অর্থ ও বাণিজ্যশীর্ষ নিউজ

দিনাজপুর বীরগঞ্জে মেশিনে হাঁসের বাচ্চা ফুটিয়ে লিটনের মাসিক আয় ৩ লক্ষ টাকা

 

দিনাজপুর,  ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ( বাসস): জেলার  বীরগঞ্জ উপজেলায় ইনকিউবেটর এর মাধ্যমে হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে লিটন নামের এক যুবক  সফলতা অর্জন করেছে।  স্বল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ পদ্ধতি।
গতকাল সোমবার বিকেলে  সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,দিনাজপুর বীরগঞ্জ  উপজেলার মোহনপুর  ইউনিয়নের  কাশিপুর খুশির বাজার এলাকার  খলিলুর রহমানের পুত্র  লিটন ইসলাম এর সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা যায় । ওই যুবক লিটন জানান,  প্রায় এক যুগ থেকে তার বাবা তুষ পদ্ধতিতে হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে আসছিলেন।
পরে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাবার ব্যবসাতে সহযোগিতা করার জন্য ইনকিউবেটর  ওই আধুনিক যন্ত্রটি তিনি ক্রয় করেন।  ওই যন্ত্রের মাধ্যমে  তিনি বিভিন্ন জাতের হাসের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপন্ন করে। বাড়ির পাশে পুকুর থাকায় বিভিন্ন জাতের হাঁস পালন করেন। যা প্রতিনিয়ত ডিম দেওয়ায় বাড়তি  ডিম কিনতে হয় না। লিটন  অল্প খরচে লাভ হওয়াতে নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। শুধুমাত্র হাঁস প্রজনন, ডিম উৎপাদন ও বিক্রি করে থেমে যায়নি । দেশি সাদা ও কালো জাতের পাশাপাশি চীনের জিনডিং, বেইজিং, পিংকি, ইংল্যান্ডের খাকি ক্যাম্পবেল ও ভারতের রানারসহ বিভিন্ন দেশের উন্নত জাতের হাঁস পালন ও বাচ্চা প্রজনন করা হয় তার খামারে ।
বীরগঞ্জ উপজেলায় খামারটি হাঁস প্রজনন খামার হিসেবে পরিচিত  পেয়েছে । প্রতি সপ্তাহে ৬ দিন পর  ডিম ফুটানো বাচ্চা বুকিংয়ের মাধ্যমে খামারি ও উদ্যোক্তাদের কাছে বিক্রি করা হয়। বাজার মূল্যের চেয়ে খুব কম মূল্যে দেশি বিদেশি নানা প্রজাতির হাঁসের বাচ্চা ও ডিম বিক্রি হয় করা হয়।, বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ ও উদ্যোক্তারা এ খামারে হাঁসের বাচ্চা  কিনতে আসেন। এখান থেকে হাঁসের বাচ্চা ও ডিম দেশের অধিকাংশ জেলাতে সরবরাহ করা হয়। তার সফলতা দেখে জেলার অনেক তরুণ এ হাঁসের খামার তৈরিতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
বেইজিং হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা ফোঁটানের পদ্ধতি  ৩০০ বাচ্চা ফোটানোর মত ইনকিউবেটর মেশিন উদ্ভাবন ক্ষমতা রয়েছে  । এতে খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা। ২৮ দিন পর বাচ্চাগুলো খোলস থেকে বেড়িয়ে আসার পর সেগুলো বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেয়া হয়। লভ্যাংশ বেড়ে যাওয়ায় ছোট ইনকিউবেটর ভেঙ্গে এখন ৬ হাজার ও ১২ হাজার বাচ্চা ফোটানোর ইনকিউবেটর তৈরি করা হয়েছে । এতে তার খরচ হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। প্রতিটি বাঁচ্চা উৎপাদনে খরচ হয় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। বিক্রি করছেন ৭২ থেকে ৭৫ টাকা। মাসে তার ১৩ হাজার হাঁসের  বাচ্চা বের হয়।এসব উৎপাদিত হাঁসের  বাচ্চা থেকে মাসে   আয় হয় প্রায় ৩ লাখ টাকা। জেলার  খানসামা, পার্শ্ববর্তী পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ ও, নীলফামারী জেলার , ভুল্লি বাজার কিশোরগঞ্জ, ডোমার, ডিমলা, এবং  লালমনিরহাট থেকে ক্রেতারা এসে লিটনের  হাঁসের বাচ্চা নিয়ে যাচ্ছেন।লিটনের দাবি  সরকারি সহযোগিতা পেলে তরুণ এ উদ্যোক্তা প্রসেসিং প্লান্ট তৈরির মাধ্যমে হাঁস মোটাতাজা করে মাংস বাজারজাত করার পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানির করতে পারবেন ।
জেলার  বীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ওসমান গনি বলেন, ভ্যাকসিন ওষুধসহ সব ধরণের সহায়তা উদ্যোক্তা লিটনকে দেওয়া হচ্ছে। তিনি এ পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার হাঁস ও ডিম বিক্রি করেছেন। আমরা আশা করছি তার সফলতা দেখে এ উপজেলার অন্যান্য নারী-পুরুষ অনুপ্রাণিত হয়ে খামারি হয়ে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবেন বলে আমার বিশ্বাস।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button