চট্টগ্রামশীর্ষ নিউজ
প্রাইভেট কারে গুলি, দুজন খুন: বিদেশি পিস্তলসহ ধরা পড়লো ‘মূলহোতা’

নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম নগরীতে প্রাইভেট কার ধাওয়া করে গুলি চালিয়ে দুজনকে হত্যার ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের ঘনিষ্ঠ অনুসারী এবং হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত মো. মেহেদি হাসান (৩৭) নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকার বাসিন্দা। তিনি এই মামলার ৩ নম্বর আসামি। শুক্রবার (২ মে) রাতে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নলেরচর ভূমিহীন বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বাকলিয়া থানা পুলিশ।
ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, “ঘটনার পর হাসান চট্টগ্রাম ছেড়ে আত্মগোপনে যান। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে হাতিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।”
শনিবার ভোরে তাকে নিয়ে নগরীর পশ্চিম শহীদ নগরে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও দুটি গুলি উদ্ধার করা হয়। ওসি জানান, “ঘটনাস্থলে ৭.৬৫ বোরের যে গুলির খোসা পাওয়া গিয়েছিল, সেটি উদ্ধার হওয়া পিস্তল থেকেই ছোড়া হয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া হবে।”
গত ২৯ মার্চ গভীর রাতে নগরীর রাজাখালী এলাকায় একটি প্রাইভেট কারকে ধাওয়া করে একাধিক মোটরসাইকেলে আসা সন্ত্রাসীরা গুলি ছোঁড়ে। গাড়িটি চকবাজার থানার চন্দনপুরায় পৌঁছালে তারা বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করে। এতে দুজন নিহত ও দুজন আহত হন।
নিহতরা হলেন—বখতেয়ার হোসেন মানিক ও মো. আব্দুল্লাহ (বয়স আনুমানিক ৩০-৩৫)। আহতরা—রবিন ও হৃদয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবিন জানিয়েছিলেন, কার চালাচ্ছিলেন মানিক। মালিক ছিলেন আব্দুল্লাহ। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত সরোয়ার হোসেন বাবলাও ছিলেন গাড়িতে। রবিনের দাবি, ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিয়েছেন সন্দেহে প্রতিপক্ষ সরোয়ারকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তবে সরোয়ার বেঁচে যান।
ছোট সাজ্জাদ ও সরোয়ার হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্যের বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধে অতীতেও খুনের ঘটনা ঘটেছে।
গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা এলাকা থেকে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পর থেকে দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা নেয়।
জোড়া খুনের ঘটনায় নিহত মানিকের মা ফিরোজা বেগম গত ১ এপ্রিল বাকলিয়া থানায় মামলা করেন। মামলায় ছোট সাজ্জাদ, তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না, মো. হাসান, মোবারক হোসেন ইমন, খোরশেদ, রায়হান ও বোরহানকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর পরিকল্পনায় হামলাটি চালানো হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যে বেলাল, মানিক ও সজীব নামে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। আদালতের আদেশে কারাগারে থাকা ছোট সাজ্জাদকেও গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।