আঞ্চলিকশীর্ষ নিউজ
যে গ্রামের লোকজন রাতে ঘুমাতে পারে না
জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে কোনোভাবেই যেন থামানো যাচ্ছে না বন্যহাতির আক্রমণ। কিছুদিন পরপর হাতির তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, নষ্ট হচ্ছে মাঠের ফসল আর সবজি খেত। আর রাতে গ্রামের লোকজন ভয়ে ঘুমাতে পারে না।
হাতির ভয়ে দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে কর্ণফুলী এলাকার মানুষ। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কেপিজেডের পাহাড়ে অবস্থান নেওয়া হাতির দল তাণ্ডব চালাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলমান থাকায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছেন এলাকার মানুষজন।
স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। হাতির ভয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ছোট বাচ্চা বয়স্কদের নিয়ে রাতভর নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
সোমবার রাতে বড়উঠান খিলপাড়া গ্রামে হাতি তাণ্ডব চালিয়ে ওই এলাকার মো. আমিনের বাড়ি ভাংচুর করেছে। এছাড়াও প্রতিনিয়ত জমির সবজি বাগান নষ্ট করেছে হাতির দল।
ক্ষতিগ্রস্ত আমিন বলেন, রাতে হাতি এসে আমার বাড়ির দেয়াল ভেঙে ফেলেছে। আমার চাল, ডাল, কাপড়-চোপড় সবকিছু নষ্ট করে ফেলেছে।
ওই এলাকার মো. খালেক বলেন, গরিব অসহায়দের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। তারা এখন খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি সরকারি সহায়তার দাবি জানান।
আগুন জ্বালিয়ে মশাল জ্বালিয়ে এবং ফটকা ফাটিয়েও হাতির দলকে তাড়াতে পারে না। রাতভর চলে হাতির তাণ্ডব। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় হাতির তাণ্ডব চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না দাবি স্থানীয়দের। ইতোমধ্যে হাতির তাণ্ডবে প্রাণহানি ঘটেছে অনেকের।
কৃষকদের দাবি, বন্যহাতির অত্যাচার বন্ধে সরকারিভাবে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে কেইপিজেডের পাহাড়ে অবস্থান নেওয়া বন্যহাতির দলটি দিনে কেইপিজেডের লেকের পানি বা পাহাড়ে থাকলেও সন্ধ্যার পর দল বেঁধে ছুঁটে আসে লোকালয়ে। খাবারের খোঁজে আসা হাতিগুলো কৃষকের ধান, বিভিন্ন ফসল ক্ষেত নষ্টসহ বসতবাড়ি ভাঙচুর চালায়।
কর্ণফুলীর দায়িত্বে থাকা বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ বলেন, মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি যাতে না হয় সেজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এরপরও অনেকের ক্ষতিসাধন হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি নির্ধারিত ফরম পূরণ করে আবেদন করলে বনবিভাগ থেকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়।