যশোর জেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী কাল
মালিক উজ জামান, যশোর : যশোর জেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৫২ জনের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইফুজ্জামান পিকুল ঘোড়া প্রতীক ও বিকল্পধারা মারুফ হাসান কাজল আনারস প্রতীক পেয়েছেন। ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে যশোর কালেক্টরেট সভাকক্ষে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান। এছাড়া সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৪ ও সাধারণ সদস্য পদে ৪০ প্রার্থী রয়েছেন। এসময় জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার আনিছুর রহমানসহ অন্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আগামীকাল ১৭ অক্টোবর প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদের ইভিএমে নির্বাচন হবে। ১৩১৯ ভোটার প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। সেরা ভোট পর্ব হবে ছয় নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডে ছয় প্রার্থী যশোর জেলা পরিষদের প্রার্থীরা চালাচ্ছেন দিনরাত প্রচারণা। অন্য ভোটের প্রার্থীদের মতো তারাও ঘুম-খাওয়া ছেড়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। এ নির্বাচনে একজন চেয়ারম্যান, তিনজন সংরক্ষিত নারী সদস্য ও আট উপজেলা থেকে আট জন সাধারণ সদস্য নির্বাচিত হবেন। যশোর সদর উপজেলা অর্থাৎ ছয় নম্বর ওয়ার্ড থেকে সাধারণ সদস্য পদে বিজয়ী হতে শ্রমিক লীগ নেতা জবেদ আলী, শেখ ইমামুল কবির, রাকিবুল আলম রাকিব, আব্দুল মতলেব বাবু, সোহেল রানা ও ওহেদুজ্জামান সেলিম মোট ছয়জন ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। প্রার্থীরা সবাই ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সাথে যুক্ত। কেউ কেউ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পদে আছেন। এর বাইরে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত। ছয় নম্বর ওয়ার্ড থেকে সাধারণ সদস্য পদে হাতি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন যশোর জেলা শ্রমিকলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জবেদ আলী। তিনি হাসপাতাল রোগী কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে যুক্ত। সাবেক এই ব্যাংক কর্মকর্তার তিন সন্তান রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। নির্বাচনে জয়ী হতে জবেদ আলী দিনরাত ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। মুঠোফোনে জবেদ আলী বলেন, ২১১ জন ভোটারের মধ্যে ২১০ জন জীবিত আছেন। এরমধ্যে ১৯৭ জনের বাড়ি গিয়েছেন তিনি। তারা কথা দিয়েছেন। বিজয়ী হবেন বলে তিনি আশাবাদী।
ভোটযুদ্ধে নেমেছেন রাকিবুল আলম রাকিব। আওয়ামী লীগের কোন পদ পদবিতে না থাকলেও দলের মিছিল মিটিংয়ে অংশ নেন তিনি। তার ভাই রাজিবুল আলম যশোর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। রাকিবুল আলম তালা প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন উল্লেখ করে রাকিব বলেন, মানুষ সৎ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের পছন্দ করেন। আমার পুঁজি সেটাই। ঘুড়ি প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে নেমেছেন যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ ইমামুল কবির। রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা-ে জড়িত। ছিলেন রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও নামেজ সরদার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি। জেলা পরিষদের সদস্য পদে তিনি গতবার নির্বাচন করেছিলেন। দুইজন সমান সংখ্যক ৪২ করে ভোট পেয়েছিলেন। ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হওয়ায় লটারিতে তিনি হেরে যান। এবার তিনি বিজয় লাভ করতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ভোটারদের সাড়া পাচ্ছেন উল্লেখ করে বলেন, যেভাবে সাড়া পাচ্ছি ইনশাল্লাহ্ বিজয়ী হবো।
বৈদ্যুতিক পাখা (সিলিং ফ্যান) নিয়ে নির্বাচনের মাঠে আছেন যশোর জেলা কৃষকলীগের সাবেক নেতা শেখ আব্দুল মতলেব। শহরের পুরাতন কসবা এলাকার বাসিন্দা এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এরআগে আব্দুর রাজ্জাক কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ছিলেন। এখন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা-ে জড়িত। তিনি বলেন, এখানে তো পৌর পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানরা ভোটার। তাদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। তাদের ভোট আমানত হিসেবে দেখবো। নির্বাচিত হলে তাদের মাধ্যমে জনগণের খেদমত করবো।
ভোটযুদ্ধে নেমেছেন যশোর সদরের তালবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সোহেল রানা। দলের বড় পদে না থাকলেও নওয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য তিনি। তিনি বলেন, মডেল জেলা পরিষদ গঠনে পুরো টিমের সদস্য হতে চাই। এজন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। ভোটাররা চাই যোগ্য লোক তাদের প্রতিনিধি হোক। তাই আমি বিজয়ে আশাবাদী। ৬নম্বর ওয়ার্ড থেকে উটপাখি প্রতীকে ভোট করছেন ওহেদুজ্জামান সেলিম নামে আরো একজন প্রার্থী। যশোরের উপশহরের বাসিন্দা সেলিমের যাচাই বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। পরে তিনি উচ্চ আদালতের মাধ্যমে প্রার্থীতা ফিরে পান। তিনি ভোটারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। এ নির্বাচনে তিনি জয়ী হবেন বলে আশাবাদী।