আটুলিয়ায় ৩ লিঙ্ক রোড পাকা করনে যশোর-২ এমপির হস্তক্ষেপ কামনা
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত তিনটি লিঙ্ক রোড কাঁচা ও বর্ষায় চলাচলে অনুপযোগী হওয়ায় ১৫ গ্রামের মানুষ বিপাকে পতিত হয়েছেন। যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার আটুলিয়া গ্রামের রাস্তায় সামান্য বর্ষা হলেই মানুষ এসব রাস্তা দিয়ে পাটে হাটতে পারেনা। অথচ বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী নুর হোসেনের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এসব রাস্তা ব্যবহার করে পাকিস্থানী হানাদর বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন।
১৫ গ্রামবাসী এই তিনটি লিঙ্ক রোড পাকা করনে যশোর-২ ঝিকরগাছা-চৌগাছা আসনের সংসদ সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ডা: নাসির উদ্দীনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বড় আটুলিয়া থেকে ধুলিয়ানি বাজার রাস্তা প্রায় এক কিলো মিটার, শ্রীচন্দ্রপুর থেকে আইডিয়াল ক্লাব মোড় পর্যন্ত ৭০০ মিটার এবং গুলবাকপুর থেকে আইডিয়াল ক্লাব মোড় পর্যন্ত আংশিক ৫০০মিটার রাস্তা এখনো কাঁচা। সামান্য বৃষ্টি হলেই এই তিনটি লিঙ্ক রোড চলাচলে সম্পূর্ন অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অথচ ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, পিকআপ, সাইকেল, ভ্যান ব্যাপক হারে এই তিনটি লিঙ্ক রোড ব্যবহার করে ২৪ ঘন্টা।
সরেজমিন দেখা যায়, ছোট আটুলিয়ার জলের ডাঙ্গা মহল্লায় বেলুর বাড়ির পূর্ব ও উত্তার পাশে সামান্য বৃষ্টিতেই এসব রাস্তা চলাচলে সম্পুর্ন অনুপযোগী হয়ে গেছে। সাইকেল, ইজিবাইক, ভ্যান, মোটরসাইকেল কিছুই চলাচল করতে পারছে না।
আটুলিয়ার প্রবীন মানুষ নজরুল ইসলাম (৭২) বলেন, সামান্য রাস্তাটুকু পাকা করে দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। অথচ সামান্য কারনে আমরা তীব্র সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। পথ চলতে পারছি না। এমপি চেয়ারম্যান যদি একটু নজর দিয়ে রাস্তা টুকু পাকা করে দেন তাহলে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
আটুলিয়া গ্রামের বজলুর রহমান ডাক্তারের ছেলে কামরুজ্জামান বলেন, প্রতি ভোটের আগে যশোর-২ ঝিকরগাছা-চৌগাছা আসনের এমপি প্রার্থী পাশ করলে রাস্তা পাকা করনের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্ত পাশের পর আর তিনি এই এলাকার কথা মনে রাখেন না। একই প্রতিশ্রতি দেন ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। একই ধারায় গঙ্গান্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বর প্রার্থীরা এই তিনটি লিঙ্ক রোড পাকা বা পিচকরনের প্রতিশ্রুতি দেন।
গঙ্গানন্দপুর ডিগ্রী কলেজের সমাজবিজ্ঞানের প্রভাষক বেলাল হোসেন (আটুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা) বলেন, সামান্য রাস্তা পিচ বা পাকা করা নেই বলে আমরা এলাকাবাসী অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় আর চলতে পারিনা। এ বিষয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক, এলজিইডি বরাবর দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে কিন্ত রাস্তা পাকা হয়নি। তিনি এই তিন লিঙ্ক রোড পাকাকরনে সংশ্লিষ্ট এমপি ডা: নাসির উদ্দীনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ভ্যানচালক জহুরুল ইসলাম (৩২) বলেন, ভ্যান নিয়ে চলতে খুব কষ্ট হয়। ১০ মিনিটের রাস্তা যেতে এক ঘন্টা লেগে যায়। এরপরও কাঁদায় আটকে যায় ভ্যান। তিনি রাস্তা পাকা করতে এমপি, ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বরের সহযোগিতা চান।
১৫টি গ্রামে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষের বসবাস। এরা নানা কারনে এই রোড ব্যবহার করে চৌাগাছা উপজেলা, ঝিকরগাছা উপজেলা, ছুটিপুর, ধুলিয়ানি বাজার বা যশোর শহরে যায়। জমিজমা বা অন্যান্য মামলায় বাদি বিবাদীরাও এসব রোড ব্যবহার করেন। এরাও এখন চরম সমস্যায়। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতেও লোকজন ধুলিয়ানী বা ছুটিপুর বাজারে যেতে এই রোড ব্যবহার করেন।