প্রবাসী ক্রেতাদের কোরবানির পশু ক্রয়ের সুযোগ থাকছে এ বছরের ডিজিটাল হাটে
প্রেসরিলিজ
প্রবাসী ক্রেতাদের কোরবানির পশু ক্রয়ের সুযোগ থাকছে এ বছরের ডিজিটাল হাটে। করোনাকালীন সময়ে বিগত ২০২০ সালে প্রথমবারের মত চালু হওয়া অনলাইন কোরবানির হাট ‘ডিজিটাল হাট’ এবারও অনলাইনে পশু বিক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইক্যাব)-এর ব্যবস্থাপনায় এবং সরকারের এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)-প্রকল্পের একশপ-এর কারিগরি সহায়তায় ইতোমধ্যে অনলাইনে কোরবানি পশু বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং স্থানীয় পর্যায়ের হাটগুলো যুক্ত রয়েছে এবারের ডিজিটাল হাট এর সাথে। সেই সাথে এবার ডিজিটাল হাটে যুক্ত হয়েছে প্রবাসী ক্রেতাদের জন্য অনলাইনে পেমেন্টের মাধ্যমে গরু ক্রয়ের সুবিধা। সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স এসোসিয়েশন। বিগত ২০ জুন থেকে শুরু হয়েছে এই প্লাটফর্মে পশু বিক্রয়। প্রবাসি ক্রেতাদের জন্য বিশেষ ঘোষণাটি এসেছে আজ ২৪ জুন।
ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারির মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, আমরা বিগত ৩ বছরে প্রায় ১০ হাজার খামারিকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেছি। বিভিন্নভাবে তারা অনলাইনে পশু বিক্রয় করেছেন এবং অনেকে প্রত্যক্ষভাবেও এর সুফল পেয়েছেন। খামারি, অনলাইন উদ্যোক্তা ও কোরবানির পশুর ক্রেতা সকলের কথা চিন্তা করেই আমরা এই উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছি।
“ বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি বা চলাচল সংক্রান্ত কোনো সরকারি নিষেধাজ্ঞা বা বিধি-নিষেধ না থাকলেও ক্রেতাদের আগ্রহের কারণে এবারও ডিজিটাল হাট এর মাধ্যমে কোরবানি পশু বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূল digitalhaat.gov.bd ছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় ক্যাটল বিক্রয়ের প্লাটফর্মগুলো এর সাথে যুক্ত রয়েছে। আরো যুক্ত রয়েছে জেলা পর্যায়ের ফেইসবুক ও ওয়েবভিত্তিক পশু বিক্রয়ের প্লাটফর্মগুলো। ” এই তথ্য জানিয়েছেন একশপ-এর টীম লিডার এবং এটুআই-এর কমার্শিয়াল স্ট্র্যাটেজি বিভাগের প্রধান জনাব রেজওয়ানুল হক জামি।
২০২০ সালে ডিজিটাল হাটের প্রথম বছরেই এই অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে ২৭,০০০ পশু বিক্রয় হয়েছিল। পরবর্তী বছরে অর্থাৎ, ২০২১ সালে ৩৮৭,০০০ সংখ্যক কোরবানির পশু বিক্রয়ের মাধ্যমে এক অনন্য রেকর্ড স্থাপন করে এই ডিজিটাল হাট প্লাটফর্ম, যার স্বীকৃতি স্বরুপ ২০২১ সালে এই প্লাটফর্মটি ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরষ্কারে ভূষিত হয়। গত বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালে করোনার প্রকোপ একেবারেই কম থাকার পরেও এই প্লাটফর্মে প্রায় ৬০,০০০ পশু বিক্রয় হয়েছিল। আয়োজকরা অনুমান করছেন, এই বছর ডিজিটাল হাটে অন্তত ৫০,০০০ পশু বিক্রয় হবে। গতবারের চেয়ে এবারে কম বিক্রয় হবার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তারা ধারণা করছেন যে, করোনা-পরবর্তী এই সময়ে এবার দেশে অবাধ চলাচল এবং পশুর দামের কারণে গতবারের চেয়ে ২০% কম পশু অনলাইনে বিক্রয় হতে পারে।
ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক আসিফ আহনাফ বলেন, এবারের ডিজিটাল হাটের বিশেষ সংযোজন, আমরা এ বছর প্রবাসী ক্রেতাদের জন্যেও অনলাইনে পশু ক্রয়ের সুযোগ রেখেছি। তবে সেটা শুধুমাত্র মূল প্লাটফর্ম digitalhaat.gov.bd থেকে ক্রয়ের জন্য প্রযোজ্য হবে এবং ক্রেতা যে জেলার জন্য ক্রয় করবেন সে জেলায় পশুর অবস্থান হতে হবে।
ডিজিটাল হাট-এর মাঠ পর্যায়ের সমন্বয়ক ই-ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভন বলেন, ডিজিটাল হাটে পেমেন্ট-এর প্রক্রিয়া টি হবে এরকমঃ পশু পছন্দ ও দাম নির্ধারণ এর পরে কতৃপক্ষ ক্রেতা ও বিক্রেতাকে ভেরিফাই করে একটি অনলাইন পেমেন্ট লিংক ক্রেতার জন্য প্রেরণ করবেন। সেই লিংকে ক্রেতা `পেমেন্ট প্রদান করবেন। বিক্রেতা তার ঠিকানা অনুযায়ী পশু ডেলিভারী করবেন। পুরো বিষয়টি ডিজিটাল হাট ব্যবস্থাপনা কতৃপক্ষ তদারকি করবেন। এবারও স্লটারিং সেবার সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে এটা সম্ভব হবে স্লটারিং-এর জন্য নির্ধারিত স্থান খালি থাকা সাপেক্ষে এবং আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে। আশা করা যাচ্ছে এবারও আইসিটি প্রতিমন্ত্রীসহ অন্যান্য অনেকে ডিজিটাল হাট থেকে পছন্দের পশু ক্রয় করবেন।
এবার ডিজিটাল হাট স্পন্সর হিসেবে রয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় মার্কেটপ্লেস দারাজ এবং গেটওয়ে পার্টনার হিসেবে রয়েছে ওয়ালেটমিক্স।
সরকারের নির্ধারিত বিধি মোতাবেক ডিজিটাল হাট পরিচালনা করা হবে। কোরবানি পশু সংক্রান্ত শরিয়তের বিধান ও অন্যান্য বিষয় তদারকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়া, এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ডিজিটাল হাট-এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।