যশোর রেল স্টেশনে বন্ধুদের হাতে যুবক খুন
যশোর রেলস্টেশনে শনিবার সন্ধ্যায় বন্ধুদের ছুরিকাঘাতে জুম্মন (২৬) এক যুবক খুন হয়েছে। তিনি শংকরপুর বাস টার্মিনাল এলাকার মুরাদ হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে যশোর কোতয়ালি থানায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও অস্ত্রসহ ১৪টি মামলা রয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ থেকে চার জনকে শনাক্ত করেছে। নিহত ও অভিযুক্তরা সকলেই অপরাধের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক সংস্থার সোর্স হিসেবে পরিচিত।
যশোর ডিবি পুলিশের ওসি রূপন কুমার সরকার জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে রেল স্টেশন এলাকায় সন্ত্রাসীরা জুম্মানকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসিব মোহাম্মদ আলী হাসান জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। মরদেহ মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
নিহতের ভাই মামুন বলেছেন, তিনি সংবাদ শুনে হাসপাতালে এসে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পান। কারা তাকে হত্যা করেছে এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। নিহত জুম্মান ভাংড়ি মালামালের ব্যবসা করেন বলে তিনি জানিয়েছেন। মামুন জানিয়েছেন, সন্ধ্যার দিকে কে বা কারা তাকে মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর সে খুন হয়। জুম্মানের মোবাইল ফোনটি শংকরপুর এলাকার রাকিব ওরফে ভাইপো রাকিবের কাছে আছে।
যশোর রেল স্টেশনের প্লাটফর্মের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, স্টেশনের দক্ষিণ পাশ থেকে জুম্মানকে তাড়া করছে ৬ সন্ত্রাসী। জুম্মান দৌড়ে প্লাটফর্মে ওঠার মুহূর্তে একজন তাকে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করে। এরপর দৌড়ে জুম্মান প্লাটফর্মের পশ্চিম দিকে চলে যান। দুর্বৃত্তরা ফের পিছু ধাওয়া করে। রেলস্টেশনের দক্ষিণ দিকে নিয়ে গিয়ে ফের ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জুম্মান একজন মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় ১৪টি মামলা আছে। কিছুদিন আগেও জুম্মান মাদকসহ ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল।
এলাকার একটি সূত্র জানিয়েছে, জুম্মান গাঁজা বিক্রেতা। কিছুদিন আগে ওই এলাকার প্রিন্স নামে একজন জুম্মানের কাছ থেকে ২ কেজি গাঁজা বাকিতে কেনে। এই নিয়ে প্রিন্সের সাথে জুম্মানের শত্রুতা সৃষ্টি হয়। প্রিন্স ওই এলাকার ট্যারা তপনের ভাই রিপনের ছেলে। এই নিয়ে শনিবার ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার দিকে বিরোধ তৈরি হয় রেলগেট এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ অফিসের সামনে। সেখান থেকে ৬জন তাড়া করলে জুম্মান স্টেশনের প্লাটফর্ম ক্রস করে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। প্লাটফর্মে উঠার সময় তাকে ছুরিকাঘাতে করে রনি নামে এক দুর্বৃত্ত। রনি শংকরপুর এলাকার বাবুর ছেলে। যশোরের ডিবি পুলিশ ওই সিসি ক্যামেরায় ধারন করা ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। তাতে প্রিন্স ও রনিকে চেনা গেছে বলে সূত্রটি দাবি করেছে। এছাড়া রায়পাড়া ইসমাইল কলোনীর ঢ্যাপ পকেটমারের ছেলে সাগর ও একই এলাকার চয়ন নামে আরো একজনকে চেনা গেছে। পুলিশ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চারজনকে শনাক্ত করতে পেরেছে।
কোতয়ালি মডেল থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কে বা কারা জুম্মান নামে একজনকে ছুরিকাঘাত করেছে। এতে তিনি মারা গেছেন। পুলিশ আসামিদের আটকের জন্য অভিযান চালাচ্ছে।