চট্টগ্রামশীর্ষ নিউজ

কর্ণফুলীতে একই অফিসে শিক্ষা কর্মকর্তার ৭ বছর!

বদলি নয়, বসবাস! কর্ণফুলীতে ৭ বছর ধরে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার রাজত্ব
নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারি বিধি অনুযায়ী, কোনো কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি থাকতে পারেন না। কিন্তু চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র নাথ এই বিধি উপেক্ষা করে টানা ৭ বছর ধরে একই পদে বহাল রয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি বদলি ঠেকিয়ে রেখেছেন।
জানা গেছে, তিনি কর্ণফুলীতে যোগদান করেন ২০১৮ সালের ১ মার্চ। অথচ ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসনের কার্যক্রম শুরু হয়। অর্থাৎ, উপজেলা প্রশাসনের কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই তিনি একই পদে রয়েছেন। সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে, যা বিভিন্ন সময়ে লিখিতভাবে দপ্তরে জানানো হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাবুল চন্দ্র নাথ দীর্ঘদিন একই অফিসে থাকার সুবাদে নিজেকে ক্ষমতাশালী কর্মকর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সরকারি চাকরিবিধি এবং মন্ত্রিপরিষদের সর্বশেষ পরিপত্র অনুযায়ী, কোনো কর্মকর্তা তিন বছরের বেশি একই কর্মস্থলে থাকতে পারেন না। এ নিয়ম লঙ্ঘন করে তিনি কীভাবে সাত বছর ধরে একই পদে রয়েছেন, তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।
শিক্ষকদের অনেকেই জানান, কয়েকবার বদলির আদেশ এলেও তা কার্যকর হয়নি। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, গুরুত্বপূর্ণ এই সরকারি অফিসে ৭ বছর ধরে তিনি কীভাবে বহাল রয়েছেন এবং তার পেছনে কারা আছেন, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র নাথ বলেন, ‘আমি কর্ণফুলীর শুরু থেকেই এখানে কর্মরত, তা সত্য। তবে আমি নিজেও বদলির চেষ্টা করেছি। চাকরির মেয়াদ আর ১০ মাস বাকি, তাই এই সময়টুকু কাটিয়ে দেওয়াই যথেষ্ট। বর্তমানে আমি অসুস্থ, বাসায় বিশ্রামে আছি।’
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, ‘কিছুদিন আগে কর্ণফুলীর বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা বই বিতরণসহ একাধিক বিষয়ে অভিযোগ করেছিলেন। আমি সমস্যার সমাধান করেছি। বাবুল চন্দ্র নাথ যে ৭ বছর ধরে একই উপজেলায় আছেন, তা সত্য। তবে আমাদের কর্মকর্তা সংকট রয়েছে। শিগগিরই নতুন কর্মকর্তা পদায়ন হবে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি বিধি অনুযায়ী, তিন বছর পূর্ণ হলে বদলির নিয়ম রয়েছে। তবে তিনি কীভাবে এতদিন ধরে কর্মরত রয়েছেন, তা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশাসন ভালো বলতে পারবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর আঞ্চলিক উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনি বলেন, ‘যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তবে তা লিখিতভাবে আমাদের কাছে পাঠানো হলে আমরা ঢাকায় পাঠাবো। কর্ণফুলীতে তিনি কীভাবে ৭ বছর ধরে আছেন, সে বিষয়ে মাউশি প্রশাসন শাখাই যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারবে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button