যশোর বোর্ডে এসএসসিতে অদম্য ৫৫ প্রতিবন্ধীর অংশ গ্রহন
মালিক উজ জামান, যশোর : দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শ্রবণ প্রতিবন্ধী এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন অদম্য ৫৫ জন শিক্ষার্থী যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ২৪ অন্ধ পরীক্ষার্থীর পাশাপাশি আরও ৩১ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী যশোর শিক্ষাবোর্ড থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিবে।
অন্ধ এসব পরীক্ষার্থীর মুখ থেকে শুনে উত্তরপত্রে লিখবে স্ক্রাইবরা (শ্রুতি লেখক)। যে ২৪ জন অন্ধ পরীক্ষার্থী স্বাভাবিক পরীক্ষার্থীদের সাথে পরীক্ষা যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে তারা হচ্ছে, চুয়াডাঙ্গা কেন্দ্রে ফয়সাল আহম্মেদ, খুলনা কেন্দ্রে হোসনেয়ারা আক্তার ও ইমা আক্তার, কুষ্টিয়া কেন্দ্রে তাসমিম হক তৈয়েয়া, মহেশপুর কেন্দ্রে মোহাম্মদ রাফিদ হোসেন বিশ্বাস, রূপদিয়া কেন্দ্রে প্রান্ত সেন, খোকসা কেন্দ্রে রাকিব হাসান, আলমডাঙ্গা কেন্দ্রে শাহারিয়ার রিফাত, খোকসা কেন্দ্রে সাচ্চু রানা, হরিণাকুন্ডু কেন্দ্রে নাঈম উদ্দীন, খানাবাড়ি কেন্দ্রে সাজ্জাদ রহমান, নলতা কেন্দ্রে আহসান সাদিক, চালনা কেন্দ্রে শর্ণা সাহা, কোলা দিঘলিয়া কেন্দ্রে কাজী ইমাম হুসাইন ও কাজী ইমাম হাসান। তারা আপন দুই ভাই। ভেড়ামারা কেন্দ্রে আসিব হোসেন, নবারুন কেন্দ্রে শরিফুল ইসলাম, মাগুরা কেন্দ্রে মিঠু বিশ্বাস, লোহাগড়া কেন্দ্রে রায়হান উদ্দিন ও সোহাগ বিশ্বাস তূর্য, খুলনা কেন্দ্রে নওশিন ইসলাম বহ্নি, রাজগঞ্জ কেন্দ্রে ফারহান হাবিব খান, খুলনা কেন্দ্রে সৈয়দ ফারহান তাহমিদ ও নবারুন কেন্দ্রে শরিফুল ইসলাম।
এসব পরীক্ষার্থীর শ্রুতি লেখক থাকবে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তারা উত্তরপত্র লেখার জন্য নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত ১৫ মিনিট পাবে বলে শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর বাইরে আরও ৩১ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী এসএসসি জয়ের আশায় কেন্দ্রে যাবে। তাদেরও রয়েছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প। এ কারণে স্বাভাবিক পরীক্ষার্থীদের মতো তারাও বসবে পরীক্ষার বেঞ্চে। এই ৩১ জন পরীক্ষার্থী হচ্ছে, সাতক্ষীরা কেন্দ্রের নাঈম গাজী, খেদাপাড়া কেন্দ্রের নাহিদ হাসান, পাবলা কেন্দ্রের শেখ জুবায়ের আহম্মদ, খুলনা কেন্দ্রের নুসরাত সুলতানা আমিনা ও এসএম কৌশিক আহমেদ অরন্য, নাজিমগঞ্জ কেন্দ্রে অভিজিৎ তরফদার, খুলনা কেন্দ্রে ফারিয়া নুসরাত অরনি, মাগুরা কেন্দ্রে সুবহা তাবাচ্ছুম, ফুলহাতা কেন্দ্রে আদিত্য মন্ডল, বেতাগা কেন্দ্রে সুরাইয়া খাতুন ও সুমাইয়া খাতুন। তারা আপন দু’বোন। খুলনা কেন্দ্রে জেরিন আনজুম রাইসা ও মালিহা হাসান, মহেশপুর কেন্দ্রে ফারিয়া, চুলকাটি কেন্দ্রে ইতি রানী শীল, শিরোমণি কেন্দ্রে আমিনুল ইসলাম, সাতক্ষীরা কেন্দ্রে ইসতিয়াক হোসেন, ইতনা কেন্দ্রে মোহনা আলম মৌ, মেহেরপুর কেন্দ্রে সাউদ ওয়াদী, সাতক্ষীরা কেন্দ্রে সাফেয়েত শামীম, চড়াইকোল কেন্দ্রে সাইফ আল সাঈদ, নড়াইল কেন্দ্রের ইয়াসমিন নাহার কনা, সিদ্ধিপাশা কেন্দ্রের রুবাইয়া বিনতে রিয়া, চিতলমারি কেন্দ্রের সাকিবুল ইসলাম, বারোবাজার কেন্দ্রের সিয়াম হোসেন সাকিব, রারুলি কেন্দ্রের আব্দুল্লা তুরি ও জাহাঙ্গীর আলম, খুলনা কেন্দ্রের তৌফিক রেজা শোভন, আফিয়া হোসেন বুশরা ও সিথি দাশ এবং কুমারখালি কেন্দ্রে রুপা খাতুন।
বিভিন্ন কেন্দ্রের সচিব ও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, প্রতিবন্ধী এসব পরীক্ষার্থী তুলনামূলক মেধাবী। বিশেষ করে লেখাপড়া শেখার অদম্য আগ্রহ রয়েছে তাদের। এই কারণে তারা স্বাভাবিক পরীক্ষার্থীদের সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২০ মিনিট বেশি পাবে।
এ বিষয়ে যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ যতœবান হওয়ার জন্য কেন্দ্র সচিবদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।