বিশ্ব নদী দিবস আজ,যশোরের নদী বাঁচানোর আকুতি
মালিক্জ্জুামান কাকা
‘ভৈরব ও কপোতাক্ষের তীরে নগর যশোর
রয়েছে অনেক লোকজ ও গ্রামীন ইতিহাস
রাজা প্রজার হাসি কান্নার জীবনযাত্রা হেথা
একদা যেথা ছিল প্রাচুর্য্যের ছড়াছড়ি নহর
হারিয়ে গেছে শাষক ও ভোক্তার নির্যাতনে
আজ তাই মা নদী মরে হয়ে গেছে জ্বীর্ন খাল
বর্ষায় চেনা যায়না প্রভাত দিন তার রাত্রি প্রহর
এমনি করে বাংলা জুড়ে রয়েছে সহ¯্র নদ নদী
ইতিহাস ঘেঁটে লোমহর্ষক ধ্বংস সেথা রুপ আদি
বানিজ্য বন্দর, প্রকৃতির মায়ায় গড়ে ওঠা সুন্দরবন
আজও দখলে খুন করে চলেছি ধিক নাগরিক জন
পানির মায়ায় গড়ে ওঠা বনে যেথা ছিল বাঘ হরিন
মাছ বাঘ সজারু ময়ুর শিয়াল পন্ডিত হচ্ছে বিলীন
আজি নদনদী প্রকৃতি রক্ষার শপথে এসো হয় কুলীণ।
বিশ্ব নদী দিবস আজ রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর। নদী রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের চতুর্থ রোববার দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্ব নদী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘রাইটস অব রিভার’। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে দিবসটি। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আয়োজন করা হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। নদি দিবসে যশোরে কোন আয়োজনের কথা শোনা যায়নি। তবে যশোরবাসী মনে করেন নদী না রক্ষা করা গেলে বাঁচানো যাবেনা যশোরকে। প্রকৃতির অপরিসীম কৃপার যশোর যেন এক নদী হন্তারকের নাম। হারিয়ে গেছে, পাটনা। বিলীন হয়েছে আংশিক বেতনা ও হরিহর এবং মুক্তেশ্বরী। ভৈরব ও কপোতাক্ষ রুপ হারিয়ে এখন শীর্নকায় এক খাল।
আসুন বিশ্ব নদী দিবসে যশোরের ঐতিহ্য কপোতাক্ষ, ভৈরব, মুক্তেশ্বরী, বেতনা, হরিহরসহ সকল নদ রক্ষার শপথ করি। মমত্বের ধারক এসব নদ বাঁচানো গেলে বেঁচে যাবে প্রকৃতি। অক্সিজেন রক্ষার যে সবুজ তার নিরাপত্ত্বা দেয় নদনদী। সকলে মিলে গড়ি স্মার্ট নদী মাতৃক বলিষ্ঠ বাংলাদেশ। ছেলে বুড়ো নর নারী শিশুর আজকের ও আগামীর এই হোক দূড় শপথ।
জানা গেছে, গত ৫০ বছরে দেশের নদ-নদীর সংখ্যা অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তালিকায় থাকা মোট ৩৮৩টি নদীর অনেকগুলোর অবস্থাও সংকটাপন্ন। দূষণ ও ভূমিদস্যুদের আগ্রাসনের পাশাপাশি অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়ন, আবাসন এবং সেতু, কালভার্ট ও স্লুইসগেট নির্মাণের ফলে ছোটবড় আরও অনেক নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হচ্ছে। নদ-নদী ও প্রাকৃতিক খাল রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে সরকার জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন গঠন করেছে। তবে প্রয়োজনীয় জনবল ও অন্যান্য সুবিধা না থাকায় সংস্থাটি যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে পারছে না।
১৯৮০ সাল থেকে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রোববার বিশ্ব নদী দিবস হিসেবে পালন করতে শুরু করে ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। এরপর ২০০৫ সাল থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন সহযোগী সংস্থা দিবসটি পালন করছে। বাংলাদেশে ২০১০ সালে প্রথমবার রিভারাইন পিপল নামের একটি সংস্থা এ দিবস পালন করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের নগরায়নের ফলে নদীগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো কর্মকা- পরিচালনা করলে তার ফলাফল শূন্যই থেকে যায়। আমরা ধীরে ধীরে নদী দূষণ করছি ও দখল করছি। এখন যদি এসব বন্ধ করতে না পারি তবে সামনে আমাদের দুর্দিন আসছে।
পরিবেশবাদী ও মানবাধীকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, আমাদের নদীগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকার ভেতরেতো নেই, চারপাশেও এখন নদী নেই। ক্ষমতার প্রভাবে নদী দখল করছে মানুষ। কিন্তু এ নদীতো জনজীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমাদের এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।