অভয়নগরে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে জমি দখল
মালিক উজ জামান, যশোর : যশোর অভয়নগর উপজেলার বাসুয়াড়ী গ্রামের এক বিধবা বিচার পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে অবশেষে যশোর বিজ্ঞ আদালতে ১৪৪ ধারা মামলা দায়ের করেছেন। এই ভূক্তভোগী বিধবা তাসলিমা ও তার সন্তানেরা জমি জালিয়াত মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আকরাম সর্দারের ফাঁদ থেকে পরিত্রাণ পেতে চায়। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার শুভরাঢ়া ইউনিয়নের বাসুয়াড়ি গ্রামে।
স্বামী দূরারোগ্য ব্যাধিতে মৃত্যুর পর তিন শিশু সন্তানকে বুকে আঁকড়ে রেখে চরম অভাবের কষাঘাতে লড়াই করে আসছিলেন অসহায় বিধবা তাসলিমা বেগম। বিধবা সন্তান লালন পালনে খরচ মেটাতে অবশেষে ধানী জমি বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন।এলাকার ধূরন্ধর আলোচিত মাদ্রাসার কম্পিউটার শিক্ষক আকরাম সর্দার প্রস্তাবিত জমি ন্যায্য মূল্যে ক্রয়ের প্রস্তাব দেয় অসহায় বিধবাকে। কথা বরখেলাপ করে দলিলের শর্ত গোপন রেখে অন্য ভালো ডাঙ্গা জমি লিখে নেয়। শুধু এতেই ক্ষ্যান্ত দেয়নি ভূমি দস্যু মাদ্রাসার শিক্ষক আকরাম সর্দার সে ঐ অসহায় ছিন্নমূল পরিবারের অতিরিক্ত ধানী ৮ শতক জমি দীর্ঘদিন অবৈধভাবে জবর দখল করছে। যশোর অভয়নগরের বাসুয়াড়ী হাল ক্ষতিয়ান ৭৫৭ দাগ নং-৩৫১৭ দাগের ২৫ শতক ধানী এবং হাল ক্ষতিয়ান ২০৭০ হাল দাগ ৩৫১৯ ধানী ২৪ শতক বিক্রয় চুক্তিপত্র হয়। শর্ত মতে রেজিষ্ট্রি ধার্য দিনে দলিল লেখকের সেরেস্তায় কুটকৌশলী আলোচিত শিক্ষক দলিল লেখা সম্পন্ন করেন। শর্ত সঠিক আছে বলে অসহায় বিধবাকে জানান। সরলমনা তাসলিমা বেগম তাকে অন্ধ বিশ্বাস করেন। দলিল রেজিষ্ট্রি হয় যথারিতী।
প্রতি বছরের ন্যায় বাকি জমির খাজনা দিতে গিয়ে জালিয়াতির গোমর ফাঁস হয়। শর্ত মতে, ৭৫৭ খতিয়ানের ৩৫১৭ দাগের ধানী ২৫ শতক ও ২০৭০ হাল ক্ষতিয়ানের হাল দাগ ৩৫১৯ দাগের ধানী ২৪ শতক মোট ৪৯ শতকের পরিবর্তে একই ক্ষতিয়ানের ২০৭০ ক্ষতিয়ানের ধানী জমির বদলে ১৯৪৭ দাগের ডাঙ্গা জমি ২৫ শতক লিখে নেয় যা শর্তে ছিলো না। এ ঘটনা জানার পর তাসলিমা বেগম মুর্ছা যান। প্রায় ছয় বছর যাবত আলোচিত ধুরন্ধর মাদ্রাসার শিক্ষক অসহায় পরিবারের একই মৌজার ৭৪১ ক্ষতিয়ানের ৩৫১৮ দাগের অতিরিক্ত ৮ শতক জমি জবর দখল করছে। ঐ ভূমি দস্যু নাম জারীর কথা বলে স্বামীর ক্রয়কৃত জমির দলিল নিয়ে ফেরত দিচ্ছেন না। আলোচিত ভূমি দস্যূ প্রতারনার যাতাকলে পিষ্ঠ বিধবা ও তার পিতৃহারা শিশু সন্তানেরা এলাকার সচেতন সুধী সমাজের কাছে ন্যায় বিচার চেয়ে বিনয়াবনত আবেদন জানান।গ্রামবাসী একাধিকবার শালিস বৈঠকে বসেন। ধুরন্ধর শিক্ষক হাজির হননি। জারী জুরি ফাঁস হলে জমি দাগ ও দখল ফয়সালা করার জন্য আকরাম সর্দারকে চাপ দেন। প্রথমে শর্ত মেনে নেয় সে। প্রায় চার বছর অতিবাহিত হলেও গ্রাম্য বৈঠকের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বীর দর্পে রয়েছে ঐ মহাপ্রতারক। অবশেষে গ্রামবাসী স্থানীয় প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ ও বিজ্ঞ আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।