প্রথমবারের মতো ‘এওয়াক ক্র্যানিওটমি’র সাহায্যে ব্রেইন টিউমারের সফল সার্জারি এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম
[চট্টগ্রাম, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২]- বন্দরনগরীর সর্ববৃহৎ হাসপাতাল এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম সম্প্রতি প্রথমবারের মতো আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ‘এওয়াক ক্র্যানিওটমি’র (Awake Craniotomy) সাহায্যে ব্রেইন টিউমারের সফল সার্জারি সম্পন্ন করেছে। হাসপাতালটির নিউরোসার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর ডা. মো. আনিসুল ইসলাম খান ও তার দল এ সার্জারি পরিচালনা করেন।
ব্রেইন টিউমার সার্জারিতে সাফল্য অর্জন উপলক্ষ্যে হসপিটাল অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. মো. আনিসুল ইসলাম খান পুরো চিকিৎসা প্রক্রিয়া বর্ণনা করেন। তার বর্ণনা অনুযায়ী, ৩৬ বছর বয়সী রোগী মো. নুরুল মাসুদ (কক্সবাজার জেলার উখিয়ার বাসিন্দা এবং পেশায় একজন শিক্ষক) বেশ কিছুদিন ধরে খিঁচুনি এবং বাম হাতের দুটো আঙ্গুলে অসাড়তায় ভুগছিলেন। মাঝে মাঝে খিঁচুনি এতো তীব্র হতো যে, জিহ্বাও কেটে যেত। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ব্রেইন-এর এমআরআই (MRI) করে ব্রেইন টিউমার সনাক্ত হয়। টিউমারটি ছিল ব্রেইন-এর ডান পাশের ‘মটর স্ট্রিপ’-এর উপর, যা মূলত বাম হাত এবং পা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এইসব স্থানের টিউমার সার্জারি করা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। একটু ভুল হলেই বিপরীত দিকের হাত-পা অবশ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে রোগীকে অজ্ঞান না করেই সার্জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রোগী এবং রোগীর অভিভাবকদের ব্যাপারটি অবগত করা হয় এবং তারা সার্জারির বিষয়ে সম্মতি দেন।
গত ২৫ আগস্ট তারিখে সার্জারি করা হয়। অপারেশন চলাকালীন রোগী স্বাভাবিক আলাপচারিতা চালিয়ে যান এবং বাম হাত-পা নাড়াতে সক্ষম ছিলেন। সার্জারি প্রক্রিয়া শেষে গত ৩০ আগস্ট রোগীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয় এবং ৩ সেপ্টেম্বর মাথার সেলাই কাটা হয়। রোগী বর্তমানে সুস্থ আছেন।
এমন সাফল্যে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর মহাব্যবস্থাপক ডা. ফজলে আকবর বলেন, “আমরা বরাবরই বাংলাদেশে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিশ্রুতি রক্ষার ধারাবাহিকতায় অর্জিত হলো আরও একটি মাইলফলক। এবার ব্রেইন টিউমার সার্জারির আধুনিক প্রযুক্তি এওয়াক ক্র্যানিওটমি ব্যবহারে সাফল্য অর্জন করলো আমাদের হাসপাতালের দক্ষ ও অভিজ্ঞ নিউরোসার্জারি দল। এটা আমাদের হাসপাতালের জন্য অত্যন্ত গর্বের এবং আমাদের রোগীদের আস্থা ও বিশ্বস্ততা অর্জনের পথে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া।”
এভারকেয়ার গ্রুপ সম্পর্কে-
এভারকেয়ার গ্রুপ বিশ্বাস করে যে স্বাস্থ্যসেবা একটি মৌলিক অধিকার। উদীয়মান বাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের চাহিদা পূরণে প্রাইভেট ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ প্রতিষ্ঠানটি। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে উদীয়মান বাজারে বসবাসরত সকল বয়সের মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জে সাড়া দিয়েছে এভারকেয়ার। সেই সুবাদে প্রতিষ্ঠানটি প্রচলিত স্বাস্থ্যসেবার ধারা পরিবর্তন ও রূপান্তরকরণের মাধ্যমে, ক্রস-কন্টিনেন্টস প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ে তাদের উন্নত ও মানসম্মত মেডিকেল সেবা সরবরাহ করছে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, কেনিয়া এবং নাইজেরিয়া সহ দক্ষিন এশিয়া ও আফ্রিকার উদীয়মান বাজারজুড়ে তাদের সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে এভারকেয়ার।
৩০টি হাসপাতাল, ১৬টি ক্লিনিক, ৮২টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং দুটি ব্রাউনফিল্ড অ্যাসেটস এই প্রতিষ্ঠানের পোর্টফোলিও’র অন্তর্ভুক্ত। দেশের উদীয়মান বাজারে একটি সিস্টেম্যাটিক স্বাস্থ্যসেবা তৈরি করতে প্রায় ১১ হাজার কর্মী নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। দেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এভারকেয়ার গ্রুপ গর্বিত। এভারকেয়ার হেলথ ফান্ড-এর মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান এভারকেয়ার, যা উদীয়মান বাজারে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমতুল্য রাইজ ফান্ডস পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা তহবিল, যা বৈশ্বিক বিকল্প সম্পদ ব্যবস্থাপক টিপিজি’র প্রভাব বিনিয়োগের একটি প্ল্যাটফর্ম। এভারকেয়ার স্বাস্থ্য তহবিল বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং বিশ্বের অন্যান্য প্রভাবিত বিনিয়োগকারীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিষ্ঠান।
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম সম্পর্কে-
এভারকেয়ার চট্টগ্রাম, বন্দরনগরীর সর্বপ্রথম ৪৭০ শয্যাবিশিষ্ট মাল্টি-ডিসিপ্লিনারী সুপার-স্পেশিয়ালিটি টারশিয়ারি কেয়ার হসপিটাল। এখানে আছে ২৪/৭ জরুরী বিভাগ, সর্বাধুনিক আইসিইউ সেবা এবং ২৭টি বিশেষ ও উপ-বিশেষ বিভাগ, যা গোটা অঞ্চলের ধারণক্ষমতার শূন্যস্থান পূরণে সক্ষম। প্রায় ৪ লক্ষ ৯২ হাজার বর্গফুট আয়তনের উপর নির্মিত এই হসপিটালের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ মেডিকেল সেবা ও পাঁচ শতাধিকেরও বেশি মেডিকেল প্রোফেশনাল চট্টগ্রামের সকল স্তরের রোগীদের সর্বোচ্চ মানের সেবা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।