শীর্ষ নিউজ

যশোরে ১৮৫০০০ ভিজিএফ কার্ডে বিনামূল্যে চাল প্রদান প্রক্রিয়া শুরু


মালিক উজ জামান, যশোর : যশোরে ঈদ উল আযহা উপলক্ষে অতি দরিদ্রদের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কার্যক্রমের আওতায় ভারনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) কর্মসূচির আওতায় ১,৮৫,২৫২ পরিবারকে দেয়া হবে প্রধানমন্ত্রী ঈদ উপহার হিসেবে ১০ কেজি করে চাল। যাতে মোট চাল দেয়া হবে ১৮৫২.৫২ মেট্রিকটন চাল। গত ঈদ উল আযহায় সুবিধাভোগী ছিলো ৩,১০,৭৯৮ জন। সুবিধাভোগী কমায় হতাশ জন প্রতিনিধিরা। চাল বিতরণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে বলে তাদের আশঙ্কা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় জানায়, জেলার আট উপজেলার ৯৩ ইউনিয়নে ও আট পৌরসভায় এবার সুবিধাভোগীর সংখ্যা কমেছে ১,২৫,৫৪৬ জন। যা গত ঈদ উল আযহায় বরাদ্দের প্রায় অর্ধেক। গত ঈদ উল আযহায় জেলায় উপকারভোগীর সংখ্যা ছিলো ৩,১০,৭৯৮জন। চলতি বছরে যা হয়েছে ১,৮৫,২৫২ জন। তবে পৌরসভায় বরাদ্দ কমেনি। ভিজিডি কার্ডধারী প্রত্যেককে দেয়া হবে ১০ কেজি করে চাল। ৯ জুলাইয়ের মধ্যে এই চাল সরকারি খাদ্য গুদাম হতে উত্তোলন করে বিনামূল্যে বিতরণ করতে ৩ জুলাই যশোর জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত পত্রে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পত্রে বলা হয় গত ঈদ উল ফিতরের তালিকা অনুসরণে এই চাল বিতরণ করতে হবে। জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর দারিদ্র হার প্রতিবেদন ভিত্তিতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ভিজিএফ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ফলে গতবারের তুলনায় উপকারভোগী কমেছে। মোট বরাদ্দ কমলেও কোনো উপজেলায় বরাদ্দ বেড়েছে, কোনো উপজেলায় বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
সত্র জানায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঈদুল আযহায় যশোর জেলায় ১,৮৫,২৫২ জন উপকারভোগীর জন্য বিনামূল্যের ১০ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এতে দেখা গেছে বিভিন্ন উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের অনুকুলে বরাদ্দের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। আবার কিছু কিছু উপজেলায় বরাদ্দ বেড়েছে। তবে গত ঈদ উল ফিতরেও এই পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া হয়। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্র আরো জানায়, পরিসংখ্যান ব্যুরোর দারিদ্রের হারের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ঈদ উল ফিতরের সমপরিমাণ ঈদ উল আযহাতে ভিজিএফ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ফলে গতবারের তুলনায় উপকারভোগীর সংখ্যা কমেছে। সূত্র জানায় নীতিমালা অনুসরণ করে ঈদুল আযহার আগেই বিনামূল্যে ১০ কেজি চাল উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। বরাদ্দ পর্যালোচনায় গত ঈদ উল আযহার চেয়ে ৪৪,৫৭২ জন উপকারভোগী কমেছে ঝিকরগাছা উপজেলার ১১ ইউনিয়নে। এ বছর ইউনিয়নে ১৫,১৯৩ জন উপকারভোগী বিনামূল্যে ১০ কেজি চাল পাবেন। যশোর সদর উপজেলার ১৫ ইউনিয়নে এবছর বরাদ্দ বেড়েছে ৮,৩৯১ জন উপকারভোগীর। এ উপজেলায় এ বছর উপকারভোগী ৩১,২৬৪ জন।
চৌগাছা উপজেলায় এবছর ১২,৪৩৯ জন উপকারভোগী বিনামূল্যে ১০ কেজি চাল পাবেন। গত বছর ১১ ইউনিয়নে ছিলো ৪৬,৭৩৫ জন। উপকারভোগী কমেছে ৩৪,২৯৬ জন। মণিরামপুর উপজেলায় এবার উপকারভোগী ২৯,৬৮৮ জন। গতবছর ছিলো ৬৩,৭৬২ জন। ১৭ ইউনিয়নে উপকারভোগী কমেছে ৩৪,০৭৪ জন। কেশবপুর উপজেলায় এ বছর উপকারভোগী ১৬,৯১৬ জন। গতবছর ছিলো ১৫,১৩০ জন। এ বছর উপজেলার ১১ ইউনিয়নে উপকারভোগী বেড়েছে ১৭৮৬ জন। শার্শা উপজেলার ১১ ইউনিয়নে এবছর উপকারভোগী ২৩,৫৫২ জন। গত বছর উপকারভোগীর সংখ্যা ছিলো ২০,১৭০ জন। উপকারভোগী বেড়েছে ৩,৩৮২ জন। বাঘারপাড়া উপজেলায় উপকারভোগীর সংখ্যা ১৬,৩২৯জন। গত বছর উপজেলার ৯ ইউনিয়নে ছিলো ১০,৫৭৭জন। এ বছর উপকারভোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৫,৭৫২ জন। অভয়নগর উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ৯,০৬৪ জন ১০ কেজি করে চাল বিনামূল্যে পাবে। গতবার ছিলো ৪০,৯৭৯ জন। এখানে উপকারভোগী কমেছে ৩১,৯১৫ জন।
যশোর, কেশবপুর, বেনাপোল, নওয়াপাড়া ও মণিরামপুর পৌরসভায় ৪৬২১ জন করে, ঝিকরগাছা ও চৌগাছা পৌরসভায় ৩,০ ৮১ জন করে এবং বাঘারপাড়া পৌরসভায় ১৫৪০ জন সুবিধাভোগী পাবেন ১০ কেজি করে চাল। চৌগাছা পাশাপোল ইউপি চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ জানান, গত কুরবানী ঈদে ইউনিয়নে ৪,২৮৯ জনকে চাল দেয়া হয়। এবার বরাদ্দ মাত্র ১১৪২ জন। ফলে বিতরণে সমস্যা হবে। এই ইউনিয়ন দরিদ্র বেশি। কমবেশি ৫০০০ দরিদ্র পরিবারের বসবাস। এরা সরকারের বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সহায়তায় পরিবার পরিচালনা করে। চৌগাছা উপজেলার হাকিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান জানান, গত ঈদ উল আযহায় আমার ইউনিয়নে ৪৫০৫ জনকে ভিজিএফ চাল দেয়া হয়। এবার মাত্র ১১৯৮ জনকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গতবারের প্রায় চারভাগের এক ভাগ। গত ঈদ উল ফিতরের মতো চাল বিতরণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরে ৪৫০০ জনকে দেয়ার পরও অনেকে বাদ ছিলেন। এত অল্প সংখ্যক বরাদ্দ বিতরণে চরম সংকটে পড়তে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button