বিশেষ খবর

এনবিআর ও আইআরডি ভেঙ্গে দুটি বিভাগ, অধ্যাদেশ জারি

 

১৩ মে, ২০২৫ (বাসস): জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব খাতকে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামে দুটি পৃথক বিভাগে ভাগ করে অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার।

গত ১২ মে সোমবার রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অনুমোদনের পর অধ্যাদেশটি জারি করা হয়।

এর ফলে বিলুপ্ত হলো ‘এনবিআর’ ও ‘আইআরডি’ নামক প্রতিষ্ঠান।

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব ডক্টর হাফিজ আহমেদ চৌধুরী এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।

এটিকে এনবিআরের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথম বড় প্রশাসনিক বিভাজন এবং রাজস্ব প্রশাসনে এক যুগান্তকারী সংস্কার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই সংস্কার রাজস্ব প্রশাসনের গতিশীলতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে সহায়ক হবে।

প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সংবিধানের ৯৩ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করেছেন, কারণ সংসদ বর্তমানে ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। গেজেটের মাধ্যমে বিদ্যমান রাজস্ব কাঠামো পুনর্গঠন করে কর নীতিমালা ও কর আদায় কার্যক্রমকে সম্পূর্ণ আলাদা দুটি প্রশাসনিক শাখায় রূপ দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর মধ্যে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ কর ব্যবস্থা প্রণয়ন, কর নীতি প্রণয়ন, আইন ও বিধি সংশোধন, গবেষণা ও বিশ্লেষণ ও আন্তর্জাতিক চুক্তি বিষয়ে মতামত প্রদান করবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সচিবালয়ে থাকবে এই বিভাগ। এর আওতায় থাকবে কর আপিল ট্রাইব্যুনাল এবং কাস্টমস আপিল ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি স্ট্যাম্প ডিউটি, আয়কর, ভ্যাট, কাস্টমস ইত্যাদি নীতিগত বিষয় দেখবে বিভাগটি।

এতে একজন সচিব নিয়োগ করা হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়ে বিভাগটি গঠিত হবে।

এছাড়া রাজস্ব নীতি বিভাগকে সহায়তার জন্য একটি পরামর্শক কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে; যেখানে অর্থনীতিবিদ, ট্যাক্স বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও সরকারি প্রতিনিধিরা থাকবেন।

অন্যদিকে ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ মাঠপর্যায়ে রাজস্ব আহরণ, বাস্তবায়ন, প্রশাসন, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং আইন প্রয়োগে কাজ করবে। এটি সরাসরি রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকবে। সিভিল সার্ভিসের কর, শুল্ক ও প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা এই বিভাগে পদায়ন পাবেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তে রাজস্ব খাতের দ্বৈত ভূমিকা পৃথক হওয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে। নীতি ও বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ আলাদা হওয়ায় নীতিগত উন্নয়ন ও কার্যকারিতা বাড়ানো সহজ হবে। ভবিষ্যতে বাজেট পরিকল্পনা ও রাজস্ব সংগ্রহে দক্ষতা ও গতি আসবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button