অর্থ ও বাণিজ্যবিশেষ খবর

মৌসুমী ফলে ভরপুর কুমিল্লার বাজার

 

কুমিল্লা (দক্ষিণ), ১৫ মে, ২০২৪ (বাসস) : পালাবদল এসেছে প্রকৃতিতে। বছর ঘুরে আবারও এসেছে জ্যৈষ্ঠ মাস। জ্যৈষ্ঠ মাসকে মধুমাসও বলা হয়ে থাকে। মধুমাসের এ সময়ে সারাদেশেই চোখে পড়ে গ্রীষ্মকালীন নানান ধরনের ফলের। প্রতি বছরের মতো এবারও গ্রীষ্মকালীন মৌসুমী ফলে ছেয়ে গেছে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন ফলবাজার। কুমিল্লায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করেছে মৌসুমী ফল। আড়ত থেকে শুরু করে খুচরা বাজার এমনকি অলিগলি থেকে মহাসড়ক সর্বত্রই আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, আনারসসহ বিভিন্ন দেশীয় রসালো ফলে ভরপুর। ক্রেতা আকর্ষণে হাঁকডাক দিচ্ছেন বিক্রেতারা। কুমিল্লার প্রতিটি বাজারে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতাদেরও রয়েছে উপচে পড়া ভিড়।
দেশি ফলের প্রাচুর্যের কারণে বিদেশি ফলের চাহিদা এখন কিছুটা কম। দেশি ফলের বাজার সম্পর্কে জানতে চাইলে ফল ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বাসসকে বলেন, এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিনই ট্রাক ভর্তি মৌসুমী ফল কুমিল্লাতে আসছে। এতে প্রতিদিন দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার ফল বেচাকেনা হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মৌসুমী ফলে ভরপুর হয়ে উঠেছে শহরের রাজগঞ্জ বাজার, বাদশা মিয়ার বাজার, টমছম ব্রীজ ও রাণীর বাজার ফলের আড়ত। এসব আড়ত ও দোকানে উঠেছে বিভিন্ন জাতের আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, পেয়ারা, পেঁপে, সফেদা, কামরাঙা, আনারস, জামরুল, ডালিম, কাঁচা তাল, লটকন, কলাসহ নানা রকম ফল। এর মধ্যে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ১২০ টাকা। জামরুল, জাম ও লটকন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, লিচু প্রতি শত ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে আকারভেদে প্রতিটি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায়, আনারস প্রতিটি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচা তাল প্রতিটি ১০ থেকে ১২ টাকা, পেয়ারা ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন এ বছর ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যেই থাকবে ফলের দাম। তিনি বলেন, এ মৌসুমে দেশি ফলের বিকল্প নেই। গ্রীষ্মের দেশি ফল যেমন সুস্বাদু, তেমনি রসেও ভরপুর। তাই এ মৌসুমে দেশি ফলের অনেক চাহিদা রয়েছে। এখন প্রায় সব মৌসুমী ফলই বাজারে আছে। শুরুতে দাম কিছুটা চড়া থাকলেও ক্রমেই তা কমছে। ফরমালিনের কোনো আশঙ্কা নেই। বাজারেও ফলের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। ক্রেতারা ন্যায্য দামেই ফল কিনতে পারবেন।
শহরের বাদশা মিয়া বাজারে মৌসুমী ফল কিনতে আসা মো. নজরুল বলেন, বাজারে দেশীয় সব ধরনের ফল পাওয়া যাচ্ছে। পরিবারের জন্য ফল কিনতে এসেছি। বাজার ঘুরে মনে হলে এ বছর সব ফলেরই দাম কিছুটা কম। তিনি বলেন, মৌসুমিী ফল খাওয়াটা খুব জরুরি। তাই ফল কিনে বাড়ি ফিরছি।
নগরীর অন্যতম বৃহৎ ফলের বাজার টমছমব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌসুমী ফল বিক্রিতে। তারা মূলদোকানের সামনের অংশে মৌসুমী ফল রেখে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। এ বাজারে বেশি বিক্রি হচ্ছে লিচু। এছাড়া হিমসাগর, লেংড়াসহ বিভিন্ন জাতের আমও শোভা পাচ্ছে ফল দোকান গুলোতে। তবে লিচু পুরোদমে পরিপক্ব হলেও আম মাত্র আসতে শুরু করেছে বাজারে। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ফল বাজারের বেশির ভাগ অংশ থাকবে মিষ্টি ও রসালো আমের দখলে।
কুমিল্লা রাজগঞ্জ বাজার কমিটির সহসভাপতি তোফাজ্জল হোসেন বাসসকে বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমের নানান ধরনের দেশীয় ফল এখন বাজারে এসেছে। এগুলো মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাই কম দামে যেন ভালো ফল কিনতে পারে সেজন্য আমাদের বাজার কমিটির সবর্দা খেয়াল রাখছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button