ঈদুল আজহা টার্গেটে অস্থির যশোরের মশলা বাজার
মালিক উজ জামান, যশোর : হাতে গোনা মাত্র কটা দিন পর ঈদুল আজহা। তাকে সামনে রেখে যশোরের বাজারে বাড়তে শুরু করেছে মসলাসহ নিত্যপণ্যের দাম। চাহিদার কারণে মশলার বাজার চড়া হচ্ছে। বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচামরিচ, আলুর দাম। তবে, চালের বাজার স্থিতিশীল। কমেছে মুরগির দাম কিছুটা।
অন্যদিকে সয়াবিন তেলের দাম কমার কথা থাকলেও সব দোকানে তা কার্যকর হয়নি। গত সপ্তাহে জিরা ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪২০ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজি ধনিয়া ১২০ টাকা। দারচিনি ৩৪০ এবং লবঙ্গ এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে লবঙ্গ বিক্রি হয় ৮০০ টাকায়। এলাচ ১৮০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এলাচ বিক্রি হয় ১৬০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকায়। পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায়। রসুন মানভেদে ৬০, ৭০, ১০০ ও ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হয়। আদা গত সপ্তাহে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। বড় বাজারের মশলা বিক্রেতা বিপ্লব পাল বলেন, প্রতি বছর কোরবানি ঈদের আগে মশলার দাম বাড়ে। পেঁয়াজ রসুন বর্তমানে যে দামে বিক্রি হচ্ছে সামনে আরও বাড়তে পারে। ঈদের পরে আবার আগের দামেই মশলা বিক্রি হবে।
অন্যদিকে, প্রতি কেজি সয়াবিন তেল নতুন দাম অনুযায়ী বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও তা যশোরের বাজারের সব দোকানে কার্যকর হয়নি। এ সপ্তাহে প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ২১২ টাকায়। যা বর্তমানে সাত টাকা কমে ২০৫ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৯৮ টাকায়। বড় বাজারের মুদি দোকানি আনোয়ার মল্লিক বলেন, আমার মতো অনেকেই মাল গুদামজাত করেছে। তাই নতুন দাম নির্ধারণ করা হলেও সে দামে কেউ সয়াবিন বিক্রি করতে পারছে না। নতুন মাল আসলে সবাই নতুন রেটে বিক্রি করবে। ক্রেতা সোহেলী পারভীন বলেন, বাজার দরের উর্ধ্বগতি সবারই সয়ে গেছে। তাই সবাই এসব মেনে নিয়েই চলছে। এটা এক ধরনের অসহায়ত্ব। আরেক ক্রেতা আরমান পারভেজ বলেন, সবকিছুর এতো দাম যে বাজারে আসতে ইচ্ছা হয় না। তারপরও আসতে হয়। দ্রব্যমূল্যের এ উর্ধ্বগতির কারণে আসছে ঈদে নিম্নবিত্তরা বাজেট ফেল করবে। আবারও বেড়েছে কাঁচামরিচের ঝাঁঝ। গত সপ্তাহে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা প্রতি কেজি। দাম আরও বাড়বে বলে জানান বিক্রেতারা। বড় বাজারের সবজি বিক্রেতা পারভেজ শেখ বলেন, বর্ষা মৌসুমের কারণে কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে। সামনে কাঁচামরিচের দাম আরও বাড়বে।
গত সপ্তাহে আলু ২৪ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজি পটল, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে, কাঁচাকলা ৩০ টাকা। বেগুন ৬০ থেকে ৭০, কচুরমুখি ৪০, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, উচ্ছে ৭০ থেকে ৮০, লাউ ৪০ থেকে ৫০টাকা পিচ ও চাল কুমড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা পিচ বিক্রি হচ্ছে। মাংসের বাজারে খানিকটা স্বস্তি আসতে শুরু করেছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি। লেয়ার মুরগি ২৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ২৯০ থেকে ৩০০টাকা কেজি বিক্রি হয়। ১০০ টাকা কমে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৬৫০টাকা। খাসির মাংস ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি।