চ্যাম্পিয়ন্স লিগ: পিএসজিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে এগিয়ে থাকলো ডর্টমুন্ড
ডর্টমুন্ড (জার্মানী), ২ মে ২০২৪ (বাসস/এএফপি) : নিকলাস ফুয়েলক্রুগের একমাত্র গোলে বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে পিএসজিকে পরাজিত করেছে স্বাগতিক বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।
৩১ বছর বয়সে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলতে নামা ফুয়েলক্রুগ সিগন্যাল ইডুনা পার্কে ৩৬ মিনিটে সেন্টার-ব্যাক নিকো শ্লোটারবেকের লফটেড পাসে লো শটে ডর্টমুন্ডকে এগিয়ে দেন। পুরো ম্যাচে সেই গোল আর পরিশোধ করতে পারেনি সফরকারী পিএসজি। দলের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে পুরো ম্যাচেই ছিলেন নিষ্প্রভ। এই জয়ে ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মত ১৯৯৭’র বিজয়ীরা ফাইনালের পথে একধাপ এগিয়ে থাকলো। ঘরের মাঠে ৮০ হাজার সমর্থকের সামনে সুস্পষ্ট ফেবারিট পিএসজিকে ডর্টমুন্ড দাঁড়াতেই দেয়নি।
কিলিয়ান এমবাপ্পের নেতৃত্বে খেলতে নামা পিএসজি দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দুইবার শট পোস্টে লাগালেও কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি।
জার্মান দলটির দীর্ঘদিনের সঙ্গী সেন্টার-ব্যাক ম্যাটস হামেলস বলেছেন, ‘আমি বিশ^াস করি আজ আমরা ক্লাসিক একটি দলীয় পারফরমেন্স সবার সামনে দেখাতে পেরেছি। ম্যাচ জয়ের জন্য প্রত্যেকেই প্রত্যেককে সহযোগিতা করেছে। দুইবার ভাগ্য আমাদের সহায় ছিল। আমরা সবাই নিজেদের পারফরমেন্স নিয়ে দারুন সন্তুষ্ট। এতটা পরিনত পারফরমেন্সে আমরা নিজেরাও আশা করিনি।’
এবারের মৌসুমে গ্রুপ পর্বে ইতোমধ্যেই পিএসজির সাথে একবার পরাজিত ও একবার ড্র করেছে ডর্টমুন্ড। সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে খেলার ১১ বছর পর আবারো একটি স্বপ্নের ফাইনালে ওয়েম্বলিতে ফিরে আসার আশা করতেই পারে ডর্টমুন্ড। যদিও আগামী সপ্তাহে ঘরের মাঠে ফিরে আসার ব্যপারে দারুন আত্মবিশ^াসী পিএসজি। এ সম্পর্কে পিএসজি অধিনায়ক মারকুইনহোস ক্যানাল প্লাসকে বলেছেন, ‘দ্বিতীয় লেগে পিএসজির পার্ক ডি প্রিন্সেস ও আমাদের সমর্থকরা আশা যোগাচ্ছে। আমরা জানি এর থেকেও ভাল করা সম্ভব।’
ডর্টমুন্ড ম্যানেজার এডিন টারজিক ম্যাচের আগে বলেছিলেন কাতারি মালিক এক দশক আগে পিএসজির দায়িত্ব নেবার পর থেকেই তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্য নিজেদের গড়ে তুলেছে। পিএসজির সুপারস্টার এমবাপ্পের সাথে ডর্টমুন্ডের কোন খেলোয়াড়েরই তুলনায় হয়না। নিজের ঘরের ক্লাবের হয়ে এবারই শেষবারের মত এমবাপ্পে মাঠে খেলছেন। অন্যদিকে দুই বছর আগে এ সময়ে দ্বিতীয় বিভাগে ফুটবলে খেলেছেন ডর্টমুন্ড স্ট্রাইকার ফুয়েলক্রুগ।
উজ্জীবিত স্বাগতিক সমর্থকদের কাল হতাশ করেনি ডর্টমুন্ড। এমবাপ্পে যখনই বল পেয়েছেন তখনই সমর্থকরা চিৎকার করেছে। প্রথম দিকে ডর্টমুন্ডই ম্যাচের আধিপত্য নিয়েছিল। ডানদিক থেকে জেডন সানচো নিজেকে দারুনভাবে মেলে ধরেছেন। মার্সেল সাবিটাইজার ১৪ মিনিটে ডর্টমুন্ডের হয়ে সেরা সুযোগটি পেয়েছিলেন। কিন্তু তার কোনাকুনি শটটি গিয়ানলুইগি ডোনারুমা রুখে দেন। ৩৬ মিনিটে অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। সেন্টার-ব্যাক শ্লোটারবেক নিজের অর্ধ থেকে বল পেয়ে মাঝামাঝি বাড়িয়ে দিয়ে ফুয়েলক্রুগ অনেকটা একাই প্রথম সুযোগে বল নিয়ন্ত্রনে নিয়ে ডোনারুমাকে পরাস্ত করেন। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণত গোলরক্ষকের করার কিছুই থাকেনা। গত সপ্তাহে লিগ ওয়ানের শিরোপা নিশ্চিতের পর কালই প্রথম মাঠে নেমেছিল পিএসজি। গোল হজমের পর প্রথমার্ধে তারা টার্গেটে আর কোন শট করতে পারেনি।
বিরতির পরপরই পিএসজি নিজেদের সেরা সুযোগটি পায়। এমবাপ্পের শটটি প্রথমে পোস্টে লেগে ফেরত আসে। এরপর ফিরতি বলে ডর্টমুন্ডের সাবেক উইং-ব্যাক আচরাফ হাকিমি আরো একবার পোস্টে বল লাগালে ম্যাচে ফেরা হয়নি পিএসজির। ৫৬ মিনিটে পিএসজির অবশ্যই সমতায় ফেরা উচিৎ ছিল। মারকুইনহোসের কার্লিং পাস ডর্টমুন্ডের বক্সের ভিতর গেলে ফাবিয়ান রুইজের ডাইভিং হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ডর্টমুন্ডের আরেক সাবেক খেলোয়াড় ওসমানে ডেম্বেলে ১০ মিনিট বাকি থাকতে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। পরের মিনিটে জুলিয়ান ব্র্যান্ডেটের কাছ থেকে দারুন এক পাস পেয়ে সানচো গোলের সুযোগ সৃষ্টি করলেও পিএসজির শক্তিশালী রক্ষনভাগের জন্য তা কাজে লাগাতে পারেননি।
এর আগে মঙ্গলবার প্রথম সেমিফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদ ২-২ গোলে ড্র করেছিল।