যবিপ্রবি জনসংযোগ উপপরিচালক হায়াতুজ্জামান মুকুল বরখাস্ত
মালিক উজ জামান, যশোর : যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার দপ্তরের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক মো. হায়াতুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্তকরা হয়েছে। চাকরি প্রার্থীর কাছে মুঠোফোনে অর্থ দাবির অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
যবিপ্রবি ভিসি প্রফেসর ড. মো: আনোয়ার হোসেনের অনুমতিক্রমে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীবের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অফিস আদেশে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক মো. হায়াতুজ্জামানের বিরুদ্ধে নিয়োগ সংক্রান্ত কাজে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে বিধায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাধারণ আচরণ, শৃঙ্খলা ও আপিল সংক্রান্ত বিধি মোতাবেক তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তকরা হলো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভিসি প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চাকরি পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার নিয়ম হলো পরীক্ষার্থীরা যদি লিখিত পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হয় তাহলে তাদেরকে ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষার সময় চাকরি প্রার্থীদের মুঠোফোন বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্ত হঠাৎ একজন চাকরি প্রার্থীকে মুঠোফোনে কথা বলতে দেখেন পরীক্ষা পরিদর্শক। পরিদর্শক ফোনটি নিয়ে নাম্বার চেক করে দেখেন ওই প্রার্থীর ফোনের অপর প্রান্তে রয়েছেন যবিপ্রবির জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক হায়াতুজ্জামান মুকুল। পরীক্ষা পরিদর্শকগণ প্রার্থীর মুঠোফোনের কল রেকর্ডটি উদ্ধার করেন। তাৎক্ষণিক ওই প্রার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হয়। মুঠোফোনের রেকডিংয়ে ও পরবর্তীতে ওই প্রার্থীর জিজ্ঞাসাবাদে এমন কিছু তথ্য উঠে আসে যাতে করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তকমিটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর রিজেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাজমুল হাসান, সদস্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. এ এস এম মুজাহিদুল হক, সদস্য সচিব পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আমিনুল হক। তদন্ত কমিটিকে অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। রোববার (২২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। যা সোমবার (২৩ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ মে ছিল যবিপ্রবির ডাটা অপারেটরের তিনটি পদের নিয়োগ পরীক্ষা। পরীক্ষা চলাকালে সমির কুন্ডু নামে এক পরীক্ষার্থী হলের মধ্যে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। এ সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকা শিক্ষক ড. মেহেদী হাসান সমির কুন্ডুর ফোন জব্দ করেন। একইসঙ্গে তাকে জেরা করা হলে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক হায়াতুজ্জামান মুকুলের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। তার সঙ্গে ১০ লাখ টাকা চুক্তি হয়েছে ডাটা অপারেটর পদে নিয়োগ করে দেবেন বলে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নজরে আনা হলে তিনি ফোন রেকর্ড শুনে তাৎক্ষণিক হায়াতুজ্জামান মুকুলকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক হায়াতুজ্জামান মুকুল জানান, তিনি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের গ্রুপিং রাজনীতির শিকার হয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই।
চৌগাছার স্বরুপদাহ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা