খাজুরা স্ট্যান্ড ইজিবাইক চাঁদাবাজ চক্রে ডিবির অভিযানে আটক ২
মালিক উজ জামান, যশোর : ধারাবাহিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে যশোর উপশহর খাজুরা বাসস্ট্যান্ডে ইজিবাইক কেন্দ্রিক চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটে অভিযান চালিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় চাঁদার টাকাসহ চক্রের দুই জন হাতে নাতে আটক হয়েছে। এরা হচ্ছে বউ বাজার এলাকার আইয়ুব হোসেন ও রিপন হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এদিকে অভিযানের সময় পালিয়ে যাওয়া চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের পালের গোদা একই এলাকার জুয়েলকে আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র। গোয়েন্দা শাখা, খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকা ও ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালকদের একাধিক সূত্র থেকে তথ্য মেলে, খাজুরা স্ট্যান্ড থেকে মাগুরা রুটে আসা যাওয়া করা ইজিবাইকে চালকদের জিম্মি করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে চাঁদাবাজি। স্থানীয় ফাঁড়ি ইনচার্জের সাথে সখ্যতা করে ইজিবাইক আটকিয়ে দেয় তারা। অভিযোগ ওঠে উপশহর ফাঁড়ির দুই অফিসারকে প্রতিদিন এক হাজার টাকা দেয় ওই চাঁদা উঠানো চক্রটি। শেখহাটি ও ঘোপ করবস্থান পাড়ার একটি চিহ্নিত চক্র এর নেতৃত্বে রয়েছে। চাঁদাবাজদের অপতৎপরতায় অতিষ্ঠ চালকরা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়া জেলা গোয়েন্দা শাখাতেও অভিযোগ করেন অনেক ভুক্তভোগী।
একাধিক সূত্রের তথ্যে, জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমার সরকারের নেতৃত্বে একটি টিম মাঠে নামে। ওই টিম তথ্য পায়, বিগত কয়েক বছর ধরে যশোর উপশহর এলাকা ও যশোর মাগুরা সড়কে যাত্রীবহন করা ইজিবাইক চালকগণ জিম্মি জুয়েলের নেতৃত্বে চলা আইউব আলী চাঁদাবাজ চক্রের হাতে। খাজুরা বাস স্ট্যান্ড, উপশহর এলাকা কিংবা যশোর মাগুরা সড়কে ইজিবাইক ঢুকলেই প্রতিদিন ২০ টাকা দিতে হয়। উপশহর খাজুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাহাদুরপুর মনোহরপুর, ইছালী ও খাজুরা পর্যন্ত আসা যাওয়া করা বাইকগুলো থেকে এই ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এছাড়া আড়পাড়া মাগুরা ও সীমাখালী থেকে কোনো ইজিবাইক উপশহর খাজুরা স্ট্যান্ডে আসলে ৩০ থেকে ৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। ইজিবাইকে পরিবহনে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কঠোর হুঁশিয়ারি সত্বেও খাজুরা বাস স্ট্যান্ডের চক্রটি স্থানীয় ফাঁড়ি ইনচার্জকে ম্যানেজ করে এখানে চাঁদা আদায় করে। প্রতিদিন শতাধিক ইজিবাইক থেকে এরা চাঁদা আদায় করছে। রাতে স্থানীয় আল আমিন ও রুহুল আমিনের দোকানে বসে চক্রটি আদায় করা ওই টাকা ভাগাভাগি করে। এই চাঁদাবাজ চক্রের নেপথ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছে জুয়েল নামে এক যুবক। তার নেতৃত্বে কবরস্থান দাস পাড়ার আইউব আলী, ২০০ টাকা দিন হাজিরায় আদায়কারী কামাল হোসেনসহ ৬/৭ জনের একটি চক্র দিনভর এই চাঁদাবাজি করে। ওই সব তথ্যে অভিযান চালিয়ে ইজিবাইক থেকে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায়ের সময় ডিবি পুলিশের এসআই সোলাইমান আক্কাস ও এএসআই শফিউর রহমানসহ একদল পুলিশ আটক করেন আইউব আলী ও রিপন হোসনকে। তাদের কাছ থেকে আদায় করা চাঁদার ১৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিবি পুলিশের দাবি, আসামিদের এই সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন বিভিন্ন ইজিবাইক স্ট্যান্ড, সিএনজি স্ট্যান্ডে অবস্থান নিয়ে ড্রাইভারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। কয়েকজন ইজিবাইক চালক এ প্রতিবেদকের কাছে এসে অভিযোগ করেন ওই চক্রটি স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের সামনে ওই টাকা আদায় করে। প্রতি মাসে উপশহর ফাঁড়ির দুই অফিসারকে প্রতিদিন এক হাজার করে মাসে ৩০ হাজার টাকা দেয় বলে জাহির করে চাঁদা ওঠাচ্ছে চক্রটি। খাজুরা বাসস্ট্যান্ডে ডিবি পুলিশের অভিযান চলায় ও চক্রের দুই জন আটক হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালকেরা।