পিরোজপুরে ৫০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে
পিরোজপুর, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরে ৩১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় সজ্জ্বিত ৫০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। চলতি বছরের ডিসেম্বরেই শেষ হতে যাচ্ছে।
সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব, জলোচ্ছ্বাস এবং বন্যা থেকে উপকূলীয় এলাকার লাখ-লাখ মানুষের জান-মাল রক্ষার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এ ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ শুরু করে, যা সমাপ্ত হবার সময় হচ্ছে ২০২৩-২০২৪।
পিরোজপুর সদর উপজেলায়- ৪টি, নাজিরপুরে ৪টি, নেছারাবাদে ৬টি, ভান্ডারিয়ায় ৭টি, ইন্দুরকানিতে- ৭টি, কাউখালীতে ৫টি এবং মঠবাড়িয়ায় ১৭টি ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিটির ৩ তলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
আই ও এল প্যাটার্নের এসব ভবনের কোনটির ফ্লোর ৩ হাজার ৪১০ বর্গফুট এবং কোনটির ফ্লোর ৩ হাজার ৬১৮ বর্গফুট করা হয়েছে। এই ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর গ্রাউন্ড ফ্লোর বা ১ম তলা সম্পূর্ণ খোলা রাখা হয়েছে। ২য় তলায় আশ্রয় নিতে আসা এলাকাবাসীদের গবাদীপশু, হাঁস-মুরগী রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে গবাদী পশু হেটে ওঠার জন্য র্যাম সিস্টেম করা হয়েছে। ৩য় তলায় দেড় হাজার থেকে ২ হাজার নারী-পুরুষ-শিশু আশ্রয় নিতে পারবে। এখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে। রয়েছে গর্ভবতী মায়েদের সন্তান প্রসবের জন্য ডেলিভারি কক্ষ, মালামাল রাখার ব্যবস্থা রয়েছে এবং ৩য় তলায় কমোটসহ ৬টি বাথরুম রয়েছে। এছাড়া সাবমার্সিবল পাম্প এবং রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং এর মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহের সু-ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত আলোর জন্য সোলার সিস্টেম বসানো হচ্ছে। রয়েছে আধুনিক বজ্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা। স্বাভাবিক সময় এই ভবনগুলোর ৩য় তলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচালিত হবে। এছাড়া ১ম ও ২য় তলায় স্থানীয় এলাকাবাসী বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, সচেতনতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারবে। ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রকল্পের পিরোজপুরের সহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াউন্নবী জানান- এ সব ভবনে প্রাকৃতিক দূর্যোগের শিকার মানুষজন আশ্রয় নেয়ার পাশাপাশি বহুমূখী কর্মকান্ড পরিচালিত হবে।
ৎস্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার হাওলাদার জানান প্রাথমিকভাবে প্রতিটি ভবন ৩ তলা বিশিষ্ট করা হলেও পরবর্তীতে প্রয়োজনে এখানে ৮ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা যাবে। তিনি বলেন এ ভবনগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করা হচ্ছে এবং উপকূলীয় মানুষ সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবল থেকে এ ভবনগুলোতে আশ্রয় নিয়ে জান-মাল বাঁচাতে পারবে।
নাজিরপুরের শেখ মাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান চৌধুরী নান্নু তার ইউনিয়নের গড়ঘাটায় একটি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন- এ এলাকার মানুষ এখন প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবল থেকে নিরাপদে থাকতে পারবে।