স্থানীয়রা জানান, চাঁদাবাজ, মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত ও আটকের মাধ্যমে দুর্বত্ত চক্রের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাইবার আবেদন জানিয়েছেন আটুলিয়াবাসি।
অতি সম্প্রতি এই গ্রামে ধারাবাহিক চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। এক বার দিয়েও মুক্তি মিলছে না। বার বার চাঁদা ধার্য করে আদায় করছে এই চক্রের সদস্যরা। চাঁদা দেওয়ার পরেও বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যেয়ে মারধোর করা হচ্ছে নিরীহ গ্রামবাসীকে। পিস্তল, শর্টগানসহ প্রায় ৩০/৩৫ জন এক সাথে হামলা করে গ্রামে এরা তান্ডব সৃষ্টি করছে।
একই সাথে প্রকাশ্যে ঔ চক্রের সদস্যরা অবৈধ মাদক দ্রব্য ফেন্সিডিল, ইয়াবা ট্যাবলেট, গাঁজা, মদ বিক্রি করছে।
এক কথায় আটুলিয়াসহ আসেপাশের কয়েকটি গ্রাম এখন চলাচলের সন্পূর্ণ অনিরাপদ। নারী, পুরুষ, কিশোর কিশোরী বা বয়োবৃদ্ধ কারো এখানে নিরাপত্তা নেই।
গঙ্গানন্দপুরের চারজন এবং আটুলিয়ার ২০/২৫ জনের একটি মাদক কারবারি ও চাঁদাবাজ চক্র সাধ্যরণ গ্রামবাসীকে অস্ত্রের মুখে জীম্মি করে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে। না দিলে বাড়ি থেকে ধরে এনে মারধর করে তাঁদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প এ আগে স্বাক্ষর পরে লেখালেখি করা হচ্ছে।
চাঁদা দিয়েও মারধর ও অহেতুক হেনস্থার ভয়ে অনেকেই গ্রাম থেকে জীবন রক্ষায় অন্যত্র চলে গেছেন।
আটুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা যারা চাঁদা দিতে বাধ্য হয়েছেন তারা হলেন,
১) তছির মিয়া, পিতা মৃত লুৎফর রহমান ২) মালেক পিতা মৃত গুজু (মালেক চাঁদা দিয়ে সাত দিন পরে ভয়ে স্ট্রোক করে মারা যায়।) ৩) ময়না, পিতা আনজার ৪) আবু খায়ের, পিতা রওশন ৫) হান্নান, পিতা নজরুল ৬) ইসলাম, পিতা বাহার আলী ৭) নবীছদ্দি, পিতা ইসলাম ৮) জাইদুল, পিতা হোসেন আলী ৯) মোমিনুর, পিতা খলিলুর।
সন্ত্রাসী, চাঁদাবজরা গ্রামের বজলে ডাক্তারের ছেলে তরিকুল ইসলামের লিজ জমি জোর করে জবর দখল করেছে।
এই চাঁদাবাজ চক্র খলিলুরের ছেলে আমিনুর কে ধরে মারধর করে স্ট্যাম্প করে নিয়েছে।
এই চক্র মাদ্রাসা শিক্ষক শাহিনের কাছে চাঁদা দাবি করেছে। না দিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া এদের চাঁদাবাজি সন্ত্রাস বিভিন্ন সময়ে পত্র পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে।
এই অসামাজিক চাঁদাবাজ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী চক্রটির নেতৃত্ব দিচ্ছে গঙ্গানন্দপুরের মাঠুয়া পাড়ার নসু। তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আজিজ। এছাড়া আটুলিয়ার চার ইনচার্জ হচ্ছে বাবুল, দুই ভাই আনারুল ও কামারুল। এছাড়া নারী শাখার প্রধান হচ্ছে,
১) নসু পিং মৃত রমজান আলী বাহিনী প্রধান গ্রাম গঙ্গানন্দপুর মাটুয়া পাড়া ২) আজিজ পিতা বশির মাস্টার মাটুয়া পাড়া ৩):হালিম মৃত আনচ্ছার ধর্মতোলাতে থাকতো ৪) আলী হোসেন পিতা মৃত ইসার আলী ৫) আনারুল, পিতা মৃত আব্দুর রহমান নুনু, গ্রাম আটুলিয়া ৬) কামারুল, পিতা মৃত আব্দুর রহমান নুনু, সাং আটুলিয়া ৭) খবিরুল, পিতা মৃত আব্দুর রহমান নুনু, আটুলিয়া ৮) বাবুল, পিতা রফিকুল বুড়ো ৯) লতা, পিতা আব্দুল ফকির, ১০) এরশাদ, পিতা রফি মেম্বার ১১) শহিদুল, পিতা মিজা ১২) মাসুদ, পিতা শাহাজান, ১৩) সাহাবুর, পিতা সারু হক, ১৪) ইমন, পিতা আনিছুর, ১৫) আশিকুর, পিতা আসাদুল ১৬) জসিম, পিতা আয়ুব হোসেন, ১৭) কাসেম, পিতা জোহর। (আজিজ ঝিকরগাছায় ছিল। প্রতিদিন দুটো ফেনসিডিল লাগে )।
নিরীহ স্বল্প বা লেখাপড়া না জানা মানুষের আর্জি এইসব হায়নার হাত থেকে আমাদের বাঁচান।
শুধু আটুলিয়ায় নয় পাশাপাশি গুলবাকপুর, শ্রীচন্দ্রপুর দত্তপাড়া, গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরের মানুষ এই চক্রের কাছে জীম্মি।
ভুক্তভুগি এসব মানুষ জনতাকে নিরাপদে বাপ্ দাদার ভীটায় বসবাস করতে দিতে এ দেশের প্রশাসন কর্তাদের উপর নির্ভর করছে।