গাছ থেকে আম পেড়ে শ্রমিকদের মাসে আয় ‘১৮ কোটি’ টাকা
এক মাস শুধু হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছ থেকে পেড়ে ১৫ হাজারে বেশি শ্রমিক মাসে আয় করবে ১৮ কোটি টাকার ওপর। হাঁড়িভাঙ্গা যেমন রংপুরের আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়তা করছে সেই সাথে শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে। শনিবার বিকেলে রংপুরে মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জের বেশকয়েকটি বাগান ঘুরে মালিক ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ ও রংপুর সদরের কিছু অংশ মিলে ৩ হাজারের ওপর আম বাগান রয়েছে। এসব বাগান কারও নিজের আবার কেউ লিজ নিয়ে আম চাষ করছেন। প্রতিটি বাগানের গাছ থেকে আম পাড়া এবং আম পাহারা দেয়ার জন্য গড়ে ৫ থেকে ৭ জন পর্যন্ত মাসিক চুক্তিতে শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। এসব শ্রমিকের মাসিক বেতন ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। সেই সাথে তিন বেলা খাবার দিতে হয় বাগান মালিককে। আম পাড়ার মৌসুম শুরু হলে এসব শ্রমিক গাছ থেকে আম পেড়ে ক্যারেট অথবা ঝুড়িতে ভর্তি করেন। এর পরে বাগান মালিকরা হাটে গিয়ে সেই আম বিক্রি করেন। প্রতিটি বাগানে গড়ে ৫ জন করে শ্রমিক হলে ৩ হাজার বাগানে ১৫ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করছেন। প্রতি মাসে গড়ে ১২ হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক ধরা হলে এসব শ্রমিক এক মাসে ১৮ কোটি টাকার ওপর আয় করবেন। এসময় ক্ষেতে-খামারে কাজ না থাকায় গাছের আম পেড়ে স্থানীয় কৃষক ও শ্রমিকরা বাড়তি আয় করছেন। তাদের ভাষ্য, বাড়িতে বসে না থেকে গাছের আম পেড়ে মাসে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা বাড়তি আয় করছি।
খোড়াগাছ পশ্চিমপাড়া এলাকার আম পাড়া শ্রমিক আবু সাইদ, মোসলেম উদ্দিনসহ কয়েকজন জানালেন, এই সময় ক্ষেতে খামারে কাজ থাকে না। বাড়িতে বসে থাকতে হয়। তাই আমের মৌসুমে এক-দেড় মাস আম বাগান পাহারা ও গাছ থেকে আম পেড়ে মাসিক ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা পাচ্ছি। এই টাকা সংসারের বাড়তি কাজে লাগছে।
১৫ হাজারের বেশি শ্রমিক এসময় গাছ থেকে আম পাড়ার কাজ করছেন। বৈলডোপ গ্রামের আম বাগানের মালিক নজরুল ইসলাম ও মানজারুল ইসলাম বলেন, তাদের নিজের ৪টি বাগান রয়েছে। এছাড়া তারা দুজনে আরও ৪টি বাগান লিজ নিয়েছেন। এবার আমের দাম একটু বেশি থাকায় আম পাড়ার শ্রমিকরাও মনোয়োগ দিয়ে কাজ করছেন। তারা বলেন, এই অঞ্চলে ৩ হাজারে বেশি আম বাগান রয়েছে। একেকটি বাগানে দেড় থেকে দুইশ গাছ রয়েছে। কোনো কোনো বাগানে আরও বেশি গাছ রয়েছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর রংপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ১ হাজার ৮’শ হেক্টরের বেশি জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হাজার মেট্রিক টনের ওপর। মৌসুমের শুরুতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং মৌসুমের শেষ দিকে প্রতি কেজি হাড়িভাঙ্গা আম ১৫০ টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি হয়।