গভীর নিম্নচাপটি আজ মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে রূপ নিতে পারে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি আজ রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘গভীর নিম্নচাপটি আজ মাঝরাতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আগামীকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসতে পারে। আর ২৫ অক্টোবর ভোরের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি বরিশাল ও সন্দ্বীপের মাঝামাঝি দিয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশের পুরো উপকূলীয় এলাকায় এর প্রভাব পড়বে। সিত্রাং ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।’
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেনের স্বাক্ষরিত আজকের আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-পাঁচ) বলা হয়েছে, ‘পূর্ব-মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও সামান্য উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (অক্ষাংশ: ১৬.০° উত্তর, দ্রাঘিমাংশ: ৮৮.৫° পূর্ব) অবস্থান করছে। এটি আজ রবিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১৫ কি.মি. দক্ষিণদক্ষিণপশ্চিমে, মােংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩০ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত ও ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে প্রাথমিকভাবে দিক পরিবর্তন করে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে।’
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়াে হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
গভীর নিম্নচাপটির বর্ধিতাংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০-৫০ কি.মি. বেগে দমকা/ ঝড়াে বাতাস বয়ে যেতে পারে, সেইসাথে ভারি (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতিভারি (৮৯ মি.মি.) বর্ষণ হতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মােংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গভীর নিম্নচাপটির বর্ধিতাংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরােজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভােলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নােয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৩-০৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলােচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। জলােচ্ছ্বাসের উচ্চতা পরবর্তীতে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।